|
|
|
|
সঙ্কট সামলাতে বাজার থেকে ৭০০ কোটি তুলবে ত্রিপুরা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • আগরতলা |
আর্থিক সঙ্কট থেকে মুক্তি পেতে আপাতত ত্রিপুরার বামফ্রন্ট সরকার বাজার থেকে অর্থ সংগ্রহ করতে শুরু করল। যোজনা কমিশন রাজ্য সরকারকে বাজার থেকে চলতি অর্থবর্ষে সর্বাধিক ৬৭৫ কোটি টাকা ঋণ সংগ্রহের অনুমতি দিয়েছে।
অনুমোদন পেলেও রাজ্যের অর্থমন্ত্রী বাদল চৌধুরীর অভিযোগ, ত্রয়োদশ অর্থ কমিশনের ‘বঞ্চনা’ সত্ত্বেও রাজ্য সরকার তার স্বাভাবিক কাজকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। রাজ্যে চালু বিভিন্ন আর্থিক, সামাজিক প্রকল্প যাতে বন্ধ না হয়ে যায়, সে দিকে লক্ষ্য রাখার পাশপাশি, সরকারি কর্মীদের মাস মাইনে, পেনশন ইত্যাদির টাকাও কোনও কোনও সময়ে এই ঋণের টাকা থেকে মেটাতে হয়। এ ছাড়া, গত আর্থিক বছরে যে সব ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের দেনা রয়ে গিয়েছে, সেগুলোও যতটা সম্ভব মিটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হবে এই ‘ঋণের টাকায়’। যদিও অর্থ দফতরের ভারপ্রাপ্ত, রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব কে ভি সত্যনারায়ণ বলেন, পরিকল্পিত খাতে ব্যয়ের জন্যই এই ঋণের টাকা কাজে লাগানো হবে। অন্য কোনও খাতে নয়।
ক্ষুদ্র সঞ্চয় প্রকল্প, ভবিষ্যনিধি প্রকল্প (জিপিএফ) প্রভৃতি থেকে কেন্দ্রীয় অনুমতি নিয়ে ঋণ নেওয়া যায়। কিন্তু বাদলবাবুর বক্তব্য, এ সব ক্ষেত্রে ঋণ নিলে পরিশোধের সময় কেন্দ্রের রাজ্যগুলিকে ‘মহাজনি কারবারের শিকার’ হতে হয়। কেন্দ্রীয় সরকার নিজে ওই সব প্রকল্পে যে টাকা সুদ দেয়, ঋণ পরিশোধের সময় প্রাপকদের তার থেকে বেশি পরিমাণ সুদ রাজ্যকে দিতে হয়। এ দিকে, শীর্ষ ব্যাঙ্কের মাধ্যমে বাজার থেকে ঋণ নেওয়া হলে সুদের পরিমাণ কিছুটা কম পড়ে। বাদলবাবুর বক্তব্য, বাৎসরিক ৫ থেকে ৭.৫ শতাংশের মধ্যে সুদের এই হার ঘোরাফেরা করে। সে কারণেই বাজার থেকে ঋণ নেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমতি চাওয়া হয়েছিল বলে বাদলবাবু জানান। তিনি আরও বলেন, বাজার থেকে এক হাজার কোটি টাকা তোলার ব্যাপারে কেন্দ্রের অনুমতি ত্রিপুরা সরকার চেয়েছিল। অর্থমন্ত্রীর অভিযোগ, ত্রিপুরাকে ‘চাপে’ রাখার জন্য এ ক্ষেত্রেও কেন্দ্রের নির্দেশে পরিমাণটা কমিয়ে সর্বাধিক ৬৭৫ কোটি টাকা করা হয়েছে।
বাজার থেকে ঋণ সংগ্রহ করার সরকারি সিদ্ধান্তকে অবশ্য কটাক্ষ করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা, কংগ্রেসের রতনলাল নাথ। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের নীতি চার্বাকপন্থী। ঋণ কর, ঘি খাও।” তাঁর বক্তব্য, রাজ্যে এই মুহূর্তে মাথাপিছু ঋণের বোঝা ২১,০০০ টাকা। সুদ ও আসল পরিশোধ বাবদ প্রতি দিন রাজ্য সরকারকে ২ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকা খরচ করতে হয়। ১৯৭২ থেকে ১৯৯৭, এই ২৫ বছরে রাজ্য ঋণ নিয়েছিল ৮৫০ কোটি টাকা। আর গত ১৪ বছরের বামফ্রন্ট সরকারের আমলে, ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় সাত হাজার কোটি টাকার মতো। ঋণের বোঝা চাপিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মতো ত্রিপুরাতেও বামফ্রন্ট সরকার রাজ্যকে ‘দেউলিয়া’ করে দিতে চাইছে বলে বিরোধী দলনেতার অভিযোগ। |
|
|
|
|
|