ভস্মীভূত হয়ে গেল গোঘাটের পশ্চিমপাড়া সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির একটি অফিস ঘর। বুধবার ভোরের ওই অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে গিয়েছে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি ও আসবাব। ‘পরিকল্পিত ভাবে’ আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলে বুধবার সকালে বচসায় জড়ায় তৃণমূল-সিপিএম কর্মী-সমর্থকেরা। ক্ষয়ক্ষতি দেখতে ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রহৃত হন সমবায়ের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য তথা সিপিএমের গোঘাট-৩ লোকাল কমিটির সম্পাদক মদন মণ্ডল। অভিযোগ, তৃণমূল নেতা শেখ ফরিদ এবং তাঁর অনুগামীরা মদনবাবুকে রাস্তায় ফেলে ইট দিয়ে মারতে থাকে। তাঁকে কামারপুকুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়েছে। চিকিৎসকেরা জানান, মদনবাবুর মাথা ফেটেছে। শরীরে একাধিক ক্ষত।
তৃণমূল নেতা শেখ ফরিদ অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর কথায়, “গ্রামের ক্ষুব্ধ মানুষ ওই সিপিএম নেতাকে যখন মারছিল, আমিই তাঁকে আগলে সরিয়ে নিয়ে যাই।” অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কোনও পক্ষই পুলিশে অভিযোগ জানায়নি। সিপিএম নেতাকে প্রহারের ঘটনাতেও অভিযোগ হয়নি। আহত সিপিএম নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
২০০৭-এ তৈরি হয়েছিল সমবায়টি। কয়েক হাজার বাসিন্দা ওই সমবায়ের সদস্য। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ঋণদান, ঋণ আদায়, সার বিক্রি সমস্ত ক্ষেত্রেই গ্রামের মানুষের কাছে অপরিহার্য্য হয়ে উঠেছিল সমবায়টি। সদস্য সংখ্যাও দ্রুত বাড়ছে। মাস খানেক আগে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব সমবায়ে দুর্নীতির অভিযোগ তোলে। যদিও দুর্নীতির প্রমাণ মেলেনি। বুধবার ভোরে একতলার একটি অফিস ঘর এবং পাশের গুদামে আগুন জ্বলতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। দমকলের দু’টি ইঞ্জিন গিয়ে আগুন আয়ত্তে আনে। তত ক্ষণে অবশ্য পুড়ে গিয়েছে নথিপত্র এবং বিভিন্ন আসবাব।
শেখ ফরিদের অভিযোগ, “আর্থিক দুর্নীতির হিসেব চাওয়া হয়েছিল সমিতির কাছে। সিপিএমের পরিচালন সমিতি তা ঢাকতে পেট্রোল-ভরা বোতল ছুঁড়ে সমস্ত নথিপত্র পুড়িয়ে দিয়েছে।”
অন্য দিকে, সমবায়ের পরিচালন সমিতির সম্পাদক অনাথবন্ধু ঘোষ বলেন, “সিপিএম পরিচালিত বোর্ড ক্রমশ জনপ্রিয়তা অর্জন করছিল বলে দুর্নীতির মিথ্যা অভিযোগ তোলা হয়। তাতেও কিছু না হওয়ায় ষড়যন্ত্র করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে।” এ দিকে, কিছু দিনের মধ্যে আমন চাষ শুরু হবে। তার আগে এই ঘটনায় সমস্যায় পড়েছেন চাষিরা। যদিও অনাথবন্ধুবাবু বলেন, “স্থানীয় মানুষ সহযোগিতা করলে পরিষেবায় ত্রুটি রাখব না।” |