আলোচনা চলছিল রাজ্যের পুর এবং নগরোন্নয়ন দফতরের বাজেট নিয়ে। তার মাঝখানে আচমকাই ‘পয়েন্ট অফ অর্ডার’ তুলে অন্য একটি বিষয়ে পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে প্রশ্ন করলেন তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায়। যার জবাবে জানা গেল, কলকাতা হাইকোর্টের যে সব অবসরপ্রাপ্ত এবং কর্মরত বিচারপতি বাম আমলে বিশেষ ‘কোটা’য় জমি পেয়েছেন, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন পিনাকী ঘোষ। যিনি কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গুর-আইন বিরোধী রায়ের অন্যতম কারিগর!
ঘটনাস্থল পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা। ঘটনাকালশুক্রবার বিধানসভা অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্ব।
পুর-বাজেট নিয়ে এ দিন আলোচনা চলাকালীন ওই দফতরের মন্ত্রী ফিরহাদ এবং তাপসবাবুকে ডাকেন পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিন জনে কয়েক মিনিট আলোচনা করেন। স্পিকারের আসনে তখন ডেপুটি স্পিকার সোনালি গুহ। পার্থবাবু কথা বলেন তাঁর সঙ্গেও। সে সময় বিরোধীশূন্য কক্ষে (স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় ফরওয়ার্ড ব্লকের বিধায়ক ইমরান আলি রাম্জকে বহিষ্কার করায় বাম বিধায়কেরা কক্ষত্যাগ করেছিলেন) বাজেট আলোচনা চলছিল। হঠাৎই তাপসবাবু ‘পয়েন্ট অফ অর্ডার’ তুলে প্রশ্ন করেন, “বিগত সরকারের আমলে সল্টলেক-রাজারহাট-নিউটাউন এলাকায় বিশেষ কোটায় কোন কোন অবসরপ্রাপ্ত ও বর্তমান বিচারপতি জমি পেয়েছেন, মাননীয় পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী কি জানাতে পারেন?” জবাবে ফিরহাদ বলেন, “হ্যাঁ। প্রসেনজিৎ মণ্ডল, পিনাকী ঘোষ, অসীম বন্দ্যোপাধ্যায়, তপেন সেনএ রকম ১৭ জন।”
ঘটনাচক্রে, এই ঘটনার মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে এ দিন সকালেই কলকাতা হাইকোর্টে পিনাকী ঘোষ ও মৃণালকান্তি চৌধুরীর ডিভিশন বেঞ্চ রায় দিয়েছে, রাজ্য সরকারের সিঙ্গুর আইন ‘অসাংবিধানিক’ এবং ‘অবৈধ’।
যা রাজ্য সরকারের পক্ষে যথেষ্ট ‘অস্বস্তিকর’। তৃণমূলের একাংশের বক্তব্য, সেই ‘অস্বস্তি’র ‘জবাব’ দিতেই তৃণমূল পিনাকীবাবু সম্পর্কে ওই তথ্য কৌশলে বিধানসভায় ‘নথিভুক্ত’ করিয়ে রাখল। |