ক্ষতিপূরণও পাননি ব্যবসায়ীরা
‘বর্ণপরিচয়’ শেষ কত দিনে, জানা নেই কলকাতা পুরসভার
রও একটা বছর কেটে গেল। দেড় বছরে যা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল রাজ্য সরকার, পাঁচ বছরেও তা পূরণ হল না। শেষ হল না ‘বর্ণপরিচয়’। এখনও মার্কাস স্কোয়ারের অস্থায়ী কাঠামোয় ধুঁকছে কলেজ স্ট্রিট পুরবাজার ও সেখানকার ন’শো ব্যবসায়ী।
ইতিমধ্যে পুরসভা থেকে বিধানসভা, ‘পরিবর্তন’ ঘটে গিয়েছে সব জায়গাতেই। যদিও বেশিরভাগ দোকানদারের আক্ষেপ, তাঁদের ভাগ্যে এখনও কোনও ‘পরিবর্তন’ এল না। এখনও পর্যন্ত নতুন দোকানের চাবি পেয়েছেন মাত্র শ’খানেক ব্যবসায়ী। তা-ও সামগ্রিক নির্মাণ শেষ না হওয়ায় সেই দোকানগুলির বৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ বা দমকলের ছাড়পত্র নেই। ফলে মাথায় নতুন ছাদ জুটলেও নিরাপত্তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে।
এখনও এমনই অবস্থা ‘বর্ণপরিচয়’-এর। ছবি: সুমন বল্লভ
‘কলেজ স্ট্রিট মার্কেট প্রগতিশীল ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক আনন্দ দত্তের দাবি, বর্ণপরিচয়ের তিনটি ব্লক ‘এ’, ‘বি’ এবং ‘সি’-এর মধ্যে ‘বি’ ও ‘সি’ ব্লকের নির্মাণকাজে এখনও পর্যন্ত সে অর্থে হাত পড়েনি। ‘এ’ ব্লকের কাজও এখনও চলছে। এই পরিস্থিতিতে এখন পুরসভা থেকে চাপ দেওয়া হচ্ছে, ‘যাকে যেমন দোকান দেওয়া হচ্ছে, তা-ই নিয়ে নিন।’ এখনও পর্যন্ত চাবি পেয়েছেন মাত্র ১৩০ জন। আনন্দবাবুর কথায়, “পাঁচ বছরে দোকানদারদের মধ্যে হতাশা জন্মেছে। তাই যা দেওয়া হচ্ছে, তাঁরা বাধ্য হয়ে তা-ই মেনে নিচ্ছেন।”
পুরনো দোকানের সমপরিমাণ জায়গা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি থাকলেও নকশায় ‘ত্রুটির’ জেরে ব্যবসার অনুপযোগী ছোট ঘর দেওয়া হচ্ছে এই অভিযোগ নিয়ে গত বছর মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হন ব্যবসায়ীরা। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছিলেন তিনি। আনন্দবাবুর আক্ষেপ, বছর ঘুরে গেলেও এখনও কোনও পদক্ষেপ করলেন না মেয়র। ফলে সেই পুরনো নকশাতেই কাজ এগোচ্ছে ‘বর্ণপরিচয়ের’।
গত বছর কলেজ স্ট্রিট পুরবাজার পরিদর্শনে এসে মেয়র প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ক্ষতিপূরণ পাবেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও ক্ষতিপূরণের মুখ দেখেননি তাঁরা। এ প্রসঙ্গে মেয়র পারিষদ (উদ্যান, বাজার, ক্রীড়া) দেবাশিস কুমার জানান, ক্ষতিপূরণের বিষয়ে এখনও আলোচনাই হয়নি। তবে বুক-মলের নির্মাণকাজ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “‘এ’ ব্লকের একতলার কাজ শেষ। ‘বি’ এবং ‘সি’ ব্লকের কাজও এগিয়েছে।” তাঁর অবশ্য দাবি, এখনও পর্যন্ত ১৪০ জনকে চাবি দেওয়া হয়েছে। অনেকে ইতিমধ্যেই নতুন বুক-মলে চলে গিয়েছেন। ব্যবসায়ীদের পুরসভা চাপ দিচ্ছে, এ কথাও অস্বীকার করেছেন দেবাশিসবাবু। তিনি বলেন,“যাঁরা চাবি পেয়েও অস্থায়ী বাজারে ব্যবসা করছেন, তাঁদেরই শুধুমাত্র বর্ণপরিচয়ে চলে যেতে বলা হয়েছে।”
আনন্দবাবুর বক্তব্য, ‘বণর্পরিচয়ে’ এখনও বিদ্যুৎ সংযোগ আসেনি। নেই প্রয়োজনমাফিক জল। কাজ শেষের ছাড়পত্র নেই বলে দমকলের অনুমতিও পায়নি নয়া বুক-মল। এ অবস্থাতেই কেন চলে যেতে বলা হচ্ছে সেখানে? এ প্রসঙ্গে মেয়র পারিষদ জানান, দমকলের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। তবে, এখনও অনুমতি মিলেছে কি না, সে বিষয়ে বলতে পারেননি দেবাশিসবাবু।
কবে শেষ হবে কাজ? বর্ণপরিচয়ের নির্মাণ সংস্থা ‘বেঙ্গল শেল্টার’-এর কর্ণধার সমর নাগ জানান, ‘কাজ চলছে’। এর বেশি বলতে চাননি দেবাশিসবাবুও। তিনি বলেন,“আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়ে রাখতে পারিনি। তাই কাজ কবে শেষ হবে, তা নিয়ে কিছু বলতে চাই না।”
রুজি-রুটির সন্ধানে কেউ দোকান ছেড়ে ঘুরে ঘুরে চা বিক্রি করছেন। কেউ বা হকারি করছেন ফুটপাথে। তাঁদের আক্ষেপ, “দিদি অনেককেই তো দেখছেন, আমাদের দিকে তাকালেন না।”
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.