কর্তৃপক্ষ আপত্তি জানিয়েছিলেন একাধিক বার। কিন্তু তা অগ্রাহ্য করে পাণ্ডুয়ায় পানীয় জল তৈরির একটি নির্মীয়মাণ কারখানার যাতায়াতের প্রায় পথের মধ্যে খড়ের চালের একটি অস্থায়ী চালাঘর তৈরি করে ফেলার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এর ফলে, সমস্যায় পড়েছেন কারখানা কর্তৃপক্ষ। তাঁদের দাবি, ওই চালাঘরের জন্য সুষ্ঠু ভাবে কারখানার মালপত্র নিয়ে আসা লরি-ট্রাক চলাচল বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে।
সমস্যার কথা জানিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ দিন কয়েক আগে তৃণমূলের হুগলি জেলা নেতৃত্বের শরণাপন্ন হন। তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব চালাঘরটি সরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু এখনও তা সরানো হয়নি। এই পরিস্থিতিতে কারখানা কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা, চালাঘরটি সরানো না হলে সুষ্ঠু ভাবে কারখানার নির্মাণ এবং উৎপাদনের কাজ শুরু করা যাবে না। তাঁরা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বেন। পাণ্ডুয়ার স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য সমস্যার কথা মানতে চাননি। তাঁদের দাবি, স্থানীয় লোকজনই চালাঘরটি বানিয়েছেন। |
তৃণমূলের জেলা সভাপতি তপন দাশগুপ্ত বলেন, “কোথাও নতুন কোনও কারখানা তৈরি হলে কর্তৃপক্ষকে সাহায্য করাই আমাদের দলীয় সিদ্ধান্ত। কিন্তু পাণ্ডুয়ায় যা হয়েছে, তাতে আমাদের দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে। দ্রুত সমস্যাটির সমাধানের চেষ্টা করব। পুলিশকেও কড়া ব্যবস্থা নিতে বলেছি।”
পাণ্ডুয়ার বেলুন-ধামাসিন পঞ্চায়েতে সাত বিঘা জমিতে প্রায় দেড় কোটি টাকা খরচ করে পানীয় জল তৈরির কারখানাটি তৈরি করছে একটি বেসরকারি সংস্থা। নির্মাণকাজ শুরু হয় মাস ছয়েক আগে। এ জন্য বিভিন্ন সরকারি দফতরের প্রয়োজনীয় যাবতীয় অনুমতি ইতিমধ্যেই পেয়ে গিয়েছে সংস্থাটি। অফিস-ঘর নির্মাণের কাজ অনেকটাই হয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি, কারখানার ‘শেড’ তৈরির কাজও দ্রুত গতিতে চলছে। কর্তৃপক্ষ কারখানা নির্মাণের কাজ তাড়াতাড়ি শেষ করতে চাইছেন। কারখানাটিতে পুরোমাত্রায় উৎপাদন চালু হলে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে অন্তত ১০০ জনের কর্মসংস্থান হবে বলে কর্তৃপক্ষের আশা। স্থানীয় লোকজনকেও কাজে নেওয়ার সুযোগ রয়েছে বলে তাঁরা জানিয়েছেন। কিন্তু তাঁদের সেই আশায় বাদ সেধেছে তৃণমূলের ওই চালাঘরটি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সপ্তাহ দুয়েক আগে অন্তত ১৫ ফুট লম্বা, ১০ ফুট চওড়া চালাঘরটি তৈরি হয়। প্রায় প্রতিদিনই সেখানে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা জড়ো হন। কারখানা কর্তৃপক্ষের তরফে গুরুপদ কোলে এবং অভিজিৎ মণ্ডল বলেন, “আমরা চালাঘরটি সরিয়ে নিতে একাধিকবার অনুরোধ করি। তৃণমূল কর্মীরা জানান, এতে দলের অনুমতি রয়েছে। বিষয়টি তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বকে জানিয়েছি। কারখানার গাড়ি যাতায়াতের জন্য অন্তত দু’টি গেট জরুরি। সে জন্যই আমরা কারখানার সামনের অংশ খোলা রেখেছি। আর সেখানেই হঠাৎ চালাঘরটি বানানো হল। গাড়ি চলাচলে সমস্যা হচ্ছে।”
যে এলাকায় কারখানাটি গড়ে উঠছে, সেখানকার তৃণমূল নেতা অসিত চট্টোপাধ্যায় অবশ্য ওই চালাঘরের জন্য কোনও সমস্যা হওয়ার কথা মানতে চাননি। তাঁর দাবি, “রাস্তার এক পাশে চালাঘরটি গ্রামবাসীরা বানিয়েছেন। তার জন্য ওই কারখানার কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়। মূল প্রবেশদ্বার আটকানো হয়নি।” ওই কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধেই পূর্ত দফতরের জমির একাংশ ঢুকিয়ে নেওয়ার অভিযোগ তুলেছেনন অসিতবাবু। সেই অভিযোগ অবশ্য কারখানা কর্তৃপক্ষ মানেননি। |