শিলচর-লামডিং ব্রডগেজ এবং ইস্ট-ওয়েস্ট করিডর এই দুই জাতীয় প্রকল্প নিয়ে সরকারের কাছে শ্বেতপত্র দাবি করল বিজেপি। দলের প্রদেশ মুখপাত্র রাজদীপ রায় জানান, এইচ ডি দেবগৌড়া প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে ১৯৯৬ সালে শিলচর-লামডিং ২১৪ কিমি রেললাইনে গেজ পরিবর্তনের কাজ শুরু হয়। এতগুলি বছর কেটে যাওয়ার পরও ওই কাজ শেষ হয়নি। বিভাগীয় মন্ত্রী বা জেনারেল ম্যানেজারের বদলির পর মাঝেমধ্যে দেখা গিয়েছে কিছুটা তৎপরতা। কিন্তু কিছুকাল বাদেই দেখা যায়, কাজে আগের ঢিলেমিই ফিরে এসেছে। বছরের পর বছর একই অবস্থা। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের সর্বশেষ ঘোষণা, ২০১৩ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ হয়ে যাবে। ২০১৪ সালে এই অঞ্চলের মানুষ ব্রডগেজে চড়বেন। কিন্তু কাজের অগ্রগতি মোটেও সন্তোষজনক নয় বলে বিজেপি নেতাদের অভিমত।
শিলচর-লামডিং ব্রডগেজ রূপায়ণ সংগ্রাম কমিটির এক প্রতিনিধি দলও সরেজমিনে ঘুরে এসে জানিয়েছেন, যে-গতিতে ব্রডগেজের কাজ এগোচ্ছে, তাতে কোনওমতেই ২০১৩-তে শেষ হবে না। তাঁদর প্রশ্ন, “আগে জঙ্গি-সমস্যার কথা বলা হত, কিন্তু এখন ডিমা হাসাও জেলায় জঙ্গিজনিত অশান্তি আর নেই বললেই চলে। এর পরও কেন বান্দরখালের নিকটবর্তী রেলসেতুটির কাজ ৫০ শতাংশের বেশি এগোয়নি?
একই ভাবে ‘শিলচর-সৌরাষ্ট্র মহাসড়ক’ নামে পরিচিত ইস্ট-ওয়েস্ট করিডরের কাজ নিয়েও সমস্যার জট খুলছে না। অভয়ারণ্যের উপর দিয়ে এমন সড়ক নির্মাণ নিয়ে আপত্তি রয়েছে বন বিভাগের। এ নিয়ে ক’দিন পরপরই বৈঠক হচ্ছে। এক-এক বার বৈঠকের পর রাজনৈতিক নেতারা ‘সমস্যার সমাধান হয়ে গিয়েছে’ বললেও বাস্তবে কিন্তু কাজ এগোচ্ছে না। কেন এই ঢিলেমি, তা নিয়ে তাই সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে। এ জন্যই বিজেপির পক্ষ থেকে জাতীয় প্রকল্প দুটি নিয়ে শ্বেতপত্র দাবি করা হয়েছে। দলীয় সাংসদ কবীন্দ্র পুরকায়স্থও প্রকল্পগুলি বাস্তবায়নে সরকারের গড়িমসিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। কবীন্দ্র জানান, সংসদে বহু বার এ প্রসঙ্গতিনি উত্থাপন করেছেন। কিন্তু সরকার পক্ষ বিষয়টিকে গুরুত্বই দেয় না।
বিজেপি নেতা রাজদীপ রায়ের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ রাজ্যসভায় অসমেরই প্রতিনিধিত্ব করেন। অথচ এই রাজ্যের একটি বৃহত্তর অঞ্চল এমন সমস্যায় ভুগছে, সাংসদ হিসেবে তিনি সে-সবের খবরও রাখেন না। বিজেপি নেতারা রাজ্য মন্ত্রিসভায় বরাকের প্রতিনিধিদের ভূমিকারও তীব্র সমালোচনা করেন। |