ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো!
পর্তুগাল সংক্রান্ত যাবতীয় আলোচনার কেন্দ্রে এই একটাই নাম। বিশেষ করে নেদারল্যান্ডস ম্যাচে জোড়া গোল করে ওই রকম মারকাটারি ফুটবল উপহার দেওয়ায়। কাল, বৃহস্পতিবার ইউরো কোয়ার্টারে রোনাল্ডোর জন্যই পর্তুগাল-জ্বরে কাঁপছে প্রতিপক্ষ চেক প্রজাতন্ত্র। যা স্পষ্ট তাদের অসাধারণ গোলকিপার পের চেকের কথাতেও। যুদ্ধের ২৪ ঘণ্টা আগে তিনি স্পষ্ট বলে দিচ্ছেন, “বিশ্বের প্রথম দশে থাকা একটা টিমের সঙ্গে খেলতে হবে। রোনাল্ডো তো আছেই। এমনিতেও ওদের দলে ভরপুর ব্যক্তিত্ব। অসাধারণ সব ফুটবলার। অভিজ্ঞতারও অভাব নেই। ডাচদের সঙ্গে ওই রকম দুরন্ত ফুটবলই তার সবথেকে বড় প্রমাণ। এটা মানতেই হবে, সত্যিকারের শক্তিশালী দল বলতে যা বোঝায় পর্তুগাল হচ্ছে ঠিক তাই।”
পের চেক টিম-পর্তুগালের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। শুধু রোনাল্ডো নয়। হয়তো নিজেদের আন্ডারডগ ভেবেই মাঠে নামতে চান। যাতে কোনও রকম মানসিক চাপে না পড়তে হয়, খোলামেলা ফুটবলটা খেলা যায়। আর পর্তুগাল শিবিরের একমাত্র লক্ষ্য হয়তো রোনাল্ডো-ভীতি আরও বেশি করে প্রতিপক্ষের উপর চাপিয়ে দেওয়া। অন্তত পর্তুগিজ মিডফিল্ডার রাউল মেইরেলেস কথাবার্তার ধরন অনেকটা সে রকমই। তাঁর ক্যাপ্টেন কেন মহান সেটা প্রমাণ করতে যেন যাবতীয় চেষ্টা। “আমি যত পেশাদার ফুটবলার দেখেছি তাদের মধ্যে ক্রিশ্চিয়ানো এক নম্বরে থাকবে। এমনকী প্রতিটি ট্রেনিং সেশনেও ও নিজেকে উজাড় করে দেয়। মাঠে ও-ই আমাদের নেতা, ও-ই আমাদের সব। ওর মতো জেতার বাসনা বোধহয় আর একজনেরও নেই। শেষ ম্যাচে দুটো গোল করেছে। আগের ম্যাচটায় গোল না পেলেও ওর কাছ থেকে সব রকম সাহায্য পেয়েছি। দেখবেন চেক ম্যাচেও ঠিক সেটাই হতে যাচ্ছে।” |
অনুশীলনে পর্তুগাল অধিনায়ক। ছবি: রয়টার্স |
এমনিতে শেষ পাঁচটি চ্যাম্পিয়নশিপে দু’দেশের দেখা হয়েছে তিন বার। এমন নয় যে চেকদের পক্ষে বলার মতো কিছুই নেই। বরং উল্টোটা সত্যি। আর দু’দেশই জিতেছে একবার করে। সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ জয়টা ছিল ইউরো ছিয়ানব্বইয়ে। ফাইনালে ওঠার পথে এই পর্তুগালকে কোয়ার্টার ফাইনালেই হারিয়েছিল চেকরা। ফারাক একটাই। সেই পর্তুগাল দলে ছিলেন না রোনাল্ডো। যদিও বলা হচ্ছে, এই একজনের উপর বড্ড বেশি নির্ভর করে থাকছে পাওলো বেন্তোর পর্তুগাল। বলা হচ্ছে মানে, সমালোচনাই হচ্ছে। কিন্তু মজার কথা, এ সব সমালোচনা উড়িয়ে রোনাল্ডো-বন্দনায় মুখর এ বারের পর্তুগিজ-ব্রিগেড। তাঁদের বক্তব্যের অন্তঃসার একটাই-- সবই ভুলভাল কথা, ডাচদের বিরুদ্ধে রোনাল্ডো যেটা করেছে সেটা সমালোচকদের মুখে ঝামা ঘষার পক্ষে যথেষ্ট।
রোনাল্ডোর গোল পাওয়ার মতোই পর্তুগালের জন্য ভাল খবর আছে। রিয়াল মাদ্রিদের আহত সেন্টার ব্যাক পেপে মঙ্গলবার ট্রেনিং করেছেন। ধরে নেওয়া হচ্ছে, কাল তাঁকে প্রথম এগারোতেই দেখা যাবে। ভাল খবর রয়েছে চেক শিবিরেও। প্রাগে চিকিৎসা করিয়ে এ দিন হাল্কা অনুশীলন করলেন চোট পাওয়া অধিনায়ক টমাস রসিস্কি। টিম ম্যানেজার অবশ্য এখনও নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না, কাল রসিস্কি খেলবেন কিনা। চেক কোচ মাইকেল বিলেক রসিস্কিকে নিয়ে বেশি ভাবতে নারাজ। তিনি মনে করছেন, শুরুতে রাশিয়ার কাছে বিশ্রী হার সত্ত্বেও তাঁর টিম ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এটাও মনে করাচ্ছেন, পর্তুগালও এই ইউরো শুরু করেছে জার্মানদের কাছে হেরে। পাশাপাশি পর্তুগাল কোচ বেন্তো কালকের ম্যাচে নিজেদের ফেভারিট ভাবতে চান না। “প্রতিপক্ষ চেক বলে আমরাই ফেভারিট ভাবার মতো মূর্খ নই। মোটেই ম্যাচটা সহজ হবে না। তবে এটাও ঘটনা, এখন পর্যন্ত আমরা ভালই খেলেছি। এই ধারাবাহিকতাটা ধরে রাখতে হবে। আর সেটা পারলে আমরা সেমিফাইনালে উঠতেও পারি।”
|
দু’দলের এগারো |
|
পর্তুগাল |
|
চেক প্রজাতন্ত্র |
|
|
• মোট পাস খেলেছে |
১২০৮ |
১৫২৬ |
• সফল পাস |
৭৭৫ |
১০৯১ |
• সাফল্যের হার |
৬৪% |
৭১% |
• মোট ক্রস |
৩৭ |
২৫ |
• সফল ক্রস |
৬ |
৬ |
• বল পজেশন |
৪৩% |
৫১% |
• গড় বল পজেশন |
২৫ মিনিট |
৩০ মিনিট |
• গোলে শট |
২৮ |
২০ |
• গোলের বাইরে শট |
২২ |
১১ |
• কর্নার |
২৪ |
১৫ |
• ফাউল করেছে |
৫৩ |
৬১ |
|