প্রণব মুখোপাধ্যায় রাষ্ট্রপতি ভবনে চলে গেলে অর্থ মন্ত্রকে শূন্যস্থান তৈরি হবে। আর্থিক সঙ্কটের প্রেক্ষিতে আপাতত অর্থ মন্ত্রক নিজের হাতেই রাখতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। উদ্দেশ্য একটাই, সঙ্কটের মোকাবিলার পাশাপাশি খুচরো ব্যবসায় বিদেশি লগ্নির মতো সংস্কারের দ্রুত রূপায়ণ।
প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় সূত্রের খবর, রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়ন পেশের আগে অর্থমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেবেন প্রণববাবু। কোনও মন্ত্রী ইস্তফা দিলে সেই মন্ত্রক প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে চলে আসে। কিন্তু এখনই সেই দায়িত্ব অন্য কাউকে দিতে রাজি নন মনমোহন। নব্বইয়ের দশকে আর্থিক সঙ্কটের সময়ে তিনিই উদারীকরণের পথে হেঁটে দেশকে রক্ষা করেছিলেন। আমেরিকা-ইউরোপের মন্দার কালো ছায়া যখন ভারতের আকাশে ঘনীভূত, তখন ফের মনমোহন নিজেই হাল ধরতে চাইছেন।
কেন্দ্র মনে করছে, পেনশন বিল থেকে শুরু করে খুচরো ব্যবসায় বিদেশি লগ্নির অনুমতি দেওয়া আশু প্রয়োজন। আজ কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা কৌশিক বসুও এই বিষয়ে সওয়াল করেছেন। কৌশিকবাবুর যুক্তি, “আগামী দশ মাসে ইউপিএ সরকারের যে দশটি নীতিগত পদক্ষেপ করা প্রয়োজন, তার মধ্যে খুচরো ব্যবসায় বিদেশি লগ্নি অন্যতম। কারণ এতে কৃষকরাও লাভবান হবে।” কৌশিকবাবুর বক্তব্য, ‘‘বহুজাতিক সংস্থাগুলি যে নিজেদের লাভের জন্যই এ দেশে আসবে, তাতে কোনও ভুল নেই। কিন্তু তাদের লাভ মানেই আমাদের ক্ষতি, এমন যুক্তিও অর্থহীন।” সমস্যা হল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় খুচরো ব্যবসায় বিদেশি লগ্নির বিরোধিতা চালিয়ে যাবেন। মনমোহনকে সেই চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে। আবার পশ্চিমবঙ্গের জন্য আর্থিক প্যাকেজের দাবিও এখন সরাসরি মনমোহনকেই সামলাতে হবে।
আপাতত মনমোহন অর্থ মন্ত্রকের দায়িত্ব নিলেও, অর্থমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন মন্টেক সিংহ অহলুওয়ালিয়া, সি রঙ্গরাজন, জয়রাম রমেশ, আনন্দ শর্মা। মন্টেক মনমোহনের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত এবং উদার অর্থনীতির সমর্থক। রঙ্গরাজন প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারম্যান। জয়রাম রমেশ আবার গাঁধী-পরিবারের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। দৌড়ে রয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী আনন্দ শর্মাও। |