বিরল অস্ত্রোপচারে পৃথক দুই বোনের হৃৎপিণ্ড-যকৃৎ |
অবশেষে আলাদা হল তারা। এক টানা বারো ঘণ্টার জটিল অস্ত্রোপচারের পরে তাদের আলাদা করতে পারলেন চিকিৎসকরা। মধ্যপ্রদেশের বেতুল জেলার ছুদিয়া গ্রামের দুই খুদে বাসিন্দা। নাম স্তুতি এবং আরাধনা।
বয়স বছর খানেক। জন্ম থেকেই হৃৎপিণ্ড ও যকৃৎ জোড়া ছিল দুই যমজ বোনের। সেই জোড়া যকৃৎ এবং হৃৎপিণ্ডকেই অস্ত্রোপচার করে আলাদা করেন মধ্যপ্রদেশের পধরের মিশনারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা। আপাতত আগামী আটচল্লিশ ঘণ্টার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন স্তুতি-আরাধনার মা-বাবা। তার পরেই বোঝা যাবে, অস্ত্রোপচার ঠিক কতটা সফল।
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, স্তুতি-আরাধনার মতো যমজরা বেশ বিরল। চিকিৎসাশাস্ত্রের ভাষায় এই ধরনের যমজেরা ‘কনজয়েন্ড টুইনস’ নামেই পরিচিত। এদের আলাদা করক যে জটিল অস্ত্রোপচার দরকার হয়, সেই ধরনের অস্ত্রোপচার মধ্যপ্রদেশে এই প্রথম। ব্যয়বহুল এই অস্ত্রোপচারের জন্য প্রায় ২০ লক্ষ টাকা মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর তহবিল থেকে ওই হাসপাতালকে দেওয়া হয়েছে বলে খবর। |
অস্ত্রোপচারের আগে। ছবি: এএফপি |
হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, স্তুতি-আরাধনার অস্ত্রোপচারের জন্য তৈরি করা হয় ৩৪ জন মেডিক্যাল বিশেষজ্ঞের একটি দল। বুধবার সকাল ন’টা থেকে অস্ত্রোপচার শুরু করেন তাঁরা। চলে রাত ন’টা পর্যন্ত। গোটা অস্ত্রোপচারটি করা হয় চার পর্যায়ে। প্রথমে দুই বোনকে অ্যানাস্থেশিয়া দেওয়া হয়। তার পরে প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে তাদের হৃৎপিণ্ডকে আলাদা করেন চিকিৎসকরা। তৃতীয় পর্যায়ে যকৃৎ আলাদা করা হয়। সব শেষে আলাদা করা হয় শরীরের বাকি অংশগুলো। বারো ঘণ্টার অস্ত্রোপচারের পরে স্তুতিকে ‘অপারেশন থিয়েটার’ থেকে বের করে ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিটে রাখা হয়। পরে নিয়ে আসা হয় আরাধনাকে। দু’জনকেই ভেন্টিলেটরে রাখা হয়েছে। তাঁদের দাবি, আটচল্লিশ ঘণ্টার পরেই বলা সম্ভব কেমন আছে স্তুতি-আরাধনা। |