প্রভাব পড়বে না, বলছে সব ব্যাঙ্ক |
ফিচ-এর কোপে স্টেট ব্যাঙ্ক-সহ ১২টি আর্থিক সংস্থা |
ভারতে টাকা ঢালার ঝুঁকি বাড়ছে বলে দু’দিন আগেই সতর্ক করেছে ফিচ। এ বার সেই একই পূর্বাভাসের মেঘে ঢাকা পড়ল দেশের ১২টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানও। ফলে, আগামী দিনে বিদেশ থেকে মূলধন সংগ্রহের জন্য আরও চড়া সুদ গুনতে হতে পারে স্টেট ব্যাঙ্ক, আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক-সহ ওই ১২টি সংস্থাকে। বিশেষত যেখানে অদূর ভবিষ্যতেই বিদেশের বাজার থেকে ২০০ কোটি ডলার তোলার কথা ভাবছে স্টেট ব্যাঙ্ক।
অবশ্য ব্যাঙ্কগুলির দাবি, বাস্তবে এর কোনও বিরূপ প্রভাব পড়বে না তাদের উপর। ফিচ-এর ‘ফতোয়া’ অগ্রাহ্য করে এ দিন বেড়েছে এদের অধিকাংশের শেয়ার দরও।
আসলে আন্তর্জাতিক মূল্যায়ন সংস্থাটির পক্ষ থেকে এই ঘোষণা স্রেফ সময়ের অপেক্ষা ছিল বলে মনে করছেন অনেকেই। তাঁরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, গত এপ্রিলে ভারতকে রেটিং ছাঁটাইয়ের হুঁশিয়ারি দেওয়ার দিন এই একই পথে হেঁটেছিল এসঅ্যান্ডপি-ও। দেশের ১১টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও তিন প্রধান তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা সম্পর্কে পূর্বাভাস বদলেছিল তারা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, যে ঋণ করে টাকা তুলছে, তার শোধ করার ক্ষমতার উপরই নির্ভর করে ঋণের ঝুঁকি। এখন ভারতের ক্ষেত্রে সেই ঝুঁকি বাড়ছে বলে আগেই জানিয়েছে ফিচ। কিন্তু সরকার তো ধার করে বাজারে ঋণপত্র ছেড়ে। যার একটা বড় অংশ কেনে দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলি। ফলে সরকারি ঋণপত্রের ঝুঁকি বাড়ার অর্থ তাদের ভাঁড়ারেও ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের পরিমাণ বৃদ্ধি। তাই দেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তাদেরও ঝুঁকি বাড়া স্বাভাবিক।
বুধবার জারি করা বিবৃতিতে ফিচ জানিয়েছে, দেশের আর্থিক হাল ও সরকারি ঋণের সঙ্গে জড়িয়ে থাকার কারণেই সংস্থাগুলির ক্রেডিট রেটিং সম্পর্কে পূর্বাভাস বদলাচ্ছে তারা। ‘স্থিতিশীল’ (স্টেব্ল) থেকে তা নামিয়ে আনছে ‘নেতিবাচক’ (নেগেটিভ)-এ। উল্লেখ্য, গত ১৮ জুন ভারত সম্পর্কে পূর্বাভাস একই ভাবে ‘নেতিবাচক’ করে দিয়েছিল ফিচ।
এ দিন যে ১২টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ‘গায়ে হাত পড়েছে’, সেগুলি হল স্টেট ব্যাঙ্ক, আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক, পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক, কানাড়া ব্যাঙ্ক, আইডিবিআই ব্যাঙ্ক, অ্যাক্সিস ব্যাঙ্ক, এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাঙ্ক, ব্যাঙ্ক অফ বরোদা, ব্যাঙ্ক অফ বরোদার নিউজিল্যান্ড শাখা, হাউসিং অ্যান্ড আর্বান ডেভলপমেন্ট কর্পোরেশন (হাডকো), ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভলপমেন্ট ফিনান্স কোম্পানি (আইডিএফসি) এবং ইন্ডিয়ান রেলওয়ে ফিনান্স কর্পোরেশন। তবে এর সব ক’টিরই ক্রেডিট রেটিং অপরিবর্তিত থাকছে ‘বিবিবি(-)’তে।
ফিচ-এর দাবি, ঝুঁকি বাড়লেও, ব্যাঙ্কগুলির গ্রাহক সংখ্যা ও তাঁদের জমা দেওয়া টাকার অঙ্ক স্বস্তিদায়ক। মূলধন এবং শাখার সংখ্যাও যথেষ্ট। কিন্তু বাকি প্রতিষ্ঠানগুলির সেই সুবিধা না-থাকায় তাদের ঝুঁকি আরও বেশি। তবে এই সমস্ত প্রতিষ্ঠানই যে প্রয়োজনে যথেষ্ট সরকারি সাহায্য পেতে পারে, তা মেনে নিয়েছে তারা। |