|
|
|
|
হতাশ গোষ্ঠীর সদস্যরা |
অর্থাভাবে সঙ্কটে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
গরিব মানুষকে স্বনির্ভর করার লক্ষ্যে চালু হয়েছিল স্বর্ণজয়ন্তী স্বরোজগার যোজনা (এসজিএসওয়াই)। স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে ঋণ দেওয়াই উদ্দেশ্য এই প্রকল্পের। কিন্তু অর্থাভাবে সেই প্রকল্পই এখন বিশ বাঁও জলে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় কয়েক হাজার স্বনির্ভর গোষ্ঠী। তার সঙ্গে লক্ষাধিক মানুষ যুক্ত। অর্থসাহায্য না আসায় হতাশ হয়ে পড়েছেন তাঁরা। অতিরিক্ত জেলাশাসক অরিন্দম দত্ত বলেন, “সরকারের কাছে অর্থ চাওয়া হয়েছে। অর্থ পেলেই নিয়ম অনুযায়ী স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে প্রাপ্য টাকা দিয়ে দেওয়া হবে।”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছরের এপ্রিল মাস থেকেই ধাপে ধাপে অর্থ চাওয়া হয়েছে। অন্য বছর অর্থ পেতে দেরি হয় না। কিন্তু এ বার প্রায় ২ মাস হল অর্থ মেলেনি। ইতিমধ্যেই এসজিএসওয়াই প্রকল্পের পরিবর্তে এনআরএলএম বা জাতীয় গ্রামীণ জীবিকা মিশন নিয়ে আসা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘আনন্দধারা’। প্রাথমিক ভাবে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঝাড়গ্রাম, বিনপুর-২, জামবনি, নয়াগ্রাম, চন্দ্রকোনা ১ ও খড়্গপুর ১এই ৬টি ব্লককে ওই প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। পরে অবশ্য সর্বত্রই এই প্রকল্প চালু হয়ে যাবে।
নতুন প্রকল্প আসার ফলে পুরনো এসজিএসওয়াই প্রকল্পের অর্থসাহায্য আর মিলবে কি না তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। প্রশাসন অবশ্য জানিয়েছে, ২০১১-১২ অর্থবর্ষে এসজিএসওয়াই প্রকল্পে যে টাকা চাওয়া হয়েছিল, তা পেতে কোনও অসুবিধা হবে না। আর নতুন যে প্রকল্প চালু হয়েছে, তার সঙ্গেও পুরনো স্বর্ণজয়ন্তী স্বরোজগার যোজনা প্রকল্পের বিশেষ কোনও ফারাক নেই। নামটাই বদল হয়েছে শুধু। টাকা আসবে আগের মতো।
এ দিকে, কেন্দ্রীয় সরকার চলতি আর্থিক বছরেই এনআরএলএম প্রকল্প শুরু করার কথা বললেও এখনও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে পারেনি রাজ্য। কেবল মাত্র ১৭ মে কলকাতার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে রাজ্যের ১৬ হাজার মহিলার জমায়েত করে প্রকল্পের উদ্বোধন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তার কার্যকরী নির্দেশিকা পর্যন্ত তৈরি হয়নি এখনও। এর বাইরে রয়েছে রাজ্যে সোসাইটি তৈরি করা, তার জন্য সিইও নিয়োগ, জেলায় জেলায় ও জেলার প্রতিটি ব্লকে ডিস্ট্রিক্ট প্রোগ্রাম ম্যানেজমেন্ট ইউনিট ও ব্লকে ব্লক প্রোগ্রাম ম্যানেজমেন্ট ইউনিট তৈরি ইত্যাদি। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই সব তৈরির পরেই কেন্দ্র ফের টাকা দেওয়া শুরু করবে।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় এসজিএসওয়াই প্রকল্পে প্রায় ৩৬ হাজার গোষ্ঠী রয়েছে। প্রতিটি গোষ্ঠীতে ১০-১২ জন করে সদস্য। যাদের মধ্যে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার গোষ্ঠীর দ্বিতীয় গ্রেডিংই হয়নি। দ্বিতীয় গ্রেডিং হলেই আবর্তনীয় তহবিল হিসাবে প্রতিটি দল ১০ হাজার টাকা পায়। তারপর পায় ‘ক্রেডিট লিঙ্ক’ অর্থাৎ ব্যবসা করার জন্য ঋণ। যে ঋণের প্রায় ৫০ শতাংশ ছাড়ও পাওয়া যায়। ১ এপ্রিল থেকে এখনও পর্যন্ত ৩৫৯ জনকে ‘ক্রেডিট লিঙ্কে’র আওতায় নিয়ে আসা গেলেও প্রায় ১৬০টি দলকে এখনও নিয়ে আসা যায়নি। যে সব উপযুক্ত গোষ্ঠীকে অবিলম্বে ক্রেডিট লিঙ্কের আওতায় নিয়ে আসা বা দ্বিতীয় গ্রেডিং করা প্রয়োজন, তার জন্য প্রায় ১৬ কোটি টাকা লাগবে বলে প্রশাসন জানিয়েছে। টাকা চেয়ে আবেদনও জানানো হয়েছে। টাকা পেলে তবেই স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীগুলি ফের উজ্জীবিত হয়ে উঠবে বলে আশা। |
|
|
|
|
|