|
|
|
|
বার্তা মমতাকে |
উত্তরপ্রদেশে মুলায়মও কংগ্রেসের নিশানায় |
অনমিত্র সেনগুপ্ত • নয়াদিল্লি |
তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গ ত্যাগ করে মুলায়ম সিংহ যাদব ইউপিএ-র রাষ্ট্রপতি প্রার্থী প্রণব মুখোপাধ্যায়কে সমর্থন করলেও উত্তরপ্রদেশের রাজনীতিতে সমাজবাদী পার্টিকে রেয়াত করতে কোনও ভাবেই রাজি নয় কংগ্রেস। বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়েছে কংগ্রেস মুখপাত্র রশিদ আলভির মন্তব্যে। গত কাল আলভি উত্তরপ্রদেশের মোরাদাবাদে এক সভায় মুলায়ম সিংহকে বিজেপির ‘চর’ বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, “মুলায়ম বিজেপির ইশারায় চলেন। উনি আসলে বিজেপির চর।”
কংগ্রেস অবশ্য প্রকাশ্যে ওই মন্তব্যকে ‘আলভির নিজস্ব মত’ বলে দূরত্ব তৈরির কৌশল নিয়েছে, কিন্তু দলীয় সূত্রের খবর, উত্তরপ্রদেশে পুর ভোটের মুখে চিত্রনাট্য মেনেই নিশানা করা হয়েছে সপা-র শীর্ষ নেতাকে। এই ভোটে ভাল ফল করতে মরিয়া কংগ্রেস। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনকে ঘিরে সপা ও কংগ্রেসের মধ্যে তৈরি হওয়া জোট যে সাময়িক, সে কথাই এখন নিজের ভোটারদের কাছে তুলে ধরতে চাইছে কংগ্রেস। তাই আলভির এই মন্তব্য মোটেই আলটপকা নয় বলে মনে করা হচ্ছে। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে সমর্থন পেলেও রাজ্য রাজনীতির প্রশ্নে কংগ্রেস যে উত্তরপ্রদেশে অখিলেশ-মুলায়ম সরকারকে ছেড়ে কথা বলবে না, সেই বার্তা দিতে চেয়েছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব।
তবে মুলায়মের সমালোচনার মধ্যে দিয়ে কংগ্রেস পরোক্ষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও বার্তা দিতে চেয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। তা হল, এ যাত্রায় মুলায়ম সরকারের পাশে থাকলেও শরিক হিসাবে তৃণমূলকে হারাতে রাজি নয় কংগ্রেস। কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের একাংশ চায় আগামী দু’বছর সরকারের সঙ্গেই থাকুক তৃণমূল। তাই প্রণব প্রশ্নে মমতার বিরোধিতা থাকলেও, কংগ্রেস শেষ পর্যন্ত তৃণমূলকে পাশে পাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কংগ্রেস নেতৃত্বের যুক্তি, শরিক হিসাবে মুলায়মের থেকে মমতা ভরসাযোগ্য। নীতির প্রশ্নে বা পশ্চিমবঙ্গের স্বার্থে মমতা কেন্দ্রের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়লেও সেখানে ব্যক্তিগত স্বার্থ বড় হয়ে ওঠে না। মুলায়ম কিন্তু বিভিন্ন বিষয়ে সরকারকে সমর্থন করার প্রতিদানে পাল্টা দরদাম করতে পিছপা হন না।
আলভির মন্তব্যের পরে আজ সকাল থেকে কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বকে আক্রমণ শানায় সমাজবাদী পার্টিও। রশিদের ওই মন্তব্যের জন্য কংগ্রেসের ক্ষমা প্রার্থনার দাবি করেছেন সপা-র মুখপাত্র শহিদ সিদ্দিকি। এই আক্রমণের মাধ্যমে মমতাকেও সুকৌশলে বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করেছে মুলায়ম শিবির। আগামী দিনে কংগ্রেসকে এক জোটে আক্রমণে করতে তৃণমূলকে পাশে পেতে চায় সপা। এই জন্য মুলায়মের নির্দেশে মমতার সঙ্গে সম্পর্ক রাখার ভার দেওয়া হয়েছে কিরণময় নন্দকে। আজ সপা নেতৃত্ব অভিযোগ করেছেন, শীর্ষ নেতৃত্বের অনুমতি নিয়েই রশিদ আলভি ওই মন্তব্য করেছেন। শহিদ সিদ্দিকির অভিযোগ, “শীর্ষ নেতৃত্বের অনুমতি ছাড়া আলভি ওই মন্তব্য করে থাকলে কংগ্রেস ব্যবস্থা নিক।” তবে সপা-র এই অভিযোগ মানতে রাজি নয় কংগ্রেস। দলের মুখপাত্র জনার্দন দ্বিবেদীর বক্তব্য, “আলভির মন্তব্য দল সমর্থন করে না। ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলিকে এক জোট করার চেষ্টায় কংগ্রেস সর্বদা সচেষ্ট।” তবে আলভির ওই আক্রমণ থেকেই স্পষ্ট, দুই শিবিরের বিভাজন রেখা আগামী দিনে আরও স্পষ্ট হয়ে উঠবে। যা তৃণমূলের পক্ষে স্বস্তির কারণ হয়ে উঠতে পারে। |
|
|
|
|
|