নকল ডিজেল তৈরি করার অভিযোগে গ্রেফতার ৫
কল ডিজেল তৈরির অভিযোগে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করল মঙ্গলকোট থানার পুলিশ। বুধবার মঙ্গলকোটের ধারসোনা গ্রাম থেকে তাঁদের ধরা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম নূরাই শেখ, নজরুল শেখ, লুৎফর শেখ, অয়ন ও আনাই শেখ। প্রত্যেকেরই বাড়ি ধারসোনা গ্রামে। তাদের কাছ থেকে ১৮০০ লিটার কেরোসিন তেল, রাসায়নিক পদার্থ, লুব্রিক্যান্ট তেল ও তৈরি হওয়া ২৫০ লিটার ‘ডিজেল’ উদ্ধার করে পুলিশ। আজ, বৃহস্পতিবার তাঁদের কাটোয়া আদালতে তোলা হবে। বর্ধমানের পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা বলেন, “কেরোসিন থেকে ডিজেল তৈরির সময়ে এদের হাতেনাতে ধরা হয়।”
দীর্ঘ কয়েক বছর ধরেই ওই গ্রামে ‘ডিজেল’ তৈরি হয় বলে পুলিশের কাছে খবর ছিল। কিন্তু তল্লাশি চালিয়েও কারবারিদের গ্রেফতার করা যায়নি। বুধবার এসডিপিও (কাটোয়া) ধ্রুব দাস, সিআই (কাটোয়া) শচীন্দ্রনাথ পুড়িয়া, মঙ্গলকোটের ওসি দীপঙ্কর সরকার-সহ বেশ কয়েক জন আধিকারিক বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে ধারসোনা গ্রামের পূর্ব, পশ্চিম ও উত্তরপাড়ায় অভিযান চালান। গ্রেফতার করা হয় ওই পাঁচ জনকে।
উদ্ধার হওয়া সামগ্রী। নিজস্ব চিত্র।
ধৃতেরা পুলিশকে জানিয়েছেন, তাঁরা বীরভূম, নদিয়া জেলার ফেরিওয়ালাদের কাছ থেকে ৩০-৩৫ টাকা প্রতি লিটার দরে কেরোসিন তেল কেনেন। ওই ফেরিওয়ালারা অবশ্য কাটোয়া শহর-সহ আশপাশের গ্রামের বধূদের কাছ থেকে রেশনের ১০ টাকার কেরোসিন তেল কেনেন লিটার প্রতি ২৫-২৮ টাকা দরে।
জেরার মুখে ধৃতেরা জানিয়েছেন, এ রকম প্রায় ২৫-৩০ জন ফেরিওয়ালা রয়েছেন। তাঁদের কাছ থেকে কেনা কেরোসিন তেল ‘ডিজেল’-এ রূপান্তরিত করে তা বিক্রি করা হয় অন্য এক দল ফেরিওয়ালার কাছে। মূলত নদিয়া ও বীরভূমের লোকজনই তাঁদের খরিদ্দার। পুলিশ সুপার বলেন, “মহকুমাশাসকের কাছে চিঠি দিয়ে জানতে চাইব, খাদ্য নিয়ামক দফতরের গাফিলতিতে রেশন থেকে কেরোসিন তেল সোজা বাজারেই চলে আসছে কি না।”
কেরোসিন তেল থেকে এই ‘ডিজেল’ তৈরির একটি বিশেষ পদ্ধতি রয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, তেল কারবারিরা কলকাতা থেকে রাসায়নিক পদার্থ কিনে আনেন। তা মিশিয়ে দেওয়া হয় রেশনের নীল রঙের কেরোসিন তেলে। রং পরিবর্তিত হয়ে সাদা হয়ে যায়। এর পরে লুব্রিক্যান্ট তেল ও ন্যাপথলিন মিশিয়ে ‘ডিজেল’ তৈরি করা হয়। এই ‘ডিজেল’ বাজারে বিক্রি হয় লিটার প্রতি ৩৫ থেকে ৩৭ টাকা মূল্যে। ধৃতেরা পুলিশকে জানিয়েছেন, চাষের সময়ে তাঁদের আয় যায় বেড়ে। মাসিক গড় আয় হয় দুই থেকে তিন হাজার টাকা। পুলিশের ধারণা, ওই কারবারে ধারসোনা গ্রামের অন্তত ৩০ থেকে ৩৫ জন যুক্ত রয়েছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, যে সব এলাকায় সেচ ব্যবস্থা ভাল নয়, সেখানে ডিজেল চালিত শ্যালো পাম্পের উপরেই নির্ভর করতে হয়। যিজেলের দাম বেড়ে যাওায়ায় ওই তেলেই পাম্প চালান কৃষকেরা। একই ভাবে মোটরচালিত ভ্যান, ট্রেকরাও চলে এই ‘ডিজেল’ তেলেই।
মঙ্গলকোটের কয়েক জন মোটরচালিত ভ্যানচালকের কথায়, “আসল ডিজেল নয়, কী ভাবে বুঝব। কম টাকায় পেতাম। তাই কিনতাম। গাড়ি চালিয়ে লাভও হত।” এই কারবারের সঙ্গে যুক্ত বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.