দুর্গাপুরের এইচএফসিএল কারখানা
আর্জি শুনেছেন মন্ত্রী, আশায় আবাসনবাসী
কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর আশ্বাসে হিন্দুস্থান ফার্টিলাইজার কর্পোরেশন লিমিটেডের (এইচএফসিএল) আবাসনে টিকে থাকার আশা পেয়েছে স্বেচ্ছাবসর নেওয়া প্রায় দু’শো কর্মীর পরিবার।
দুর্গাপুরের ওই রাষ্ট্রায়ত্ত সার কারখানা অনেক দিন আগেই রুগ্ণ হয়ে বিআইএফআর (বোর্ড ফর ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড ফিনান্সিয়াল রিকনস্ট্রাকশন)-এর আওতায় চলে গিয়েছে। স্বেচ্ছাবসর নেওয়া কর্মীদের আগামী অক্টোবরে আবাসন ছাড়তে হবে বলে চরমপত্র দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সম্প্রতি আইএনটিইউসি-র আর্জির পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় রসায়ন ও সার প্রতিমন্ত্রী শ্রীকান্তকুমার জেনা জানিয়েছেন, তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন। এতেই আশার আলো দেখছে ১৯৬টি উদ্বিগ্ন পরিবার।
—নিজস্ব চিত্র।
দুর্গাপুরে হিন্দুস্থান ফার্টিলাইজারের সার কারখানা গড়ে উঠেছিল ১৯৬৫ সাল নাগাদ। উৎপাদন শুরু হয় ১৯৭২ সালে। মূলত ইউরিয়া তৈরি হত এখানে। কিন্তু পুরনো প্রযুক্তিতে উৎপাদনের খরচ বিদেশ থেকে আমদানি করা ইউরিয়ার তুলনায় বেশি হয়ে যাওয়ায় ধীরে-ধীরে কারখানাটি রুগ্ণ হয়ে পড়ে। শেষ পর্যন্ত ১৯৯৮ সালে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। ১১২৫ জন শ্রমিক-কর্মী স্বেচ্ছাবসর নিয়ে নেন। এঁদের অধিকাংশই কারখানার আবাসন ছেড়ে চলে গিয়েছেন।
এর পরেও রয়ে গিয়েছে নিতান্ত উপায় না থাকা ১৯৬টি পরিবার। বিভিন্ন ছোটখাটো কাজ করে তাদের সংসার চলে। কারখানার তরফে ওই পরিবারগুলিকে প্রতি বছর ১১ মাসের জন্য আবাসন লিজ দেওয়া হয়। সময়সীমা পেরিয়ে গেলে নবীকরণও করা হয়। তবে এ বার যে লিজ দেওয়া হয়েছে তা ৮ মাসের জন্য। সময়সীমা শেষ হচ্ছে আগামী অক্টোবরে। এর পরে আর লিজ নবীকরণ করা হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন কারখানা কর্তৃপক্ষ। যার অর্থ, তার পরে ওই পরিবারগুলিকে আবাসন ছেড়ে যেখানে হোক চলে যেতে হবে।
এই পরিবারগুলিকে যাতে রাস্তায় দাঁড়াতে না হয়, তার জন্য কেন্দ্রীয় রসায়ন ও সার মন্ত্রকের কাছে আর্জি জানিয়েছে শ্রমিক সংগঠনগুলি। কারখানার সিটু অনুমোদিত সংগঠনের সভাপতি নিশীথ চৌধুরীর দাবি, “বাম সাংসদদের একটি প্রতিনিধি দল প্রতিমন্ত্রী শ্রীকান্ত জেনার সঙ্গে দেখা করে এই নিয়ে আর্জি জানিয়েছিলেন। বিধানসভার বিরোধী দলনেতাও তাঁকে চিঠি দিয়েছেন। প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন। অক্টোবর মাসের পরে পরিবারগুলিকে যাতে আবাসন ছাড়তে না হয়, সেই দিকটিও দেখা হচ্ছে। আমাদের নেতা তপন সেনকে চিঠি দিয়ে মন্ত্রী তা জানিয়েছেন। আবাসনের জায়গাটি আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের হাতে থাকায় তাদেরও চিঠি দেওয়া হয়েছে। তারা এখনও উত্তর দেয়নি।”
সেল-এর আওতায় থাকা দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টের (ডিএসপি) প্রাক্তন কর্মীরা যেমন দীর্ঘমেয়াদি আবাসন লিজ বা ভাড়া পান, তা যাতে এই কারখানার স্বেচ্ছাবসর নেওয়া কর্মীদেরও দেওয়া হয় তার জন্য দীর্ঘদিন ধরেই কেন্দ্রীয় রসায়ন ও সার মন্ত্রকে দরবার করে আসছিল আইএনটিইউসি প্রভাবিত দুর্গাপুর ফার্টিলাইজার কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া ওয়াকার্স ইউনিয়ন। সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক বিপিন মণ্ডল বলেন, “রামবিলাস পাসোয়ান মন্ত্রী থাকাকালীন আমাদের সর্বভারতীয় সভাপতি জি সঞ্জীব রেড্ডি মারফত বিষয়টি তাঁকে জানানো হয়েছিল। মন্ত্রী লিখিত ভাবে জানিয়েছিলেন, এই সার কারখানা ডিএসপি-র মতো লাভজনক ইউনিট নয়। বিআইএফআর-এ রয়েছে। এই অবস্থায় সেল-এর মতো প্রাক্তন কর্মীদের দীর্ঘমেয়াদি আবাসন লিজ বা ভাড়া দেওয়া সম্ভব নয়।” আইএনটিইউসি-র দাবি, সম্প্রতি কারখানাটি বিআইএফআর থেকে বের হওয়ার মুখে। শেষমেশ তা বেরিয়ে এলে আবাসনের দীর্ঘমেয়াদি লিজ বা ভাড়ার বিষয় নতুন করে আলোচনায় উঠবে। ইতিমধ্যে পরিবারগুলিকে যাতে গৃহচ্যুত করা না হয়, তার জন্য নতুন করে তদ্বিরও শুরু করেছে তারা। বিপিনবাবু বলেন, “আমাদের সর্বভারতীয় সভাপতি কেন্দ্রীয় রসায়ন ও সার প্রতিমন্ত্রী শ্রীকান্তকুমার জেনার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। তিনি চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, স্বেচ্ছাবসর নেওয়া কর্মীদের আবাসন সংক্রান্ত বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন। আশা করি, এ বার দীর্ঘদিনের অনিশ্চয়তা দূর হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.