গোল লাইন বিতর্ক ১: অতিরিক্ত সহকারী ০।
ইংল্যান্ড বনাম ইউক্রেনের ম্যাচটাকে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে এই ভাবে। গোল লাইন টেকনোলজির দরকার আছে কি না, সেই বিতর্ক উস্কে দিয়ে গেল ম্যাচ। যার ফলে ফিফা প্রেসিডেন্ট শেপ ব্লাটারকে টুইট করে বলতে হয়েছে, “গত রাতের ম্যাচটার পরে মনে হচ্ছে জিএলটি (গোললাইন টেকনোলজি) কোনও বিকল্প নয়। প্রয়োজনীয় ব্যাপার।”
আগামী ৫ জুলাই ফিফা ঠিক করবে, জিএলটি প্রথা চালু হবে কি না। আপাতত দুটো নিয়ম চালু রয়েছে বল গোল লাইন ক্রস করেছে কি না দেখার জন্য। একটা ক্রিকেট ও টেনিসের মতো হক আই। যা গত মাসে ইংল্যান্ড-বেলজিয়াম ম্যাচে চালু ছিল। দুই, গোলরেফ সিস্টেম। যা ডেনমার্কের লিগে দেখা হয়েছে।
কী হয়েছিল ইংল্যান্ড বনাম ইউক্রেন ম্যাচটায়? ৬২ মিনিটে ইউক্রেনের স্ট্রাইকার মার্কো দেভিচের শট গোলে ঢোকার পরে জন টেরি কোনওমতে সেটা বের করে দেন। হাঙ্গারিয়ান রেফারি কাসাই গোল দেননি। টিভি রিপ্লেতে দেখা গিয়েছে, বল গোল লাইন ক্রস করে গিয়েছিল। গোলটা দেওয়া হলেও অবশ্য ইউক্রেনের কোয়ার্টার ফাইনালে যেত না। স্কোর ১-১ হলেও ইউক্রেন ছিটকে যেত। কিন্তু গোলটা দেওয়া হলে ইউক্রেনের আরও গোল করার সম্ভাবনা ছিল। শেষ আধ ঘণ্টা ইংল্যান্ডের টেরি, লেসকট এবং কোলেরা কোনওমতে রক্ষণ করেছেন। ইউক্রেন সমর্থকের চিৎকারে ইংল্যান্ড দিশেহারা হয়ে পড়েছিল।
এই ইউরোতেই এ ধরনের গোল বিতর্ক সামলানোর জন্য দু’দিকের গোলপোস্টের পাশে থাকছেন অতিরিক্ত সহকারী রেফারি। তাঁদেরও চোখে পড়েনি গোল। ম্যাচের পরে উত্তেজিত ইউক্রেন কোচ ওলেগ ব্লোখিন মন্তব্য করেছেন, “মাঠে পাঁচ জন রেফারি ছিল। বলটা ৫০ সেন্টিমিটার ভিতরে ঢুকে গেছিল। তা হলে পাঁচ রেফারির কী দরকার?” ম্যাচের মধ্যেই তিনি তর্ক জুড়ে দেন চতুর্থ রেফারির সঙ্গে।
ইউক্রেনের অধিনায়ক শেভচেঙ্কো শুরুতে নামেননি চোটের জন্য। যখন ঘটনাটা ঘটে, তিনি তখন ওয়ার্ম আপ করছিলেন নামার জন্য। তিনি পরে বলেন, “গোলটা না দেওয়ায় আমাদের পরিকল্পনাটা পুরো পাল্টে গেল। যদি ওটা দেওয়া হত, তা হলে ম্যাচটা পুরো পাল্টে যেতে পারত।” আট মিনিট বাদে দেভিচের বদলেই নামেন শেভচেঙ্কো। ম্যাচটা হেরে বিদায়ের পরে তিনি অবসর নিয়ে নেন আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে। ইউক্রেনের নামী ডিফেন্ডার ইয়ারোস্লাভ রাকিতস্কি মন্তব্য করেন, “দেভিচ ভেবেছিল, ওটা গোল। রেফারি প্রচুর ভুল করেছে। খারাপ লাগছে, আমরা কোয়ার্টার ফাইনালে যেতে পারলাম না বলে।” গত বিশ্বকাপে ঠিক এমন ঘটনাতেই ভুগেছিল ইংল্যান্ড। জার্মানির ম্যাচে ইংল্যান্ডের ল্যাম্পার্ডের শট গোলের ভিতরে গিয়েও ফিরে আসে। রেফারি গোল দেননি। সেই ঘটনার কথা তুলে ইংল্যান্ড অধিনায়ক স্টিভন জেরার বলেন, “সফল হতে হলে কিছু ভাগ্য দরকার। দু’বছর আগে ল্যাম্পার্ডের শটের সময় আমরা ভাগ্যহীন ছিলাম। আমাদের ব্যাগপত্তর গুছিয়ে ফেরত যেতে হয়েছিল।” ইংল্যান্ড কিপার হার্ট মন্তব্য করেছেন, “রেফারি মাঠে ছিল সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য। উনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমরা ১-০ জিতেছি।” |