তৃণমূল নেতার খুনে অভিযুক্ত এ বার মন্ত্রী
বালির তৃণমূল নেতা তথা পরিবেশকর্মী তপন দত্তকে খুনের ঘটনায় রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রী অরূপ রায়ের নামে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে আদালতে গেলেন নিহতের স্ত্রী। এ বিষয়ে দু’সপ্তাহের মধ্যে রাজ্য সরকারকে হলফনামা দিয়ে তাদের বক্তব্য জানাতে নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। এই ঘটনায় সিআইডি-র চার্জশিটে অরূপবাবু-সহ জেলা তৃণমূলের বেশ কয়েক জন প্রথম সারির নেতার নাম ছিল। অতিরিক্ত চার্জশিটে মন্ত্রী-সহ অধিকাংশ নেতারই নাম বাদ চলে যায়। তা দেখার পরেই সিবিআই-তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে মামলা করেন তপনবাবুর স্ত্রী প্রতিমা দত্ত। বুধবার সরকার পক্ষের আপত্তি সত্ত্বেও মামলাটি বিচারের জন্য গ্রহণ করেছে হাইকোর্ট।
প্রতিমাদেবীর আবেদনে বলা হয়েছে, ২০১১ সালের ৬ মে রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ তপনবাবু খুন হন। ১২ মে জেলা পুলিশের হাত থেকে সিআইডি ওই তদন্তের দায়িত্ব নেয়। তদন্তকারী সিআইডি অফিসার সন্দীপ গঙ্গোপাধ্যায় প্রতিমাদেবীর সঙ্গে কথাও বলেন। এর পরে ৩০ অগস্ট সিআইডি একটি চার্জশিট পেশ করে। তাতে কৃষি বিপণন মন্ত্রী তথা হাওড়া জেলার তৃণমূল সভাপতি অরূপ রায়, ষষ্ঠী গায়েন, অসিত গায়েন, কল্যাণ ঘোষ, গোবিন্দ হাজরা, অমিত পালচৌধুরী, অজয় পালচৌধুরী, মলয় দত্ত-সহ আরও কয়েক জনের নাম ছিল। এর পরে ২৬ সেপ্টেম্বর হাওড়া আদালতে সিআইডি অতিরিক্ত চার্জশিট পেশ করে। কিন্তু তাতে অরূপ রায়-সহ মোট আট জনের নাম বাদ যায়। কী করে এটা সম্ভব, তা বোঝা যাচ্ছে না বলেই দাবি প্রতিমাদেবীর। তিনি বলেন, “অরূপ রায় প্রথম থেকেই আমার স্বামীর আন্দোলনের কথা জানতেন। কিন্তু যাদের বিরুদ্ধে জলা ভরাটের অভিযোগ ছিল, পরে উনি তাঁদেরই আইনজীবী হয়ে যান। তাই এই ঘটনায় অরূপ রায়ও ষড়যন্ত্রকারী বলে আমি মনে করি।”
প্রতিমাদেবী তাঁর আবেদনে জানান, মার্চ থেকেই তাঁর স্বামী বুঝতে পারছিলেন, তাঁর বিরুদ্ধে দলেরই কিছু নেতা-কর্মী ষড়যন্ত্র করছেন। তিনি পরিবেশকর্মী হিসেবে জলাজমি বোজানোর বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগঠিত করছিলেন বলেই তাঁকে সরানোর ষড়যন্ত্র করা হচ্ছিল। প্রতিমাদেবী জানিয়েছেন, তাঁর স্বামী তাঁকে বলেন, একটা শক্তিশালী ‘সিন্ডিকেট’ জলাজমি বুজিয়ে প্রোমোটারদের সহায়তা করছে।
বুধবার শুনানির সময়ে আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য বলেন, ৩০ অগস্ট সিআইডি-র দাখিল করা চার্জশিটে মন্ত্রী অরূপ রায়-সহ বেশ কয়েক জন তৃণমূল নেতার নাম ছিল। পরে ২৬ সেপ্টেম্বর সিআইডি জানায়, অরূপ রায়-সহ কয়েক জন সম্পর্কে তদন্তে কিছু মেলেনি। তাই অতিরিক্ত চার্জশিটে তাঁদের নাম বাদ দেওয়া হয়। বিকাশবাবু আদালতে জানান, সিআইডি যে নিরপেক্ষ ভাবে তদন্ত করতে পারছে না, অতিরিক্ত চার্জশিটই তার প্রমাণ। আবেদনকারী অভিযুক্তদের নাম বলার পরেও সিআইডি তদন্তে সেই বিষয়কে গুরুত্ব দেয়নি। তাই সিআইডি তদন্ত করলে সুবিচার মিলবে না বলেই মনে করছেন তপনবাবুর স্ত্রী।
রাজ্য সরকারের পক্ষে বলা হয়েছে, চার্জশিট দাখিল হওয়ার পরে তদন্তের দায়িত্ব অন্য সংস্থাকে দেওয়ার দাবিতে মামলা করা যায় না। বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত অবশ্য সরকারের এই যুক্তির সঙ্গে একমত নন। রাজ্য সরকারকে হলফনামা দিয়ে তাদের বক্তব্য জানাতে বলেছেন তিনি। ১৮ অগস্ট বিচারপতি এই মামলার চূড়ান্ত রায় দেবেন।
কৃষি বিপণন মন্ত্রী তথা হাওড়া জেলা তৃণমূল সভাপতি অরূপ রায় এ দিন বলেন, “তপন দত্ত খুন হওয়ার পরে জেলা তৃণমূল সভাপতি হিসেবে আমিই আমার প্যাডে ওই ঘটনার সিআইডি-তদন্ত চেয়ে প্রশাসনকে চিঠি দিই। তপন দত্ত দলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। আমি এখনও চাই দোষীরা শাস্তি পাক এবং আইন আইনের পথেই চলুক।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.