সরব কৃষিনীতি নিয়ে
বুদ্ধদেব-মমতা, কাউকেই রেয়াত করলেন না রেজ্জাক
ভোটে জেতার পরে তিনি বলেছিলেন, এ বার বিধানসভায় কারও হুকুমের তোয়াক্কা করবেন না। ‘খোলা হাতে ব্যাট’ করবেন। বুধবার বিধানসভায় কৃষি বাজেট নিয়ে বিতর্কে সিপিএমের কৃষক নেতা রেজ্জাক মোল্লাকে সেই ভূমিকাতেই দেখা গেল। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য থেকে শুরু করে বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়বিধানসভার অন্দরে কাউকেই রেয়াত করলেন না তিনি।
রেজ্জাকের প্রথম ‘বাউন্ডারি’ নিজের দলের নেতা তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে। তবে তা বুদ্ধবাবুর নাম না করে। রেজ্জাকের কথায়, “অনেক পণ্ডিতের ধারণা, শিল্প না হলে কিছুই হবে না। কিন্তু খাবার না জুটলে শিল্প দিয়ে, সোনা-দানা দিয়ে কী হবে?” বুদ্ধবাবুদের শিল্পনীতিকে এক হাত নিয়ে রেজ্জাক বলেন, “কৃষি আমাদের ভিত্তি, শিল্প আমাদের ভবিষ্যৎএই ভাবনা ভণ্ডুল হয়ে গিয়েছে।” পাশাপাশিই বর্তমান সরকারের প্রতি রেজ্জাকের কটাক্ষ, “আপনারা বলেছিলেন, কৃষি আমাদের চেতনা, শিল্প আমাদের ভাবনা। সেই ভাবনাও গোলমাল হয়ে যাচ্ছে।” রেজ্জাক জানান, ঘরবাড়ি-রাস্তা-শিল্প তৈরির জন্য প্রতি বছর রাজ্যে ১৫ হাজার একর জমি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। জমি বাড়ছেও না। কিন্তু ২০১৬-১৭ সালে রাজ্যে খাদ্যের চাহিদা পৌঁছে যাবে ১৮৪.৬১ লক্ষ মেট্রিক টনে। সুতরাং, সেচের এলাকা বাড়াতে হবে। এক ফসলি জমিকে তিন ফসলি করতে হবে। না হলে খাদ্যের চাহিদা মেটানো যাবে না। এই প্রেক্ষিতেই মমতার প্রতি রেজ্জাকের ‘পরামর্শ’, “মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, ইংল্যান্ড হবে, সুইৎজারল্যান্ড হবে! তিনি ওই সব একটু কম ভাবুন। আগে গ্রাম বাংলাকে রূপসী বাংলা করুন।”
এ দিন কৃষি বাজেটের জবাবি ভাষণে কৃষিমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য সরকারের বিরুদ্ধে ওঠা গমবীজ কেলেঙ্কারির অভিযোগ প্রকারান্তরে মেনে নিয়েছেন। কৃষিমন্ত্রী বলেন, “বিরোধীরা গমবীজ কেলেঙ্কারির অভিযোগ করেছেন। এ কথা ঠিক। যাঁরা গমবীজ সরবরাহ করেছেন, তাঁরা সরকারকে ঠকিয়েছেন। কৃষকদের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন।” মন্ত্রী জানান, যে সংস্থা গমবীজ সরবরাহ করেছে, তাদের বীজের দাম দেওয়া হয়নি। বীজের নমুনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে চূড়ান্ত রিপোর্ট এখনও আসেনি। বীজ সরবরাহকারী সংস্থা আদালতে মামলা করেছে। ফলে এখনও তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি। গমবীজ কেলেঙ্কারি নিয়ে বিধানসভায় অভিযোগ তুলেছিলেন সিপিআই বিধায়ক আনন্দময় মণ্ডল ও সিপিএমের চৌধুরী মহম্মদ হিদায়েতুল্লা। তাঁদের অভিযোগ, বর্তমান শাসকের আমলে গমবীজ কেলেঙ্কারি হয়েছে। যে গমবীজ সরবরাহ করা হয়েছিল, তা থেকে অঙ্কুর বের হয়নি।
বাজেট বক্তৃতায় অংশ নিয়ে ফব বিধায়ক পরেশ অধিকারী অভিযোগ করেন, রাজ্য নানা উৎসবে কোটি কোটি টাকা খরচ করছে। অথচ, টাকার অভাবে গত তিন-চার মাস যাবৎ কৃষকরা পেনশন পাচ্ছেন না। আরএসপি বিধায়ক সুভাষ নস্কর বলেন, মুখ্যমন্ত্রী বিষমদে মৃতদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা সাহায্যের কথা ঘোষণা করেছেন। তা হলে কৃষিপণ্যের ন্যায্য দাম না পেয়ে যে সব চাষি আত্মহত্যা করেছেন, তাঁদের পরিবারকেও রাজ্য অর্থ সাহায্য করুক। কৃষিমন্ত্রী জানান, কৃষিপণ্যের দাম না পেয়ে কোনও কৃষক আত্মহত্যা করেননি। প্রতিটি কৃষক-আত্মহত্যার ঘটনার তদন্ত হচ্ছে। জেলাশাসকরা রিপোর্ট দিয়েছেন। তাতে জানা গিয়েছে, প্রতিটি আত্মহত্যার পিছনে অন্য কারণ রয়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.