ফুটবল বিশ্ব এখনও তাঁর ‘পানেনকা’র ঘোরে। তিনি নিজে বলছেন, “ওটা এমন কিছু নয়। ওই মুহূর্তে হয়ে গিয়েছিল।”
দাবি উঠেছে-মেসি, রোনাল্ডো নয়, ফিফার বর্ষসেরা সম্মানটা তাঁর হাতেই মানায়। তিনি নিজে বলছেন, “মেসি আর রোনাল্ডোর পাশে আমার নাম বিবেচনাতেই আসে না।”
ফুটবল পায়ে তিনি প্রতিপক্ষের যতবড় ত্রাস, মাঠের বাইরে ঠিক ততটাই বিনয়ী।
আর এই বিনয়ী মানুষটাই জার্মান কোচ জোয়াকিম লো-র কপালে ভাঁজের সংখ্যা বাড়িয়ে দিয়েছেন একটা মন্তব্যে। বলেছেন, “জার্মানরা কিন্তু আমাদের ভয় পায়।” বড় টুর্নামেন্টে ফুটবল ইতিহাস যে তাঁদের পাশে, সেমিফাইনাল যুদ্ধের চব্বিশ ঘণ্টা আগে জার্মানদের সেটা মনে করাতেও ভুল হচ্ছে না আন্দ্রে পির্লোর।
তবে চাপ তৈরির খেলায় নেমেও লো-র দলকে প্রাপ্য সম্মান দিতে ভুলছেন না প্রান্দেলির দলের ভরকেন্দ্র। “এই ম্যাচে আমাদের খেলার ধরন ইংল্যান্ড ম্যাচের মতোই থাকবে। কারণ আমরা এ ভাবেই ফুটবল খেলি। জার্মানি অবশ্য ইংল্যান্ড নয়। জার্মানরা আমাদের রক্ষণকে বারবার বিপদে ফেলার ক্ষমতা রাখে। ইংল্যান্ড যেটা পারেনি।”
ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে কোয়ার্টার ফাইনালটা প্রায় একা নিয়ন্ত্রণ করেছিলেন ইতালির প্লে মেকার। ফলে সাম্প্রতিক স্মৃতি তো টাটকাই। কিন্তু ২০০৬ বিশ্বকাপ সেমিফাইনালের স্মৃতিও যে অমলিন জার্মানদের মনে। সেই ম্যাচটাতেও একটা বিরাট ভূমিকা নিয়েছিলেন পির্লো। তাই পির্লোকে থামানো লো-র প্রথম লক্ষ্য। জুভেন্তাস তারকা নিজেও সেটা ভাল ভাবে বুঝছেন। তবে তা নিয়ে তাঁর মাথাব্যথা নেই। উল্টে মেসুট ওজিল সম্পর্কে সতর্ক করে বলেছেন, “জার্মান টিমে দারুণ দারুণ সব প্লেয়ার আছে। কিন্তু ওজিলই ওদের আসল লোক। আমার ধারণা, আমি মাঠে যে জায়গাটা নিয়ে খেলি, সেখানে মেসুট ওজিল আমাদের বড় বিপদ হতে পারে। যদিও ও সরাসরি আমাকে মার্কিং করবে বলে মনে হয় না।”
ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে পেনাল্টি শু্যট আউটে পির্লোর পানেনকা কিকটা ইতিমধ্যেই ঢুকে পড়েছে ফুটবল রূপকথায়। ওই একটা গোল প্রান্দেলির গোটা দলকে বাড়তি তাতিয়ে তুলেছে রাতারাতি। অথচ পির্লো নিজে বলছেন, পেনাল্টিটার মধ্যে বাড়তি কোনও জাদু নেই। “ওটা হয়ে গিয়েছিল। পেনাল্টিটা আমি আলাদা করে প্র্যাক্টিসও করিনি। আসলে ওই সব মুহূর্তে মিস করার কথা কখনও ভাবিই না। জো হার্ট মাটির দিকে লাফিয়েছে দেখে বলটা ও ভাবে চিপ করে মারার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি।” মাঠে তাঁর এই শান্ত, আত্মবিশ্বাসী উপস্থিতিটাই জার্মানদের ঘুম কেড়ে ইতালিকে স্বপ্ন দেখাচ্ছে। কোচ প্রান্দেলি বলেই দিয়েছেন, “মেসি বা রোনাল্ডো নয়, এ বছর ফিফার বর্ষসেরা সম্মান যদি কারও প্রাপ্য হয়, সেটা পির্লো।” |