প্রায় আট মাস আগেই তৈরি হয়ে গিয়েছে কংক্রিটের সেতু। তবুও এখনও বাঁশের সাঁকো ভরসা করেই চলছে নিত্য যাতায়াত। মন্তেশ্বরের সোমসপুর গ্রামে খড়ি নদীর উপরে ৫০ ফুট লম্বা সেতুটি একপ্রান্তের সংযোগকারী রাস্তার অভাবে এ ভাবেই পড়ে রয়েছে। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, সেতুটি চালু হলে মন্তেশ্বর ও পূর্বস্থলীর মধ্যে যোগাযোগ সহজ হবে। পূর্বস্থলীর বাসিন্দারা কম সময়ে এবং কম খরচে পৌছতে পারবেন জেলা সদরে। কিন্তু উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ছাড়া জমি দিতে চাইছেন না গ্রামবাসীরা। তবে কালনার মহকুমাশাসক সুমিতা বাগচি জানান, বিষয়টি নিয়ে বৈঠক হয়েছে। আশা করা যায় ক্ষতিপূরণের টাকা শীঘ্রই এসে যাবে।” |
বহু বছর ধরেই বাসিন্দারা খড়ি নদী পারাপার করছেন বাঁশের সাঁকো দিয়ে। শুধু পায়ে হেঁটে নয় সাইকেল, ভ্যান এমনকী ছোট গাড়িও যাতায়াত করে এই সাঁকো দিয়ে। সেতুর একপাশে মন্তেশ্বরের বামুনপাড়া পঞ্চায়েতের সোমসপুর গ্রাম আর অন্য দিকে পূর্বস্থলীর মুকসিমপাড়া পঞ্চায়েতের হালদি ন’পাড়া গ্রাম। দুই ব্লকের বাসিন্দাদেরই দাবি ছিল কংক্রিটের সেতু নির্মাণ।
বছর দু’য়েক আগে পূর্ত দফতর সেতুটি নির্মাণে উদ্যোগী হয়। আট মাস আগে নির্মাণ কাজ শেষও হয়ে যায়। হালদি ন’পাড়া গ্রামে প্রায় ২০টি পরিবারকে পুর্নবাসন দিয়ে সেতুর সঙ্গে যোগাযোগকারী রাস্তা তৈরি করা হয়। কিন্তু সমস্যা হয় সোমসপুরের দিকের রাস্তা নিয়ে। বামুুনপাড়া পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, সংযোগকারী রাস্তাটির দৈর্ঘ্য হবে প্রায় ৭০০ ফুট। ওই এলাকায় ব্যক্তিগত মালিকানায় জমি, বাড়ি রয়েছে প্রায় ২৩ জনের। তাঁদের মধ্যে ২০ জনকে আগের পঞ্চায়েত বোর্ড ইন্দিরা আবাস যোজনায় নতুন বাড়ি তৈরির টাকা দেয়। বাকি তিনজনকে টাকা দেয় বর্তমান পুরবোর্ড। কিন্তু জমির জন্য ক্ষতিপূরণ না পাওয়ায় জমি দিতে রাজি হয়নি এই পরিবারগুলি। গ্রামে আসা প্রশাসনিক আধিকারিকদেরও তাঁরা সাফ জানিয়েছেন এ কথা। ধর্মদাস পাল, ধনঞ্জয় পাল, সনাতন পালদের দাবি, একেই আমরা গরীব। এর উপরে জমি হারা হলে আরও বিপাকে পড়ব। তাই উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ছাড়া জমি দেব না। মুকসিমপাড়া পঞ্চায়েতের উপপ্রধান মৃণালকান্তি প্রামাণিক বলেন, “পরিবারগুলি জমির ক্ষতিপূরণ পেলেই রাস্তা তৈরিতে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।” |
মৃণালকান্তিবাবুর দাবি, কংক্রিকেট সেতুটি চালু হলে বাস যোগাযোগও চালু হবে। তাতে উপকৃত হবেন পূর্বস্থলী ও মন্তেশ্বর দুই এলাকার মানুষই। পূর্বস্থলীর হালদি ন’পাড়া, জামালপুর, বারোর পাড়া, কাইবাতি-সহ বেশ কিছু গ্রামের বাসিন্দাদের বর্ধমান যেতে গেলে কাটোয়া হয়ে প্রায় ৭০ কিমি পথ অতিক্রম করতে হয়। নতুন সেতুটি চালু হলে এই দূরত্ব ৫০ কিমিতে এসে দাঁড়াবে। ফলে সময়ও বাঁচবে আর খরচও কমবে কিছুটা। এছাড়া এলাকার কৃষকেরা কৃষিজাত পণ্যও লরি বা ট্রাকের মাধ্যমে দ্রুত বর্ধমান বাজারে পৌছে দিতে পারবে।
সরকারি ভাবে জমি অধিগ্রহণ করে যাতে ক্ষতিপূরণের অর্থ দ্রুত দেওয়া যায় সে ব্যাপারে সচেষ্ট হয়েছেন পূর্বস্থলী উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায়ও। তিনি বলেন, “চেষ্টা চলছে সমস্যা মিটিয়ে সেংযাগকারী রাস্তার কাজ দ্রুত শুরু করার।”
|