|
|
|
|
সন্ধ্যায় দুষ্কৃতী রাজে ক্ষোভ |
অনির্বাণ রায় • জলপাইগুড়ি |
সন্ধ্যা নামলেই কলকাতা হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চের প্রস্তাবিত অস্থায়ী ভবনের দেওয়ালের পাশ নজর গেলে চমকে ওঠেন জলপাইগুড়ির বাসিন্দাদের অনেকেই। কারণ, জলপাইগুড়ি টাউন স্টেশনের মূল গেটের আগে পর্যন্ত জমাট অন্ধকারে বসে মদের আসর। স্টেশনের পাশেই বাজার চত্বর পুরোপুরি সুনসান। দেশি মদের স্পিরিট এবং গাঁজার গন্ধে ভরপুর চারদিক। স্টেশন চত্বর থেকে দু নম্বর ঘুমটি পর্যন্ত্য রাস্তার দু ধারে নেশার আড্ডার সংখ্যা খুব কম নয় বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। কয়েকবার পুলিশ অভিযান হলে ছবিটা বদলায় না। বিষয়টি নিয়ে পুরসভার তরফে পুলিশ-প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। এলাকায় স্থায়ী পুলিশ পিকেট বসানোর আর্জিও জানানো হবে বলে পুরসভার চেয়ারম্যান জানিয়েছেন। পাশাপাশি, পুলিশ সুপারকে পুরসভার তরফে চিঠি পাঠানো হবে। পুর চেয়ারম্যান মোহন বসু বলেন, “সন্ধ্যার পরে স্টেশন চত্বর সত্যিই উদ্বেগজনক। স্থানীয় বাসিন্দারা আমাকে বিষয়টি বারবার জানিয়েছেন। আমিও জানি। পুরসভার তরফে একাধিকবার বিষয়টি পুলিশ প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। আবার পুলিশ সুপারকে চিঠি লিখব।” |
|
ছবি: সন্দীপ পাল। |
জলপাইগুড়ি পুলিশ সুপার সুগত সেন বলেন, “পুলিশ পিকেট বসানোর বিষয়টি দেখছি। তবে আমরা আশা করব স্থায়ী পুলিশ পিকেট বসানোর জন্য যে পরিকাঠামো প্রয়োজন তার ব্যবস্থা করা হবে। ততদিন পর্যন্ত মোবাইল ভ্যানের সংখ্যা বাড়ানো যেতে পারে। আগে নির্দিষ্ট অভিযোগগুলি জানা দরকার।” এখানেই শেষ নয়, স্টেশন লাগোয়া এলাকায় নেশার আসরের দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্যের ভয়ে রিকশা চালকেরাও থাকতে চান না। সন্ধ্যার পরে রিকশাও মেলে না। দোকানপাটও বন্ধ হয়ে যায় বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ। স্টেশনের সামনে রিকশা না পেয়ে রাতের ট্রেনে আসা যাত্রীদের নাকাল হতে হয়। মহিলা যাত্রীদের উদ্দেশ্যে মদপ্যদের কটূুক্তির অভিযোগও পুরোনো নয়। এলাকায় অবৈধ কাজকর্ম বন্ধ করতে পুরসভা সম্প্রতি বেশ কিছু আলো বসায়। তার পরেও সেই ছবি খুব একটা যে পাল্টায়নি তা সম্প্রতি পুর চেয়ারম্যান মোহন বসুর সামনে তুলে ধরেন এলাকার বাসিন্দারা। কলকাতা থেকে আসা সুপারফাস্ট ট্রেন সপ্তাহে তিনদিন রাতে জলপাইগুড়ি টাউন স্টেশনে এসে পৌঁছয়। প্ল্যাটফর্ম থেকে বার হয়েই ট্রেনের যাত্রীদের অস্বস্তিকর পরিবেশের মুখোমুখি হতে হয়। শহরের প্রবীণ আইনজীবী মিহির বন্দোপাধ্যায় বলেন, “স্টেশন চত্বর ও লাগোয়া এলাকা জুড়ে অবৈধ কাজকর্ম চলছে। রাতে ট্রেনে ফিরে স্টেশন চত্বরে কোনও রিকশা পাইনি। প্রকাশ্যেই এমন সব অবৈধ কাজকর্ম হয় যে শিউরে উঠি। স্টেশন বাজার বা এলাকা সকাল থেকে বিকেল গমগম করে। সন্ধ্যার পরে এমন আতঙ্কের পরিবেশ হবে কেন?” স্টেশন বাজারের ব্যবসায়ীরা ক্ষোভের সঙ্গে জানান, তাঁরা নাম প্রকাশ না-করে পুলিশ-প্রশাসনকে বহু বার জানিয়েছেন। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি। নিত্যযাত্রীদের কয়েক জনের আক্ষেপ, “পুলিশি অভিযান হলে দু’-চার দিন পরিস্থিতি ঠিক থাকে। তার পরেই অবস্থা আগের মতো হয়ে যায়। সন্ধ্যার পরে প্রকাশ্যেই মদ বিক্রি হয়। দোকান খোলা থাকলে মদ্যপ সমাজবিরোধীরা নেশার টাকা দাবি করে। সে জন্য আমরা অনেকেই দোকান বন্ধ করতে বাধ্য হই।” |
|
|
|
|
|