|
|
|
|
কাজ নিয়ে রয়েছে সংশয় |
প্রধানমন্ত্রী যোজনায় আরও ২০০০ কিমি রাস্তা জেলায় |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
পশ্চিম মেদিনীপুরের মাওবাদী-প্রভাবিত এলাকার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের বিশেষ প্রকল্প আইএপি-তে আগেই ৬৭৬ কিলোমিটার রাস্তা তৈরির অনুমতি মিলেছিল। জেলার মাওবাদী-প্রভাবিত ১১টি ব্লকে ওই রাস্তা হওয়ার কথা। ব্লকগুলির যে সব এলাকায় পাকা রাস্তা নেই, কিংবা তফসিলি অধ্যুষিত এলাকার মানুষ যেখানে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা থেকে বঞ্চিত, অথচ গ্রামগুলিতে আড়াইশো বা তার বেশি মানুষের বাস---সে সব এলাকাতেই রাস্তা তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছিল। এ জন্য সমীক্ষার কাজও শেষ হয়েছে বলে প্রশাসন জানিয়েছে। এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় জেলার তফসিলি অধ্যুষিত এলাকায় আরও ২ হাজার কিলোমিটার রাস্তা তৈরির অনুমতি দিল কেন্দ্রীয় সরকার। এত দিন এই যোজনায় রাস্তার মধ্যে ৫০ মিটারের বেশি বড় সেতু করা যেত না। এ বার থেকে ৭৫ মিটার দীর্ঘ সেতুও তৈরি করা যাবে বলে কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে।
জেলা প্রশাসন ইতিমধ্যেই দ্রুত প্রকল্প-রিপোর্ট তৈরি করে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে ব্লকগুলিকে। সেই সঙ্গে একটি বিশেষ সমীক্ষক-দলকেও কাজে লাগানোর পরিকল্পনা করেছে প্রশাসন। যারা সমীক্ষা চালিয়ে প্রস্তাবিত রাস্তা সম্বন্ধে যাবতীয় তথ্য দেবে। তার পরেই ওই সব রাস্তা প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার আওতায় নিয়ে এসে কাজ শুরুর জন্য টাকা চেয়ে কেন্দ্রের কাছে রিপোর্ট পাঠানো হবে বলে জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত জানিয়েছেন।
প্রাথমিক ভাবে প্রশাসন পরিকল্পনা করেছে, খড়্গপুর মহকুমার বিভিন্ন ব্লকে প্রায় ৮০০ কিলোমিটার, মেদিনীপুর সদর ও ঝাড়গ্রাম মিলিয়ে ১১০০ কিলোমিটার রাস্তা তৈরি হবে। কোন এলাকায় রাস্তা তৈরি হবে, তা চিহ্নিত করার জন্য বিডিও-দের নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক। তার পর এলাকায় গিয়ে বিশেষ সমীক্ষক-দল সমীক্ষা চালাবে।
রাস্তা খারাপের জন্য যাতে গ্রাহকদের রেশন দোকানে যেতে অসুবিধা না হয়, সে জন্যও প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনাতেই বিভিন্ন এলাকার রেশন দোকানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এলাকার গ্রামগুলিকে জোড়ার পরিকল্পনা হয়েছে। খাদ্য দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা আধিকারিক রাহুল নাথ বলেন, “এ জন্য রিপোর্ট তৈরিরও কাজ চলছে।” সাঁকরাইলের কুলটিকরি থেকে কুঁকড়াখুপি, গড়বেতা-২ ব্লকের আমলাশুলি থেকে কেজিয়া, বেলপাহাড়ি থেকে চাকাডোবা, শিলদা থেকে দেরাঙসাই এলাকায় রাস্তা তৈরির কথা ভাবে হয়েছে। প্রাথমিক রিপোর্টে ৪২২ কিলোমিটার রাস্তা তৈরির প্রস্তাব রয়েছে।
তবে, গ্রাম সড়ক যোজনায় কতটা কাজ হবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছেই। কারণ, আগেই প্রস্তাবিত ৩৭টি রাস্তার কাজ এখনও হয়নি জেলায়। এ প্রসঙ্গে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি অন্তরা ভট্টাচার্য বলেন, “প্রকল্প বাস্তবায়িত করতে কিছু সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। সেগুলি না কাটলে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় সাফল্য পাওয়া কঠিন। এই কারণেই প্রায় ৩৭টি রাস্তার কাজ সম্পূর্ণ করা যায়নি।” জেলা পরিষদ সূত্রের বক্তব্য, এই প্রকল্পে রাস্তা তৈরি করতে রায়তি-জমির দরকার হলে কোনও আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সংস্থান নেই। কোথাও বাড়ি ভাঙতে হলেও ক্ষতিপূরণ দেওয়া যায় না। তা ছাড়া সর্বত্রই কিলোমিটার প্রতি খরচ একই। এই প্রকল্পে ৫ বছর রক্ষণাবেক্ষণের খরচও ঠিকাদার সংস্থার। তাই যে এলাকায় মাটি একটু নরম সেখানে কেউ কাজ করতে চায় না। আবার ঘন-বসতিপূর্ণ, পুকুর, নদী, নালা, চাষজমির এলাকায় রাস্তার জন্য জমি পাওয়াও কঠিন হয়ে পড়ে। সভাধিপতির কথায়, “এই সব নানা জটিলতায় ঠিকাদাররাও দরপত্র জমা দেন না। ফলে কাজও হয় না। এই প্রকল্পে তাই জরুরি কিছু রদবদল প্রয়োজন। এ জন্য বার বার সরকারকেও জানিয়েছি।” |
|
|
|
|
|