শিবপুর-কাণ্ড
অভিযুক্তদের বাড়ি ভাঙচুর, লুঠপাট
শিবপুরে পিটিয়ে ‘খুনের’ ঘটনায় অভিযুক্তদের বাড়িতে ঢুকে বড় বড় হাতুড়ি দিয়ে ভাঙচুর চালিয়ে জিনিসপত্র লুঠপাট করে বিক্রি করে দিল এলাকার লোকজন। অভিযোগ, মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার দুপুর পর্যন্ত টানা ১২ ঘণ্টা এই লুঠপাট চললেও ঘটনাস্থলের অল্প দূরে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশের পাহারদার ভ্যানের পুলিশকর্মীরা কোনও ব্যবস্থা নেননি।
বুধবার এই ঘটনা ঘটেছে হাওড়ার শিবপুরের মোল্লাপাড়ায়। এক বালতির বেশি জল চাওয়ায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মোল্লাপাড়ার বাসিন্দা, ১৮ বছরের যুবক সিরাজুদ্দিন মল্লিককে পিটিয়ে, ইট দিয়ে থেঁতলে খুন করার অভিযোগ ওঠে কয়েক জন প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে। পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্তেরা হল রবিউল হোসেন মোল্লা এবং তার দুই ছেলে রফিক মোল্লা ও রুহুল মোল্লা। তারা থাকে মৃত যুবক সিরাজ্জুদিনের বাড়ির কয়েকটা বাড়ি পরেই।
পুলিশ জানায়, ওই ঘটনায় এলাকায় তীব্র উত্তেজনা ছড়ায়। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে বাড়িতে চাবি দিয়ে সপরিবার পালায় অভিযুক্তেরা। এর পরে গভীর রাতে ওই বাড়িতে বড় বড় হাতুড়ি, শাবল, রড নিয়ে আক্রমণ করে কয়েকশো মানুষ। তালা ভেঙে বাড়ির ভিতরে ঢুকে ভাঙচুর শুরু হয়। ভাঙচুর হয় কিছু আসবাব। কিছু আসবাব কম দামে বিক্রিও করা হয় বলে জানায় পুলিশ।
অভিযুক্তদের বাড়িতে হানা। —নিজস্ব চিত্র
দেওয়াল ভেঙে খুলে নেওয়া হয় তিনতলা বাড়ির সমস্ত দরজা-জানলা। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, অভিযুক্তদের জামাকাপড় তৈরির ব্যবসা থাকায় বাড়িতে অনেক সেলাই মেশিন ছিল। আক্রমণকারীরা প্রায় সব ক’টি সেলাই মেশিন বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। চুরি করা হয় টিভি, ফ্রিজ-সহ অন্যান্য দামি জিনিস।
এ দিন দুপুরে মোল্লাপাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, একটি বড় পুকুরের পারে রবিউলদের তিনতলা বাড়ির সব ক’টি জানলা খুলে নেওয়া হয়েছে। ঘরে একটি জিনিস নেই। শ’তিনেক যুবক বিভিন্ন ঘরে ঢুকে ভাঙচুর করছে। কেউ বড় হাতুড়ি দিয়ে ছাদ ভাঙছে, তো কেউ ছাদের আলসে। কেউ মালপত্র নিয়ে রওনা দিচ্ছে।
এলাকার বাসিন্দা সুজাউদ্দিন মল্লিক বলেন, “কাল রাত থেকে ভাঙচুর চলছে। একটা ভাল ছেলেকে সামান্য কারণে খুন করল। এ মানা যায় না। যা হচ্ছে, তা মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত ক্ষোভ। কারও কিছু বলার নেই।”
ভাঙচুর যখন চলছে, তখন ঘটনাস্থল থেকে কিছু দূরেই মোল্লাপাড়ায় ঢোকার মুখে দাঁড়িয়ে হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটের ৫ নম্বর রেডিও ফ্লাইং স্কোয়াড। কয়েক জন পুলিশকর্মী গাড়িতে বসে। কয়েক জন বাইরে চেয়ারে বসে হাতপাখার হাওয়া খাচ্ছেন। ভাঙচুরের কথা বলতেই গাড়িতে বসা এক অফিসার বললেন, “কাল রাত থেকেই তো হচ্ছে। এখন প্রায় সব শেষ। আমরা সব জানি।”
পুলিশ সব জেনেও কিছু করেনি কেন? হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি (সদর) নিশাদ পারভেজ বলেন, “পুলিশ কেন ব্যবস্থা নেয়নি, তার তদন্ত হবে। পুলিশি অবহেলা প্রমাণ হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। খবরটি শুনেই শিবপুর থানার অফিসারকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে তাণ্ডবকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.