ট্রেনযাত্রীদের তৎপরতায় পাচারকারীর হাত থেকে রক্ষা পেল দুই কিশোরী। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে ভদ্রেশ্বরে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দুই কিশোরীর বাড়ি বহরমপুরের সাহাদাদপুর বাউতিপাড়ায়। পুলিশি জেরায় তারা জানায় বাড়িতে বাবা মা বকাবকি করায় তারা দু’জনে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। তারা ঠিক করে, যে কোনও জায়গায় কাজ করে তারা জীবন কাটাবে। স্থানীয় বাসিন্দাদের নজর এড়াতে তারা কর্ণসুবর্ণ স্টেশন থেকে ট্রেনে চাপে কাটোয়া যাবে বলে। সেই সময় ট্রেনে যাত্রী কম ছিল। সালার থেকে দুই যুবক ট্রেনে উঠে দুই কিশোরীর পাশে গিয়ে বসে। ওই স্টেশন থেকেই জনা পনেরো ঠিকাকর্মী চন্দননগর ও ভদ্রেশ্বর যাবার উদ্দেশ্যে ওই একই কামরায় ওঠে।
বেশ কিছুক্ষন কেটে যাবার পরে ওই যুবকরা দুই কিশোরীর সঙ্গে ভাব জমায়। যুবকেরা তাদের কাছ থেকে সমস্ত ঘটনাবলি জেনে নেয়। দুই যুবক তাদের পরামর্শ দেয় যে, কলকাতায় নিয়ে গিয়ে কাজ পাইয়ে দেবে। প্রথম দিকে দুই কিশোরী তাদের দেওয়া প্রস্তাবে রাজি না হয়ে কাটোয়া স্টেশন আসতে নেমে পড়তে গেলে ওই দুই যুবক তাদের নামতে দেয় না। ইতিমধ্যে কাটোয়া স্টেশনও ছেড়ে যায় ট্রেন। শেষ পর্যন্ত নিরুপায় হয়ে ওই দুই কিশোরী ওই যুবকদের সঙ্গে কলকাতার উদ্দেশ্যে এগোতে থাকে। কিন্তু ওই যুবকরা কিশোরীদের তখন কুপ্রস্তাব দিতে থাকায় তারা ট্রেনের মধ্যে কাঁদতে থাকে। ততক্ষনে ট্রেন হুগলি জেলায় ঢুকে পড়েছে। দুই কিশোরীকে কাঁদতে দেখে ওই ঠিকা কর্মিদের সন্দেহ হয়। তারা কিশোরীদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে দু’পক্ষের মধ্যে তর্কাতর্কি বেধে যায়। ঠিকা কর্মিরা দলে ভারী থাকায় অবস্থা বেগতিক বুঝে ব্যান্ডেলের কাছাকাছি ট্রেন আসতেই ওই দুই যুবক ট্রেন থেকে নেমে পালায়। তারা আর ট্রেনে ওঠেনি। তখন ওই দুই কিশোরী সমস্ত ঘটনা ওই ঠিকাকর্মিদের জানায়। অসহায় কিশোরীদের বিপদের হাত থেকে বাঁচাতে তারা তাদের ঠিকাদার চন্দনগরের বাসিন্দা পার্থ চক্রবতির্র্র বাড়িতে নিয়ে আসে। সেখানে দু’জনকে দুপুরের খাবার খাওয়ানো হয়। এরপর কোথায় তাদের বাড়ি, ঠিকানা, বাবার নাম সমস্ত কিছু জেনে নেওয়া হয়। রাতে তাদের ভদ্রেশ্বর থানায় নিয়ে গিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পুলিশ তাদের বাড়িতে খবর দেয়। |