তিন দিন ধরে বৃষ্টি ও ধসে বাংলাদেশে অন্তত ৯৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন। মাটির পাহাড় চাপা পড়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে বান্দরবনের দু’টি পরিবার। বাস্তুহারা কয়েক হাজার।
বাংলাদেশ প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত দু’দিনেই দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বান্দরবন, কক্সবাজার এবং চট্টগ্রামে বৃষ্টিতে ও মাটির পাহাড় ধসে মারা গিয়েছেন ৮৫ জন। অনেকে বৃষ্টির স্রোতে ভেসে যান। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এবং বাড়ি ধসেও মৃত্যু হয় অনেকের। বুধবার ধ্বংসস্তূপ থেকে আরও ৯টি মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। চট্টগ্রামের ডিভিশনাল কমিশনার সিরাজুল হক খোকন আজ বলেন, “বান্দরবন থেকে ৩৩, কক্সবাজার থেকে ৪০ এবং চট্টগ্রামে ২১ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে।” |
সব থেকে খারাপ অবস্থা বান্দরবনের। হাজার তিনেক মাটির বাড়ি ভেঙে পড়েছে। এর মধ্যে শুধু লামা এলাকাতেই ভেঙে পড়েছে দু’হাজার মাটির বাড়ি। নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে দুটি পরিবার। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী লামার বাসিন্দা রশিদউদ্দিন জানান, বাবা-মা, স্ত্রী-সন্তান-সহ পরিবারের ৬ জনের সঙ্গে পাহাড়ের পাদদেশে থাকতেন আদতে কক্সবাজারের বাসিন্দা মিজানুর রহমান (৪৫)। সোমবার কক্সবাজার থেকে আরও চার আত্মীয় এসেছিলেন বাড়িতে। মঙ্গলবার রাতের বৃষ্টিতে মিজানুরের বাড়ির উপরেই ভেঙে পড়ে মাটির পাহাড়। বান্দরবনের দক্ষিণ বাইশরি গ্রামেও মাটির পাহাড়ে চাপা পড়েন এক পরিবারের ৬ জন।
কক্সবাজারের পাতাবাড়িতেও মাটির পাহাড় ধসে একই পরিবারের ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। চট্টগ্রামে খুলশির একটি মাজার সংলগ্ন পাহাড় ধসে মারা যান ৩ জন। চাপা পড়েছে ২০-২৫টি বাড়ি। চট্টগ্রাম শহরেরও বেশির ভাগ জলমগ্ন। সোমবার থেকে শুরু হওয়া প্রবল বর্ষণের জেরে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের সড়ক পথটি বন্ধ। একটি সড়ক সেতু ভেঙে মঙ্গলবার রাত থেকে সারা দেশের সঙ্গে কক্সবাজারের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন।
এর মধ্যেই উদ্ধারকারীদের সঙ্কট বাড়িয়েছে হড়পা বান। বেশ কয়েকটি এলাকায় হড়পা বানের তোড়ে রাস্তাঘাট ভেঙে গিয়েছে। চট্টগ্রামের কুমিরা ও ভাটিয়ারি এলাকায় রেললাইন তলিয়ে গিয়েছে। সেতু ভেঙে রাজধানী ঢাকা ও সিলেটের সঙ্গে চট্টগ্রামের রেল যোগাযোগ বন্ধ। বাংলাদেশের বিমান মন্ত্রক জানিয়েছে, রানওয়েতে জল জমে যাওয়ায় চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উড়ান ওঠানামা বন্ধ। |