ভারতের অর্থনীতি নিয়ে সরকার ও শিল্পমহলের দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে আবার বড় পতন টাকার। বুধবার ১৯ পয়সা পড়ে ডলারে টাকা ফের নেমে এল ৫৬-র নীচে। বাজার বন্ধের সময়ে প্রতি ডলারের দাম দাঁড়ায় ৫৬.১৫ টাকা। যা গত প্রায় তিন সপ্তাহে সবচেয়ে কম। তবে শেয়ার বাজার অবশ্য এ দিন সামান্য হলেও বেড়েছে। যার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হল, মূল্যায়ন সংস্থা ফিচের হুঁশিয়ারির মুখে পড়েছে ব্যাঙ্ক-সহ যে ১২টি আর্থিক সংস্থা, সেগুলির শেয়ার দরও এ দিন ছিল ঊর্ধ্বমুখী। লগ্নিকারীরা জানিয়েছেন, এই মূল্যায়ন কাটছাঁট করা বা সে ব্যাপারে আগাম সতর্কতা জারি করা নিয়ে তাঁরা বীতশ্রদ্ধ। তাই ওই ধরনের রেটিংকে তাঁরা তেমন আমল দিচ্ছেন না।
এই নিয়ে চলতি সপ্তাহে পরপর তিন দিন পড়ে টাকা নেমে এল গত ৩০ মে-র পর সবচেয়ে নীচে। টাকার ইতিহাসেও যা দ্বিতীয় সর্বনিম্ন দর। প্রসঙ্গত, গত ৩০ মে বাজার বন্ধের সময়ে ডলারে টাকা ৫৬.২৩-তে নেমে নজির গড়ে। যদিও ৩১ মে দিনের এক সময়ের লেনদেনে তা নেমে যায় আরও নীচে ৫৬.৫২-এ। তবে বুধবার বাজার খোলার সময়ে ডলারে টাকা ছিল যথেষ্ট চাঙ্গা। প্রতি ডলারের দাম পৌঁছে যায় ৫৫.৯২ টাকায়। পরে রফতানিকারীদের ডলার বিক্রির জেরে টাকার দাম আরও বাড়ায় তা দাঁড়ায় ৫৫.৮২। শেয়ার বাজারের চাঙ্গা ভাবও টাকার দাম বাড়ায় ইন্ধন জোগায়।
আচমকাই বৈদেশিক মুদ্রার বাজারের চাকা ঘুরতে শুরু করে। পাল্লা ভারী হয় ডলারের। তেল আমদানিকারী সংস্থাগুলি বিপুল ভাবে ডলার কিনতে শুরু করায় পড়তে থাকে টাকা। পাশাপাশি, বিদেশি লগ্নিকারীরাও ডলারের চাহিদা বাড়িয়ে দেন।
প্রকৃতপক্ষে মার্কিন শীর্ষ ব্যাঙ্ক ফেডারেল রিজার্ভ আর্থিক উৎসাহ প্যাকেজ ঘোষণা করবে, এই আশায় তাঁরা ডলার কিনতে থাকেন। উল্লেখ্য, পরে বৈঠক শেষে আর্থিক উৎসাহ প্যাকেজের মেয়াদ বাড়ানোর কথাই ঘোষণা করে মার্কিন শীর্ষ ব্যাঙ্ক। সেই অনুসারে বাড়ানো বয়েছে তার ‘অপারেশন টুইস্ট’ কর্মসূচির মেয়াদ। যার অঙ্গ হিসেবে ২০১২ সাল পর্যন্ত ২৬,৭০০ কোটি ডলারের দীর্ঘ মেয়াদি সরকারি ঋণপত্র কিনে নেবে ফেডারেল রিজার্ভ। এ মাসেই ওই ঋণপত্রের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল। এখন তার মেয়াদ বাড়ায় অর্থনীতিতে কমবে সুদের হার। অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে আমেরিকার আর্থিক বৃদ্ধি ১.৯% থেকে টেনে তুলতেই এই সিদ্ধান্ত। |