ইতালি ফুটবলের ঐতিহ্য বলে, টুর্নামেন্ট যত এগোয় ইতালিকে তত অপ্রতিরোধ্য লাগে। এই থিওরি মানলে জার্মানদের সতর্ক থেকে শুরু করা উচিত, এমন একটা কথা গোয়ায় বসে খুব শুনছি। কিন্তু আমার মনে হয় না জোয়াকিম লো-র অভিধানে সতর্কতা বলে কোনও শব্দ আছে। সত্তর বছর না কত বছর বড় টুর্নামেন্টে জার্মানি হারাতে পারেনি ইতালিকে, এটা মনে হয় না এই জার্মান টিমের উপর কোনও প্রভাব ফেলবে বলে। আমি প্রথম থেকেই বলছি, এ বারে ফাইনাল খেলা উচিত স্পেন ও জার্মানির। এই দুটোই এ বারের টুর্নামেন্টের সেরা টিম। আমার মন যতই বলুক স্পেন জিতবে, মস্তিষ্ক বলে যাচ্ছে কাপটা শেষমেশ জার্মানদের হাতেই দেখব।
লো-র সুবিধে হল, রিজার্ভ বেঞ্চেও এক ঝাঁক ম্যাচউইনার। সে দিনই পড়লাম ক্লোসে বলেছে, ওদের রিজার্ভ বেঞ্চ থেকে যে কেউ প্রথম এগারোয় এসে খেলে দিতে পারে। আগের ম্যাচেই তো মুলার, পোডলস্কি, গোমেজদের মতো তারকাকে বসিয়ে শুর্লে, রুসদের মতো অনামী ফুটবলারদের নামিয়ে দিলেন লো। তা-ও কিনা কোয়োর্টার ফাইনালের মতো ম্যাচে! শেষমেষ বাজিটাও তো জিতে নিলেন। সেমিফাইনালেও ইতালির বিরুদ্ধে জার্মানির প্রথম এগারোয় চমক আশা করছি। গোমেজ শুরুতে খেলবে না ক্লোসে, তা নিয়ে আগ্রহ থাকল। আমি হলে কিন্তু ক্লোসেকেই নামাতাম। গ্রিসের বিরুদ্ধে দুর্দান্ত ছন্দে ছিল ক্লোসে।
ক্লোসের সঙ্গে থাকবে মেসুট ওজিলের মতো অসম্ভব সৃষ্টিশীল একজন মিডফিল্ডার। মাঝমাঠের জাদুকর বলতে যা বোঝায়, ওজিল ঠিক তাই। যে কোনও সময় খেলা ঘুরিয়ে দিতে পারে। আর থাকছে জার্মান গোলকিপার ম্যানুয়ের ন্যুয়ের। যাকে এ বারের ইউরোয় বুফোঁ বা কাসিয়াসের মতোই অপ্রতিরোধ্য দেখাচ্ছে। মোট কথা, জার্মানি হল এ বারের টুর্নামেন্টের সবচেয়ে ধারাবাহিক দল। কোনও একজন বা দু’জনের উপর নির্ভরশীল নয় ওদের খেলা। এ বারের জার্মানি কিন্তু স্পেনের মতোই ছন্দবদ্ধ।
তার মানে এই নয় যে আমি ইতালিকে একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছি। ওদের ফুটবল এ বার অনেক পরিচ্ছন্ন। ম্যাড়ম্যাড়ে রক্ষণাত্মক নয়। জার্মানির যদি ওজিল থাকে, ইতালির আছে পির্লো। সেটপিস থেকে যে কোনও মুহূর্তে গোল করতে পারে। খেলা তৈরিতে তো বিশ্বসেরা। আর বালোতেলি খেয়ালি স্ট্রাইকার হলেও যখন-তখন অবিশ্বাস্য গোল করতে পারে। তার উপর আজুরিদের সম্পদ হল গোলকিপার বুফো।ঁ ম্যাচ টাইব্রেকারে গড়ালে কিন্তু ইতালি বুফোঁর জন্যই এগিয়ে থাকবে। ইতালি বনাম জার্মানি সেমিফাইনালে আমার ভবিষ্যদ্বাণী? জার্মানি ২, ইতালি ০। |