ভাতা বাড়ালেন মমতা
সিঙ্গুরে জমি ফেরানো শুধু সময়ের
অপেক্ষা, বিধানসভায় মন্তব্য পার্থর
দালতের রায় যা-ই হোক, সিঙ্গুরে ‘অনিচ্ছুক’ চাষিদের জমি ফেরানো শুধু সময়ের অপেক্ষা বলে বিধানসভায় দাবি করলেন রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী। যদিও বিরোধী দলনেতার বক্তব্য, বর্তমান সিঙ্গুর আইনে জমি ফেরানো কঠিন। তাঁর প্রস্তাব, সরকার ওই আইন সংশোধন করুক। তাঁরা সমর্থন করবেন। বিরোধীদের এই প্রস্তাব সম্পর্কে অবশ্য কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি শিল্পমন্ত্রী।
বুধবারই সিঙ্গুরের ‘অনিচ্ছুক’ চাষিদের মাসিক ভাতা এক হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে দু’হাজার টাকা করার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বিধানসভা চলা সত্ত্বেও মহাকরণে মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণা নিয়ে আপত্তি তোলে বিরোধীরা।
কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যের সিঙ্গুর আইন ‘অসাংবিধানিক ও অবৈধ’ ঘোষণা করেছে গত শুক্রবার। কিন্তু শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বুধবার বিধানসভায় বলেন, “সিঙ্গুরের জমি তো আমরা নিয়েই নিয়েছি। ওটা এখন আমাদের অধিকারে, কন্ট্রোলে আছে। আইন-আদালত কী বলল, সেটা অন্য কথা। শুধু সময়ের অপেক্ষা!” তাঁর আরও বক্তব্য, “হাইকোর্টের আদেশ আইনানুগ কি না, তা বলার সময় আসেনি। এখনও অনেক দরজা খোলা আছে। জমি ফেরত দিতে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ।”
রাজ্যের সিঙ্গুর আইন হাইকোর্ট ‘অবৈধ’ ঘোষণা করলেও সরকারকে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করার জন্য দু’মাস সময় দিয়েছে। ফলে, আইনত এখন সিঙ্গুরের ৯৯৭ একর জমি সরকারের হাতে। কিন্তু আইনি লড়াই শেষ হওয়ার আগেই ‘অনিচ্ছুক’দের জমি ফেরত দেওয়ার বিষয়টি ‘শুধু সময়ের অপেক্ষা’ এমন কথা বিধানসভায় মন্ত্রী বলতে পারেন কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
এ দিনই রাজভবনে রাজ্যপাল এম কে নারায়ণনের সঙ্গে কথা বলেন পার্থবাবু। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, সিঙ্গুর বিলে রাষ্ট্রপতির সম্মতির বিষয়ে রাজ্য সরকারের আইনি পরামর্শ নিয়ে রাজ্যপালের সাম্প্রতিক মন্তব্যের ফলে তাঁদের ‘বিড়ম্বনা’র কথা ব্যাখ্যা করেন শিল্পমন্ত্রী। রাজ্যপাল অবশ্য জানান, তিনি কোনও ‘আনুষ্ঠানিক বিবৃতি’ দেননি। সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে তথ্য দিয়েছেন। যা সংবাদমাধ্যম তাদের মতো করে ‘ব্যাখ্যা’ করছে। শিল্পমন্ত্রী রাজ্যপালকে অনুরোধ করেছেন, তিনিই যেন বিবৃতি দিয়ে ‘সংশয়’ দূর করেন।
শিল্প দফতরই ২০১১ সালে বিধানসভায় সিঙ্গুর বিল আনে। ফলে শিল্প-বাজেটে এ দিন সিঙ্গুরের কথা ওঠে। বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র শিল্পমন্ত্রীর কাছে জানতে চান, “আপনারা কী করবেন সিঙ্গুরে?” তিনি বলেন, “এই আইন দাঁড়াবে না। তার চেয়ে এই অধিবেশনেই সিঙ্গুর আইনের একটি অনুচ্ছেদ সংশোধন করে পাঁচ দিনের মধ্যে বিল আনুন। আমরা দু’হাত তুলে সমর্থন করব।”
১৮৯৪-এর কেন্দ্রীয় জমি অধিগ্রহণ আইনে জমি ফেরতের কোনও ব্যবস্থা নেই। কিন্তু এই আইন অনুমোদন করে রাজ্য বিধানসভায় যে বিল গৃহীত হয়েছিল, তা সংশোধন করে জমি ফেরত নেওয়ার ব্যবস্থা করেছে তামিলনাড়ু। সূর্যবাবুদের প্রস্তাব, এই পথেই সিঙ্গুর আইন সংশোধন করুক রাজ্য। বস্তুত, সিঙ্গুর বিল বিধানসভায় আসার সময়েই তাঁরা এই প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তবে এই পথে হাঁটতে গেলে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়া যাবে না। কারণ, পুরনো আইনের উপরে আদালতের রায় চ্যালেঞ্জ করা ও আইন সংশোধন, দু’টো একই সঙ্গে চলতে পারে না। সূর্যবাবুর কথায়, “মামলার বাইরে কিছু করা গেলে করুন। আমরা পাশে দাঁড়াব।”
সূর্যবাবুর প্রস্তাব নিয়ে শিল্পমন্ত্রী তাঁর বক্তৃতায় কোনও মন্তব্য করেননি। পরে বাইরেও বলেছেন, “সংশোধনী নিয়ে এখন কিছু বলছি না।” তবে সরকার যে জমি ফেরত দিতে বদ্ধপরিকর, তা ফের জানিয়ে বক্তৃতায় তিনি বলেন, “কৃষকদের বিরুদ্ধে অনেক অত্যাচার হয়েছে। সুতরাং, জমি আমরা ফেরত দেবই!”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.