ধারাবাহিকতা বনাম চমক।
বম্বার্স বনাম ডিনামাইট।
ইউরোর ‘মরণ গ্রুপ’-এ জার্মানি ও ডেনমার্ক ম্যাচকে যদি এক কথায় ব্যাখ্যা করতে হয়, তা হলে এটাই দাঁড়ায়।
গ্রুপের প্রথম ম্যাচে ফান পার্সি-রবেনদের ১-০ গোলে হারিয়ে চমকে দিয়েছিল মর্তেন ওলসেনের ডেনমার্ক। রবিবার ‘মরণ গ্রুপ’-এর মরণ-বাঁচন ম্যাচে তাদের সামনে আবার সেই নেদারল্যান্ডস। তবে স্নাইডার-রবেন-ফান পার্সিদের নয়। বিশ্ব ফুটবলের ‘নতুন নেদারল্যান্ডস’ গোমেজ-সোয়ানস্টাইগার-পোডোলস্কিদের জার্মানি। যাঁদের খেলায় ইতিমধ্যেই ডাচ ফুটবলের ছোঁয়া লেগে গিয়েছে।
ডেনমার্ক ম্যাচ থেকে মাত্র এক পয়েন্ট তুলতে পারলেই কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা পাকা হয়ে যাবে জার্মানির। তবু জার্মান কোচ জোয়াকিম লো পরিষ্কার বলে দিয়েছেন, “জানি এক পয়েন্ট হলেই চলবে। কিন্তু আমরা জিততে চাই। শেষের দু’টো ম্যাচ ফুটবলারদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে তুলেছে। আর যত জিতব, ততই তো আত্মবিশ্বাস বাড়বে। যে করেই হোক ডেনমার্ককে হারাতে চাই।” ডেনমার্কের ভাগ্য অন্যদের ভূমিকার ওপর নির্ভর করলেও, জার্মানির ভাগ্যের চাবি লাম-খেদেইরাদের হাতের মুঠোতেই আছে। লো নিজেও বলেছেন, “আমি মনে করি কোয়ার্টার ফাইনালের দরজা আমরা খুলে ফেলেছি। রবিবার কী ভাবে সেই রাস্তাটা আরও পরিষ্কার করব, সেটাও এ বার আমাদের হাতে।”
|
সামনে নতুন লক্ষ্য। প্র্যাক্টিসে আগের ম্যাচের নায়ক গোমেজ। |
রবিবার জার্মানির হয়ে শততম ম্যাচ খেলতে নামছেন পোডোলস্কি। ডেনমার্ককে হারিয়ে তাই ম্যাচটা স্মরণীয় করে রাখতে চান তিনি। ইউরোতে জার্মানি এখন যে বিধ্বংসী ফর্মে খেলছে, তাতে অবশ্য কোনও অসুবিধা হবে বলে মনে হয় না। চিন্তা শুধু একটাই। ড্যানিশদের বিরুদ্ধে উইনিং কম্বিনেশন ভাঙতে চাইছিলেন না জার্মানি কোচ। কিন্তু কার্ড সমস্যায় পড়ে যাওয়ায় লেফট ব্যাক বোয়েতাংকে পাচ্ছেন না লো। তাঁর পরিবর্তে খেলতে পারেন শালকের রাইট ব্যাক হাওয়েদেস। আজারবাইজানের বিরুদ্ধে ইউরোর একটা প্রস্তুতি ম্যাচে খেলেছেন। যেখানে জার্মানির ৩-০ জয়ে ওজিলের একটা গোলে তাঁর অবদান আছে। বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের লেফট ব্যাক মার্সেল স্কেমেঞ্জারও খেলতে পারেন। সেক্ষেত্রে লামকে রাইট ব্যাকে খেলানো হতে পারে। না হলে তৃতীয় বিকল্প মিডফিল্ডার লার্স বেন্ডার। বাকি দল অপরিবর্তিতই থাকছে।
জার্মানির জন্য সুখবর, মেসুট ওজিল শুক্রবার অনুশীলন না করলেও রবিবারের ম্যাচে খেলবেন। জার্মানির দু’টো ম্যাচে তিন গোল করেছেন একা মারিও গোমেজ। বায়ার্ন মিউনিখ স্ট্রাইকারের প্রশংসায় সোয়াইনস্টাইগার বলেছেন, “মারিও টিমের সম্পদ। অত্যন্ত দামি। যেখান থেকে গোল হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই, সেখান থেকেও গোল করে দেবে।”
অন্য দিকে, ডেনমার্ক প্রচুর চোট-আঘাতের সমস্যায় ভুগছে। পর্তুগালের বিরুদ্ধে চোট পাওয়ায় দলের দুই মিডফিল্ডার রোমেডাল ও জিমলিংকে পাচ্ছে না ডেনমার্ক। তবু আত্মবিশ্বাসী ড্যানিশ কোচ মর্তেন ওলসেন। বলেছেন, ‘‘দু’টো ম্যাচ থেকে তিন পয়েন্টই আশা করেছিলাম। সব ঠিকঠাক চললে, এখন আমাদের আরও মাত্র এক পয়েন্ট দরকার।’’ গত ম্যাচে পতুর্গালের বিরুদ্ধে জোড়া গোল করা ড্যানিশ স্ট্রাইকার নিকোলাস বেন্ডটনার বলেছেন, “এটা ভেবেই ভাল লাগছে, এখনও আমাদের সুযোগ শেষ হয়ে যায়নি। কাল জার্মানিকে আটকানোর সব রকম চেষ্টা করতে হবে। জিতলে কোয়ার্টার ফাইনালে চলে যাব। ড্র হলে অন্যদের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে। হারলে সব শেষ।”
এখন দেখার, নেদারল্যান্ডসকে চমকে দেওয়ার পর ‘নতুন নেদারল্যান্ডস’-কে চমকে দিতে পারে কি না ডেনমার্ক! |