|
|
|
|
পুরবোর্ড গঠন হয়নি, মিলছে না শংসাপত্রও |
নিজস্ব সংবাদদাতা • দুর্গাপুর |
নতুন কাউন্সিলরেরা নির্বাচিত হয়েছেন দিন কুড়ি আগে। এখনও পুরবোর্ড গঠন না হওয়ায় কেউ দায়িত্ব নিতে পারেননি। ও দিকে পুরনো কাউন্সিলরেরা ‘অচল’। ফলে বিভিন্ন প্রয়োজনে কাউন্সিলরদের শংসাপত্র চেয়েও পাচ্ছেন না দুর্গাপুরের মানুষ। ফলে বিভিন্ন সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে তাঁরা বঞ্চিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ।
যেমন, বিভিন্ন সরকারি সুযোগ-সুবিধা পেতে দুঃস্থদের বিপিএল তালিকায় নাম থাকা জরুরি। কিন্তু বিপিএল তালিকা নিয়ে নানা অভিযোগ রয়েছে। সে ক্ষেত্রে, স্থানীয় কাউন্সিলর যদি শংসাপত্র লিখে দেন তা কাজে লাগে। কাউন্সিলরের শংসাপত্র থাকলে সরকারি হাসপাতালে তাঁরা বিনা পয়সায় ওষুধ পেতে পারেন, এক্স-রে করাতে পারেন। বিনামূল্যে খাবারও মেলে। ট্রেনে মাসিক ‘ইজ্জত’ টিকিট কাটতে গেলে সাংসদের শংসাপত্র লাগে। সাংসদ আবার তা দেন স্থানীয় কাউন্সিলরের শংসাপত্রের উপরে ভিত্তি করে। তা ছাড়া অনেকের জরুরি ভিত্তিতে বাসস্থানের শংসাপত্র লাগে। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলতে গেলেও অনেক সময় কাউন্সিলরের শংসাপত্র প্রয়োজন হয়।
কিন্তু পুর-নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ার দিন কুড়ি পরেও পুরবোর্ড গঠন না হওয়ায় বাসিন্দাদের ভোগান্তি হচ্ছে। নতুন বোর্ড গঠন না হওয়ায় কাউন্সিলরেরা শপথ নিতে পারছেন না। ফলে কাউন্সিলরের প্যাডও ছাপাতে পারছেন না তাঁরা। রায়ডাঙার বাসিন্দা অমিত বাগদি, শম্ভু দাসদের কথায়, “কাউন্সিলর বলছেন, শংসাপত্র দিতে পারব না। বিধায়কের কাছে যান। কিন্তু গেলেই যে বিধায়কের দেখা পাওয়া যাবে, তার নিশ্চয়তা নেই। তা ছাড়া যেতে-আসতে বাসভাড়াও তো লাগে! যত দিন না পুরবোর্ড গঠন হচ্ছে, কাউন্সিলরেরা শপথ নিচ্ছেন, তত ক্ষণ এই দুর্ভোগ পোহাতে হবে।”
এ বারের পুর নির্বাচনে দুর্গাপুর পুরসভার ৪৩টি আসনের মধ্যে ২৯টি পেয়ে তৃণমূল বোর্ড দখল করেছে। কিন্তু পুরভোট সম্পন্ন হওয়ার পরে এত দিন পেরিয়ে যাওয়ার পরেও পুরবোর্ড গঠন না হওয়ায় বাসিন্দাদের দুর্ভোগের কথা কানে গিয়েছে প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক তথা এ বার পুরভোটে পরাজিত প্রার্থী বিপ্রেন্দু চক্রবর্তীর। তিনি জানান, অনেকেই তাঁদের কাছে বিষয়টি নিয়ে আসছেন। তাঁর মতে, “কবে বোর্ড গঠন হবে, সেটা যে দল জয়ী হয়েছে তাদের বিষয়। তবে সাধারণ বাসিন্দারা ভুগছেন। জনপ্রতিনিধিদের এই দিকটাকেই অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত।”
নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর দিন কুড়ি পেরিয়ে গেলেও নতুন পুরবোর্ড কেন শপথ নিচ্ছে না, সে ব্যাপারে তৃণমূলের তরফে কোনও স্পষ্ট ব্যাখ্যা মেলেনি। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, আরও এক সপ্তাহ পরে, ২৯ জুন নতুন বোর্ড শপথ নিতে পারে। শহরের ভাবী মেয়র তথা তৃণমূল বিধায়ক অপূর্ব মুখোপাধ্যায় জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে বাসিন্দাদের সমস্যা মেটাতে তিনি দিনে গড়ে ৮০-৯০টি করে শংসাপত্র দিচ্ছেন বাসিন্দাদের। তিনি বলেন, “গরীব মানুষের স্বার্থ যাতে বিঘ্নিত না হয়, সে জন্য আমি এই ক’দিন অতিরিক্ত সময় দিয়ে শংসাপত্র দেওয়ার ব্যবস্থা করছি। আমাদের দলের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের জানিয়েছি, কেউ তাদের কাছে শংসাপত্রের প্রয়োজনীয়তার কথা জানালে তাঁকে আমার কাছে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে।” বোর্ড গঠন না হওয়া পর্যন্ত আপাতত এই জোড়াতালিই ভরসা দুর্গাপুরবাসীর। |
|
|
|
|
|