|
|
|
|
স্বামী-মৃত্যুর ৩ বছর পরেও ক্ষতিপূরণ পাননি ফিরোজা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
২০০৯-এর লোকসভা নির্বাচনে হোমগার্ডের কাজে গিয়ে পথ-দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল শেখ সফিউল ইসলামের। তিন বছর পরেও স্বামীর মৃত্যুর জন্য কোনও ক্ষতিপূরণ পাননি বিধবা ফিরোজা বেওয়া। স্বামীর মৃত্যুর যন্ত্রণা নিয়েই প্রশাসনিক কর্তাদের দোরে-দোরে ঘুরেছেন ফিরোজা। কিন্তু ‘হচ্ছে-হবে’র মতো কিছু আশ্বাস ছাড়া কিছুই মেলেনি। ফিরোজার আক্ষেপ, “বামফ্রন্ট সরকারের আমলেও ক্ষতিপূরণ পাইনি। পরিবর্তনের সরকারের আমলেও যে-কে-সেই। এখান-সেখান শুধু ঘুরে মরছি। আমাদের মতো গরিবদের জন্যে কি কেউ নেই!” পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল শহরের গম্ভীরনগর এলাকায় থাকতেন সফিউলরা। গরিব সফিউল কিছু উপার্জনের আশায় ২০০৯-এর লোকসভা নির্বাচনে হোমগার্ডের কাজে গিয়েছিলেন। তাঁর ডিউটি পড়েছিল গোপীবল্লভপুরে। সেখানেই পথ-দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু হয়। এ ক্ষেত্রে মৃতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। ক্ষতিপূরণের অর্থ পাওয়ার জন্যে প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে আবেদনও জানিয়েছেন ফিরোজা। এমনকী মুখ্যমন্ত্রীকেও চিঠি দিয়েছেন। কিন্তু কাজ হয়নি। হন্যে হয়ে ঘুরতে-ঘুরতেই পেরিয়ে গেল তিন-তিনটে বছর। স্বামীর মৃত্যুর পর ফিরোজা ফিরে গিয়েছেন চন্দ্রকোনার ইন্দা গ্রামে বাপের বাড়িতে। বাবা শেখ মালেকও হতদরিদ্র। মজুর খেটে সংসার চালান। মালেকের কথায়, “আমারও তো বয়স হয়েছে। ক’দিনই বা বাঁচব। তবু যতদিন বেঁচে রয়েছি খাটাখাটুনি করে না হয় সংসার চালিয়ে দেব। কিন্তু পরে কী হবে? মেয়েটার কী হবে! সরকারের কি কোনও মায়াদয়া নেই?” জেলা-প্রশাসন সূত্রে অবশ্য জানা গিয়েছে, ক্ষতিপূরণের জন্য জেলা থেকে যাবতীয় নথি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে কলকাতায়, স্বরাষ্ট্র দফতরকে। স্বরাষ্ট্র দফতর ক্ষতিপূরণের অর্থ মঞ্জুর করলে উপযুক্ত ব্যক্তির হাতে তা তুলে দেওয়া হবে। কিন্তু এত দেরি কেন? প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলা থেকে স্বরাষ্ট্র দফতরে নথিপত্র পাঠাতে যেমন কিছুটা দেরি হয়েছিল, তেমন ভাবেই হয়তো বিভিন্ন আধিকারিকের টেবিলে ফাইল ঘুরছে। চিঠিচাপাটি হচ্ছে। কিন্তু সুরাহা মিলছে না। বিধবা ফিরোজার প্রশ্ন, “মুখ্যমন্ত্রী তো গরিব-দরদি বলে শুনেছি। তাঁকেও তো চিঠি দিয়েছিলাম। তিনি কেন নীরব?” পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার সুনীল চৌধুরীর অবশ্য আশ্বাস, “বিস্তারিত খোঁজ নেব। তার পরেই দ্রুত উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।” |
|
|
|
|
|