জর্জ বেস্টের সঙ্গে এক বার খেলার সৌভাগ্য হয়েছিল আমার। সর্বকালের সেরা ফুটবলারদের এক জন ছিলেন বেস্ট। ১৯৮০-র শুরুর দিকে তিনি এক বার বর্নমাউথের হয়ে এক বার তিনি ব্র্যাডফোর্ডে খেলতে এসেছিলেন।
এখনও মনে আছে আমরা সবাই মিলে কী রকম দল বেঁধে গিয়েছিলাম বেস্টের সঙ্গে কথা বলতে। কেরিয়ারের একেবারে শেষ দিকে তখন তিনি। কিন্তু প্র্যাক্টিস ছাড়েননি। তখনও এমন সব গোল করছেন, সাধারণ ফুটবলাররা ভাবতেই পারবে না! তখন প্রায় তিরিশের শেষ দিকে বয়স বেস্টের। কিন্তু মস্তিষ্কটা একই রকম ধারালো।
গত কাল ইউরোতে ইংল্যান্ডের খেলা দেখার পর আমার শুধু মনে হচ্ছিল, কোয়ার্টার ফাইনালে ইতালির বিরুদ্ধে রুনির পাশে যদি ওদের একটা জর্জ বেস্ট থাকত! ইংল্যান্ডের কাছে এটা অত্যন্ত কঠিন একটা ম্যাচ হতে যাচ্ছে কারণ ইতালি সর্বশক্তি দিয়ে প্রতিরোধ করবে। রুনি নির্বাসনের পর ফিরে এসেই গোল করলেও ওকে আমার খুব রুক্ষ, এলোমেলো লেগেছে। রবিবার ইতালির মতো প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ওই খেলা দিয়ে হবে না। বরং ম্যানেজার রয় হজসনের সবথেকে দুশ্চিন্তার জায়গা হতে যাচ্ছে রুনি। |
রুনি: গোল করেও স্বস্তি দিতে পারছেন না। |
মঙ্গলবার রাতের ম্যাচের কথায় ফিরি। মনে হচ্ছিল, ইংল্যান্ডের প্লেয়াররা সব লটারির টিকিট কেটে মাঠে নামতে পারত! ওদের যা ভাগ্য ছিল দেখলাম মঙ্গলবার রাতে, ওরা জ্যাকপট জিততে পারত। মার্কো ডেভিচের গোলটা অন্যায় ভাবে বাতিল করা হল। পরিষ্কার দেখা গিয়েছে, বলটা গোললাইন পেরিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ওই গোলটা যদি বাদও দিই, আর কোনও গোল যে ইংল্যান্ড খায়নি সেটাও কম বিস্ময়কর নয়। বলতেই হচ্ছে, মঙ্গলবার রাতে ‘লেডি লাক’ ওদের সঙ্গে ছিল। আবার এটাও ঠিক যে, যে কোনও স্পোর্টসম্যানের জীবনে ভাগ্য খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা দিক। তাই ইংল্যান্ডকে একতরফা গালাগাল দেওয়াটাও ঠিক হবে না।
২০১১ থেকে যদি ধরা যায় তা হলে ইংল্যান্ড মোট ৮টা আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছে মঙ্গলবার রাতেরটা নিয়ে। তার মধ্যে পাঁচটা ওরা জিতেছে ১-০ গোলে। যার মানে হচ্ছে, ১-০ গোলে জেতাটাও জেতা আর ইংল্যান্ড নিশ্চয়ই এই কথাটা সবথেকে বেশি করে এখন মনে রাখবে। মনে করবে যে, ইতালিকে ১-০ হারাতে পারলেই চলবে।
আর একটা কথা বলতে চাই। আমি ইংরেজ হতে পারি। কিন্তু ইউক্রেনের কথা ভেবে খারাপই লাগছে। আয়োজক দেশ হিসেবে নিশ্চয়ই এটা খুব হতাশাজনক পরিণতি যে, তাদের একটা নায্য গোল বাতিল হয়ে গেল আর টিমটা টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গেল। আমার মনে হয় প্রযুক্তি নিয়ে তর্কটা আবার ফুটবলে ফিরে আসা উচিত। এটা আরও বলছি তার কারণ হচ্ছে, টিভি-তে কোটি কোটি দর্শক দেখেছে ওটা গোল ছিল। ইউক্রেন কোচ যে বললেন, “পাঁচ জন রেফারি মিলেও যদি একটা গোল দেখতে না পায়,” মনে হয় ঠিকই বললেন। আমার মনে হচ্ছে, ফুটবলে প্রযুক্তি ঢুকে পড়ার সময় এসে গিয়েছে! |