মালদহ মেডিক্যাল কলেজে অজানা অসুখে শিশুমৃত্যু বেড়ে চলেছে। বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যাও। সোমবার থেকে বুধবার আরও তিনটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৭০। এই নিয়ে ১৫ দিনে ২৯টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। কী কারণে একের পর এক শিশুর মৃত্যু হচ্ছে সেই ব্যাপারে মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ কিছুই বলতে পারছেন না। মালদহ মেডিকেল কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল মহম্মদ রশিদ বলেন, “অজানা অসুখে তিন দিনে মালদহ মেডিক্যাল কলেজে আরও ৬টি শিশু মারা গিয়েছে। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানোর পরেই ওই ৬টি শিশুর মৃত্যু হয়। কী কারণে শিশুগুলি মারা যাচ্ছে বলতে পারব না।” অজানা রোগে শিশু মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখতে সম্প্রতি কলকাতার স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনের অধিকর্তা মালদহে গিয়ে আক্রান্ত শিশুদের শিরদাঁড়ার রক্তরস ও রক্তের নমুনা পরীক্ষার জন্য নিয়ে যান। এখনও পর্যন্ত সে রির্পোট মেডিক্যাল কলেজে পৌঁছয়নি। ভাইস প্রিন্সিপাল বলেন, “স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনের কাছ থেকে রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত বলতে পারব না কী কারণে শিশু মারা যাচ্ছে।” মালদহ মেডিক্যাল ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ১-১০ জুন ১০ দিনে মালদহ মেডিক্যাল কলেজে অজানা অসুখে ২৩টি শিশু মারা যায়। যে সমস্ত শিশু মারা গিয়েছে কিংবা নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছে তাদের বেশির ভাগের বয়স ২-৬ বছর। মৃত ও আক্রান্ত শিশুদের বেশির ভাগের বাড়ি জেলার কালিয়াচক এলাকায়। আক্রান্ত শিশুদের কারও জ্বর নেই। অথচ খিঁচুনি হচ্ছে। শিশু ম়ৃত্যুর খবর পেয়েই ১১ জুন স্কুল অফ ট্রপিক্যালের অধিকর্তা কৃষ্ণাংশু রায়ের নেতৃত্বে তিনজনের প্রতিনিধি দল মালদহ ছুটে গিয়েছিলেন। ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই তাঁরা রোগের কারণ জানিয়ে রিপোর্ট পাঠাবেন বলে জানিয়েছিলেন। তিনদিন পেরিয়ে গেলেও রিপোর্ট হাতে না-আসায় উদ্বিগ্ন মালদহ মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। প্রাথমিক পরীক্ষায় আক্রান্ত শিশুদের রক্তে জাপানি এনসেফেলাইটিস বা ডেঙ্গি কিছুই ধরা পড়েনি। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, অজানা খিঁচুনি রোগে আক্রান্ত হয়ে মঙ্গলবার মারা গিয়েছে কালিয়াচকের মোজামপুরের ৬ বছরের মহসিনা খাতুন। বুধবার কালিয়াচক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে মালদহ মেডিক্যালে পাঠানো হয় বুধুয়া গ্রামের ৫ বছরের নীনা ইয়াসমিন ও বেগুনটোলার সুসান মণ্ডলকে। সুসানের মা শ্যামলী বলেন, “মঙ্গলবার হঠাৎ কাঁপুনি শুরু হয়। প্রথমে ভেবেছিলাম জ্বর। ওষুধ দেওয়ার পরেও ছেলের কাঁপুনি না-কমায় হাসপাতালে ভর্তি করেছি।” |