সিঙ্গুরের ‘অনিচ্ছুক’ কৃষকদের মাসিক সাহায্য দ্বিগুণ করে দিল রাজ্য সরকার।
বুধবার মহাকরণে এই ঘোষণা করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। তাই ভাতার পরিমাণ এক হাজার থেকে বাড়িয়ে দু’হাজার টাকা করা হল। ১ জুলাই থেকে বর্ধিত হারে কৃষক এবং খেতমজুরেরা ওই টাকা পাবেন। তত দিন পাবেন, যত দিন না জমি নিয়ে ফয়সালা হয়।” মহাকরণ সূত্রের খবর, সিঙ্গুরের বিধায়ক তথা কৃষিমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছিলেন, সরকার ‘অনিচ্ছুক’ কৃষকদের মাসিক ভাতা বাড়ানোর কথা বিবেচনা করুক।
এ দিকে, মহাকরণে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা নিয়ে বিধানসভায় বিতর্ক বাধে। অধিবেশন চলাকালীন কোনও সরকারি ঘোষণা বিধানসভায় হওয়াই ‘প্রথা’। ঘোষণার খবর বিধানসভায় পৌঁছতেই সরব হন সূর্যবাবু। বাজেট-বিতর্কে অংশ নিয়ে স্পিকারের ‘রুলিং’ দাবি করে তিনি বলেন, “বিধানসভা চলাকালীন বাইরে এ ভাবে ঘোষণা করা যায় না। এতে বিধানসভার অধিকার ভঙ্গ হয়েছে।” শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে তিনি বলেন, “সততার সঙ্গে আপনি বলুন, এই ঘোষণার কথা জানতেন কি না। যদিও আমার ধারণা এটা সরকারের যৌথ সিদ্ধান্ত। মন্ত্রীর বাজেট চলার সময় তাঁর বদলে বাইরে কারও বলাটা ঠিক হল না।”
পার্থবাবু বলেন, “আমিই ফাইলটা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়েছিলাম। মুখ্যমন্ত্রী তা ঘোষণা করে থাকলে ভাল। তবে এতে বিধানসভাকে অশ্রদ্ধা করা হয়েছে বলে মনে করি না।” স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিষয়টি আমি জানি না। পরে খোঁজ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেব।” স্পিকার ‘রুলিং’ না-দেওয়ায় বিরোধীরা ওয়াকআউট করেন। তখন অবশ্য শিল্পমন্ত্রীর জবাবি বক্তৃতা শেষ।
বিধানসভার অধিবেশন শেষে সূর্যবাবু বলেন, “বিধানসভার অধিকার কী ভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে, বারবার বলছি। আবার তা প্রমাণিত হল। বিধানসভায় সিঙ্গুর নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। গোটা রাজ্যের মানুষ সিঙ্গুর নিয়ে রাজ্য সরকারের অবস্থান জানতে চান। তখন মুখ্যমন্ত্রী একটা ঘোষণা করলেন। খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়তো নয়। তবু বিধানসভায় সেটা হওয়া উচিত। মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভার অধিকার ভঙ্গ করেছেন। কিন্তু স্পিকার রুলিং দিতে অস্বীকার করলেন।” শিল্প ও পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থবাবুর ব্যাখ্যা, “ভাতা এক হাজার থেকে দু’হাজার করা হয়েছে। এটা নতুন ঘোষণা নয়। এতে অসুবিধা কোথায়? গুরুত্বহীন বিষয়ে (‘নন-ইস্যু’) ওঁরা ওয়াকআউট করলেন!” |