সমগ্র নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন জুড়েই এখন চলছে উন্নয়নের কর্মযজ্ঞ। কংক্রিট ও বিটুমেনে এন জে পি স্টেশনকে যেন মুড়ে ফেলা হয়েছে। দার্জিলিং পাহাড়ের টানে যে সব পর্যটকরা এই অঞ্চলে আসেন, তাঁদের মুগ্ধ করতেই রেল কর্তৃপক্ষের এই প্রয়াস। পিচের রাস্তার ওপর দিয়ে প্রতি দিন ছুটে চলে অজস্র গাড়ি এবং ডিজেল চালিত অটোরিকশা। তিন হাজারের বেশি অটোরিকশা এই স্টেশনের বুকে প্রতি দিন বিষাক্ত ধোঁয়া ছেড়ে যায়। যে কারণে ঝাঁ চকচকে স্টেশনটি উত্তরবঙ্গের এক দূষণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে।
বছর দশেক আগেও স্টেশন চত্বরে ছিল সবুজ গাছের স্নিগ্ধ ছায়া। পাখিদের ডাক শোনা যেত। পর্যটকদের ভিড় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ডিজেল চালিত গাড়ির সংখ্যা বাড়ায় সবুজ উধাও। |
এন জে পি স্টেশন চত্বর থেকে সবুজ উধাও। |
চলতি গরমে শিলিগুড়ি শহরের এন জে পি স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় গড় তাপমাত্রা থেকেছে উর্ধ্বমুখী। উত্তপ্ত রোদে পিচ গলে পর্যটকদের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। উন্নয়নের কর্মযজ্ঞে প্রায় সব গাছ এলাকা থেকে উধাও হয়ে গিয়েছে। বৃক্ষ নিধন করে কংক্রিটের স্ল্যাবে এন জে পি’কে মুড়ে দেওয়ার যে প্রয়াস, দার্জিলিঙের দিকে যেতে হিলকার্ট রোডের দু-ধারের গাছগুলিও তার আওতায় পড়েছে। উত্তরবঙ্গ উৎসব উপলক্ষে বহু গাছের ডালপালাকে নিধন করা হয়েছে। পরিবর্তে বসেছে পঞ্চাশ লক্ষ টাকার ট্রাইডেন্ট ল্যাম্প।
শিলিগুড়ি এখন ফ্ল্যাটের জঙ্গল। পৌরসভা দু-চারটি সবুজ গাছ রাস্তার দু ধারে লাগাবার চেষ্টা করেছিল। অধিকাংশ চারাগাছই মারা পড়েছে। শহরের উত্তাপ যত বাড়ছে, শিলিগুড়ির ফ্ল্যাটের সংখ্যা তত বেড়ে চলেছে। শহরের প্রাণকেন্দ্র বিধান মার্কেট এখন জতুগৃহে পরিণত হয়েছে। ছয়-সাত তলা বাড়ি ও ফ্ল্যাটে ঘিরে দেওয়া হয়েছে বিধান মার্কেটকে।
উত্তরবঙ্গ বিশেষ করে শিলিগুড়ি এবং তরাই এলাকায় শুধু যে শিশু, সেগুন, গামারি, জারুল, মেহগনি এবং বেতই দেখা যেত তাই নয়, সেবক হিমালয়ের কালিঝোরাতে আমগাছের দেখা মিলত। এখন শহরের গৃহস্থ বাড়ি থেকেও উধাও হয়ে যাচ্ছে নারকেল, পেয়ারা, লিচু, কাঁঠাল গাছ। মাত্র বিশ-পঁচিশ বছর আগে এই সব ফল প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যেত এই অঞ্চলে। সামান্য কলার জন্যও এখন শহরবাসীকে চেয়ে থাকতে হয় অন্য রাজ্যের দিকে। আসলে এখন শহরবাসীর মাথায় ঢুকে গিয়েছে উঠোনের বাতাবি লেবু গাছ বা কাঁঠাল গাছটা ফেলে দিতে পারলেই দু-কোটি টাকার ফ্ল্যাটের ব্যবসা হয়ে যাবে।
শান্তনু বসু। চাঁচল, মালদহ
|
হাতুড়ে শব্দটি আপত্তিকর এবং অপমানজনক। কারণ আমরা জানি হাতুড়ে মানেই কোয়াক বা কু-চিকিৎসক। এঁরা চিকিৎসা পেশায় অযোগ্য। অথচ চিকিৎসাবিদ্যায় প্রথাগত ভাবে শিক্ষিত না হলেও তাঁরা যথেষ্ট অভিজ্ঞ। রাজ্য তথা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রত্যম্ত গ্রাম-গঞ্জের সাধারণ মানুষের অসুখে বিসুখে এই গ্রামীণ চিকিৎসকরাই একমাত্র সহায়। তাঁদেরকে ‘হাতুড়ে’ বলে তাচ্ছিল্য করে অপমান করা হয়। কারণ হাতুড়ে পেশাটি সরকার অনুমোদিত নয়, সেই হেতু বেআইনি ও অবৈধ।
কিন্তু প্রশ্ন এটাই যে সরকার জেনে বুঝেও বেআইনি পেশাটি বন্ধ করছেন না কেন? কারণ গ্রামের চিকিৎসা মূলত এদের ওপরই নির্ভরশীল। আর জনগণের অর্থে অর্থাৎ সরকারি অর্থে ডিগ্রিপ্রাপ্ত ডাক্তারবাবুরা পল্লিবিমুখ। অতএব রাজ্য সরকার সমীপে সবিনয়ে প্রস্তাব জানাতে চাই যে, পল্লিবাসীর স্বার্থে এই ‘হাতুড়ে’ অথচ অভিজ্ঞ গ্রামীণ চিকিৎসকদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হোক।
রামনাথ মজুমদার। পুণ্ডিবাড়ি, কোচবিহার
|
সংস্কৃত ভারতের আদি ভাষা। এটি অনেক ভাষার উৎস। প্রাচীন শিক্ষা ছিল সংস্কৃত ভাষা কেন্দ্রিক। তাই গড়ে উঠেছিল সংস্কৃত ভাষার টোল। টোলের পণ্ডিতরা সমাজে সম্মান পেতেন। এই ভাষার মাধ্যমে আচার ব্যবহার শেখানো হত। আজ আর এই ভাষার কদর নেই। টোলগুলি বিলুপ্ত। এটি ভারতের প্রাচীন ভাষার প্রতি অবিচার। বিজ্ঞানের উন্নতি হোক, কিন্তু তা সংস্কৃত ভাষাকে অবহেলা করে নয়। প্রতিটি ভারতবাসীর এই ভাষা সম্বন্ধে জানা উচিত। অবিলম্বে এই ভাষার উন্নতির দিকে সরকারের নজর দেওয়া দরকার।
তিমির বন্দ্যোপাধ্যায়। হাকিমপাড়া, জলপাইগুড়ি
|
এই বিভাগে চিঠি পাঠান সম্পূর্ণ নাম ও ঠিকানা উল্লেখ করে।
উত্তরের চিঠি,
আনন্দবাজার পত্রিকা প্রাঃ লিঃ,
১৩৬/৮৯ চার্চ রোড,
শিলিগুড়ি- ৭৩৪৪০১ |
|