|
|
|
|
জাল স্ট্যাম্প রাখার অভিযোগে ধৃত সিপিএম নেতা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বর্ধমান ও কাঁকসা |
বালি খাদানের জাল কাগজপত্র ও স্ট্যাম্প রাখার অভিযোগে কাঁকসার বাসুদেবপুরের সিপিএম নেতা হীরেন ডোমকে বুধবার গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সিপিএম অবশ্য এই ঘটনার পিছনে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক দিন আগে এলাকায় একটি রাজনৈতিক সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে হীরেনবাবুর ছেলে তাপসের বিরুদ্ধে। তাঁর খোঁজে পুলিশ এ দিন দুপুরে হীরেনবাবুর বাড়িতে যায়। তখনই বাড়ি থেকে একটি ব্যাগ মেলে। তাতেই জাল কাগজপত্র ও স্ট্যাম্পগুলি পাওয়া যায়। হীরেনবাবু বাসুদেবপুর পঞ্চায়েতের প্রাক্তন সিপিএম সদস্য।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হীরেনবাবু পেশায় বালি খাদানের শ্রমিক। জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা জানান, ইলামবাজারের ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিকের জাল কাগজপত্র, স্ট্যাম্প মিলেছে ধৃতের কাছে। পুলিশের সন্দেহ, ধৃত ব্যক্তি টাকার বিনিময়ে ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিকের সই জাল করে বালি খাদানের মালিকদের অনুমতিপত্র দিতেন। পুলিশ সুপারের দাবি, “জেরার মুখে ধৃত স্বীকার করেছে, দীর্ঘদিন ধরে এমন জাল চালান ও সরকারি স্ট্যাম্পের সাহায্যে বালি চালান করে চলেছে। এর ফলে রাজ্য সরকার বালি খাদানের রাজস্ব হারিয়েছে। গোটা বিষয়টির তদন্ত হচ্ছে।” আজ, বৃহস্পতিবার ধৃতকে আদালতে তোলা হবে।
কাঁকসা থানা সূত্রে জানানো হয়েছে, বালিখাদ চালানোর জন্য সরকারি খাতে মাসে ৬০ থেকে ৬৬ হাজার টাকা জামা দিতেন হীরেনবাবু। তাতে অজয়ের পাড় থেকে বড়জোর ৪০ হাজার কিউবিক ফুট বালি কাটার কথা। পুলিশের দাবি, তাঁকে জেরা করে জানা গিয়েছে, এই জাল চালান দেখিয়ে অন্তত পাঁচ লক্ষ কিউবিক ফুট বালি কাটা হত। পুলিশ আরও জানায়, ধৃতের নামে অন্তত ৬টি রাজনৈতিক সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
সিপিএমের অবশ্য দাবি, ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হয়েছে তাদের দলের কর্মীকে। দলের কাঁকসা জোনাল সম্পাদক অলোক ভট্টাচার্য বলেন, “বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় আমাদের বহু কর্মীকে জেলে পাঠানো হয়েছে। বিদবিহার এলাকায় দলের সব কাজকর্ম দেখছিলেন হীরেনবাবু। আমাদের পার্টির কাজকর্ম স্তব্ধ করতে এ বার তাকেও ফাঁসানো হল। তবে এ ভাবে আমাদের আটকানো যাবে না।”
অলোকবাবুর দাবি, হীরেনবাবুর পরিবার দুঃস্থ। বছর দুয়েক আগে হৃদযন্ত্রের জটিল রোগে ভুগে কার্যত বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে তাঁর কিশোরী মেয়ের। অলোকবাবুর বক্তব্য, “বালি খাদানের অনুমতিপত্র দেওয়ার মতো বেআইনি কাজে যুক্ত থাকলে তো উনি অনেক টাকার মালিক হতেন। কিন্তু তাঁর বাড়িতে দারিদ্রের ছাপ স্পষ্ট।” ঘটনার পিছনে কারা রয়েছে এবং প্রকৃতপক্ষে বেআইনি ভাবে যারা বালি খাদান চালাচ্ছে, তা তদন্ত করে বের করার দাবি জানিয়েছেন অলোকবাবু। পক্ষান্তরে, জেলা যুব তৃণমূল কোর কমিটির সদস্য পল্লব বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, “বাম জমানায় বছরের পর বছর এ ভাবেই অনিয়ম চলেছে।” |
|
|
|
|
|