|
|
|
|
স্বনির্ভরতায় নিম্ন মানের তাঁত-যন্ত্র রাভাদের |
নারায়ণ দে • আলিপুরদুয়ার |
বন দফতরের স্বনির্ভর প্রকল্পে কুরমাই বনবস্তির মহিলাদের দেওয়া নিম্নমানের তাঁত যন্ত্রের দশায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, এতে বিকল্প রোজগারের পথ বন্ধ হওয়ায় ফের জঙ্গলমুখী হচ্ছেন এলাকার রাভা মহিলারা। বন দফতর সূত্রের খবর, চিলাপাতা রেন্জের কুরমাই বস্তিতে বছর ৬ আগে ২৫ জন মহিলাকে জঙ্গলের উপর নির্ভরতা কমাতে তাঁত দিয়েছিল বন দফতর। ওই মহিলাদের অভিযোগ, এক বছর ওই তাঁতে কাপড় বোনার কাজ চললেও যন্ত্রগুলি বেহাল হয়ে পড়েছে। সূতো এবং প্রয়োজনীয় সামগ্রীর অভাবে কারও গোয়ালঘরে, কারও জ্বালানি কাঠে গাদায় স্থান পেয়েছে তাঁতের যন্ত্রগুলি। এতে সংসার চালানোর তাহিদে অনেকেই জঙ্গলের থেকে কাঠ আনাকে বেছে নিয়েছেন। প্রশিক্ষণের পর এক দফায় সূতো ও জিনিসপত্র দেওয়া হলেও পরবর্তীতে তা কীভাবে কোথা থেকে সংগ্রহ করা হবে তা কিছুই জানানো হয়নি বলে ওই মহিলাদের অভিযোগ। |
|
—নিজস্ব চিত্র। |
বন দফতরের ডিএফও (বন্যপ্রাণ-৩) রাজেন্দ্র জাখর বলেন, “কয়েক বছর আগে স্বনির্ভর প্রকল্পে ওই বনবস্তির মহিলাদের তাঁত দেওয়া হয়েছিল। তাঁত বোনার সূতো-সহ অন্যান্য জিনিসপত্র কিনে তাঁত বোনার কথা। তৈরি জিনিস এর পরে তাঁরা বাজারে বিক্রি করতে পারবেন। কী কারণে তাঁরা তাঁত বুনতে পারছেন না তা খোঁজ নিয়ে দেখছি।” গ্রামবাসীরা জানাচ্ছেন, চিলপাতা জঙ্গল থেকে হাতি বাইসন বেড়িয়ে এলাকার খেতের ধান, ভুট্টা খেয়ে যায়। এতে প্রায় প্রতি বছর আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হয় বনবস্তী বাসিন্দাদের। মহিলারা যাতে তাঁতে কাপড়, গামছা বুনে স্বনির্ভর হতে পারেন সেই জন্য তাঁদের তাঁত দেওয়া হয়। স্থানীয় বাসিন্দা সুখশ্রী রাভা বলেন, “গামছা ছাড়াও রাভা মহিলাদের কাপড় ‘মেকনা’র বাজারে চাহিদা রয়েছে। কিন্তু নিম্নমানের তাঁতের মেশিন দেওয়াতে বছর যেতে না যেতেই তা নষ্ট হতে বসেছে।” একই ভাবে শান্তি রাভা, চুনি রাভারা বলেন, “তাঁত তৈরী হয় শালের খুটি দিয়ে। কিন্তু যে তাঁত মেশিন দেওয়া হয়েছ তা ঘোড়ানিম ও কুকাঠ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। ইতিমধ্যে অধিকাংশ তাঁতে ঘুন ধরেছে। কিছু তাঁত ভেঙে গিয়েছে। তাছাড়া কাপড় বোনার সূতো কোথা থেকে পাওয়া যাবে তা জানি না।” চিলাপাতার রেঞ্জ অফিসার গোপাল সরকার বলেন, “কুরমাই বনবস্তিতে তাঁত নিয়ে কী সমস্যা হচ্ছে তা নিয়ে এলাকার মহিলাদের সঙ্গে আলোচনা করব। পুনরায় যাতে ওই প্রকল্পের কাজ ঠিকঠাক শুরু হয় তা নিয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও কথা বলছি।” |
|
|
|
|
|