তিন দিন আগেই নাটকীয়ভাবে হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালস (এইচপিএল)-এর কর্তৃত্ব হাতে নিয়েছে রাজ্য। এ বার ধারে সংস্থার প্রধান কাঁচামাল ন্যাপথা আরও বেশি করে পেতে ময়দানে নামল তারা। নয়াদিল্লিতে বৃহস্পতিবার ইন্ডিয়ান অয়েল (আইওসি) চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন এইচ পি এলের সদ্য নিযুক্ত ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুমন্ত্র চৌধুরী। লক্ষ্য ধারে আরও বেশি ন্যাপথা কেনার সুবিধা আদায়। পেট্রোলিয়াম সচিবের সঙ্গেও আলোচনায় বসবেন সুমন্ত্রবাবু।
তবে, এই সুবিধা পাওয়ার সঙ্গে সংস্থায় আইওসি-র শেয়ার বৃদ্ধির সম্পর্ক রয়েছে কি-না, তা অবশ্য স্পষ্ট করেনি রাজ্য। বরং, নয়াদিল্লিতে ওই বৈঠকে মালিকানা নিয়ে আলোচনার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে সুমন্ত্রবাবু বলেন, “বৈঠকের মূল বিষয় ন্যাপথা সরবরাহ। আগে ৩০০ কোটি টাকা পর্যন্ত ধারে ন্যাপথা দিত আইওসি। এখন তা কমে হয়েছে ১৩০ কোটি। তাই পুরোনো সুবিধা ফিরে পেতেই এই বৈঠক।” এই সুবিধা ফিরে পেতে রাজ্য যে সক্রিয় হয়েছে, তা আগেই জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু ওই সুবিধা আইওসি-কে আরও শেয়ার দেওয়ার পরিবর্তে আসবে কি-না, তা নিয়ে বরাবরই মুখে কুলুপ এঁটেছে সরকার। প্রসঙ্গত, পরিচালন পর্ষদে নিজেদের প্রতিনিধি দেওয়ার দাবি অনেকদিন ধরেই জানিয়ে আসছে আইওসি। আপাতত এইচপিএলে ‘স্ট্র্যাটেজিক’ অংশীদার হিসেবে ৮.৮৯% শেয়ার রয়েছে আইওসি-র। এই রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাকে বড় লগ্নিকারী হিসেবে টানতে চেয়েছিল পূর্বতন বাম সরকারও। কিন্তু তখন তাতে আপত্তি জানায় এইচপিএলের অন্যতম প্রধান অংশীদার চ্যাটার্জি গোষ্ঠী। |
ন্যাপথা কিনতে বছরে ৮ হাজার কোটি টাকা খরচ করে এইচপিএল। এর প্রায় ৮০% সরবরাহ করে আইওসি। বাকি ন্যাপথা কুয়েত ও আবু ধাবির দু’টি সংস্থা আমদানি করে এইচপিএল। সংস্থা সূত্রে খবর, এই দুই সংস্থার ন্যাপথার মান উন্নততর এবং দামও কম। কিন্তু পণ্য মাসুল দেওয়ার পরে তার দাম আইওসি-র থেকে বেশি। তা ছাড়া, হলদিয়াতেই আইওসি-র কারখানা থাকায় পরিবহণ খরচও কম। সেই কারণেই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটির কাছ থেকে ন্যাপথা কিনতে চায় তারা।
পুরো উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় ন্যাপথা কেনার টাকা না থাকায়, আপাতত কারখানার ক্ষমতার ৫০% কাজে লাগাতে পারে সংস্থা। ১০০% উৎপাদন করলে ন্যাপথার অভাবে ২৬ মে -ই বন্ধ হয়ে যেত কারখানা। তাই আইওসি-র সঙ্গে ন্যাপথা নিয়ে বৈঠক কতটা ফলপ্রসূ হয় সেদিকেই তাকিয়ে সংস্থা। |