|
|
|
|
ট্রাকের ধাক্কা বাইকে, মৃত্যু |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
প্রাইভেট টিউশন শেষ করে বাইকে চড়ে বাবার সঙ্গে বাড়ি ফেরার পথে ট্রাকের ধাক্কায় এক স্কুল ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার রাতে ঘটনাটি ঘটে প্রধাননগর থানার দার্জিলিং মোড় লাগোয়া ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে। পুলিশ জানায়, ওই ছাত্রীর নাম শেলি নিয়োগী (১৫)। তাঁর বাড়ি শিবমন্দির লাগায়ো কদমতলায়। শেলি মাটিগাড়ার সেন্ট জোসেফ’স হাইস্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। ঘটনা পর কদমতলা এলাকায় শোকের ছায়া নামে। স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফেও শিক্ষক-শিক্ষিকারা ছাত্রীর পরিবারকে সমবেদনা জানাতে বাড়ি ও শ্মশানঘাটে যান। আজ, বৃহস্পতিবার শোক পালন করতে স্কুলে ছুটি ঘোষণা করেছেন কর্তৃপক্ষ। তবে যে ট্রাকটি বাইকে ধাক্কা দিয়েছে সেটি পুলিশ এখনও চিহ্নিত করতে পারেনি। বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই জাতীয় সড়কে বেশ কিছু ট্রাক, বাস বেপরোয়াভাবে চলাচল করে। এর আগেও দার্জিলিং মোড় থেকে মাটিগাড়ার মধ্যে গাড়ির ধাক্কায় বেশ কয়েকজন জখম ও মারা গিয়েছেন। শিলিগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সৈয়দ ওয়াকার রাজা বলেন, “ওই ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। ট্রাক এবং চালকের খোঁজে তল্লাশি চলছে।” আজ, শুক্রবার শিলিগুড়ির মহকুমাশাসক বৈভব শ্রীবাস্তবকে স্মারকলিপি শহর এবং লাগোয়া এলাকায় বেপরোয়া যান নিয়ন্ত্রণের দাবি জানাবে গার্ডিয়ান ফোরাম অফ নর্থ বেঙ্গল। মহকুমাশাসক বলেন, “পুলিশের সঙ্গে কথা বলব। কী ভাবে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা যায় তা দেখা হচ্ছে।” পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, স্কুল ছুটির বাড়ি থেকে প্রতিদিন বিকালে শিলিগুড়ির হাকিমপাড়ায় প্রাইভেট টিউশন পড়তে যেত শেলি। পড়ার পর রাতে বাবার বাইকে নৌকাঘাট হয়ে বাড়ি ফিরত। এদিনও শেলি টিউশন পড়ে বাবার সঙ্গে বাড়ি ফিরছিল। সঞ্জীববাবু ব্যক্তিগত কাজের জন্য নৌকাঘাট দিয়ে না ফিরে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। ঘটনার সময় প্রচণ্ড বৃষ্টি হচ্ছিল। শেলি ‘রেন কোট’ পড়ে বাবার পিছনে বসেছিল। তার পিঠে ব্যাগ ছিল। দার্জিলিং মোড় লাগোয়া এলাকায় যানজট ছিল। তা এড়িয়ে বার হওয়ার সময় পিছন থেকে একটি ট্রাক সঞ্জীববাবুর বাইকে ধাক্কা মারে। বাবা ও মেয়ে দু’জনেই গাড়ি থেকে ছিটকে পড়ে। শেলির চোট গুরুতর ছিল। বাসিন্দারা দু’জনকে নিয়ে প্রধাননগরের একটি নার্সিংহোমে যান। সেখানে চিকিৎসকরা শেলিকে মৃত ঘোষণা করেন। সঞ্জীববাবুকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়। তিনি ওই নার্সিংহোমেরই কর্মী। ওই ঘটনার কথা এ দিন স্কুলে জানাজানি হলে শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে শোকের পরিবেশ তৈরি হয়। ঘটনার পর থেকেই শেলির বাড়িতে কান্নায় রোল। মা দীপাঞ্জলী দেবী, দিদি পূজা বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছেন। মৃতার কাকা রানা নিয়োগী আঠারখাই গ্রাম পঞ্চায়েতের কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্য। তিনি বলেন, “কিছুই ভাবতেই পারছি না। কি যে হল! দাদা আমাকে ফোন করে দুর্ঘটনার কথা জানায়। শেলিকে নার্সিংহোমে নিয়েও কিছু করা যায়নি।” গার্ডিয়ান ফোরাম অফ নর্থ বেঙ্গলের সভাপতি সন্দীপন ভট্টাচার্য ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “ওই এলাকায় বালি-পাথর বোঝাই ট্রাক-সহ বিভিন্ন গাড়ির দৌরাত্ম্য বেড়ে গিয়েছে। বেপরোয়া ভাবে ওই গাড়িগুলি চলাচল করার জন্য মাঝে মধ্যেই দুর্ঘটনা ঘটছে। গাড়িগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন। আমরা মহকুমাশাসককে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানাব।” |
|
|
|
|
|