|
|
|
|
আশায় দু’পক্ষই |
আজ গণনা ও ফলপ্রকাশ দাসপুরে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঘাটাল |
আজ গণনা ও ফলপ্রকাশ দাসপুর বিধানসভা উপ-নির্বাচনের। গণনা হবে ঘাটাল রবীন্দ্র শতবার্ষিকী কলেজে। প্রশাসন সূত্রের খবর, গণনার কাজে প্রায় ১০০ কর্মী নিযুক্ত হয়েছেন। সকাল ৮টা থেকে শুরু হবে গণনা। ১৮টি টেবিলে ২২ রাউন্ডেই গণনার কাজ সম্পন্ন হবে। ভোটের দিনের মতোই গণনা ঘিরেও থাকছে কড়া পুলিশি-নিরাপত্তা। ফল ঘোষণার পরে যাতে কোথাও কোনও সমস্যা না হয়, সে দিকেও কড়া নজর রাখছে জেলা পুলিশ। পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার সুনীল চৌধুরী জানিয়েছেন, গণনার জন্য এক কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী ও ২০০ রাজ্য পুলিশ মোতায়েন থাকবে। ভোটের দিন যে ৬ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন ছিল তার মধ্যে ৫ কোম্পানি অবশ্য ইতিমধ্যেই ফিরে গিয়েছে। ভোট শান্তিতেই শেষ হয়েছিল। গণনা ও ফলপ্রকাশ ঘিরেও অশান্তির তেমন আশঙ্কা অবশ্য প্রশাসন করছে না।
জেতার ব্যাপারে আশাবাদী যুযুধান দু’পক্ষই। তৃণমূল-শিবিরের দাবি, গত বছরের চেয়েও নাকি বেশি ব্যবধানে জিতবেন তাদের প্রার্থী। দলের জেলা সভাপতি দীনেন রায়ের বক্তব্য, “যদি ব্যবধানই না বাড়ে তা হলে আর এক মাস ধরে দাসপুরে পড়ে থাকলাম কেন!” প্রসঙ্গত, গত বছর তৃণমূল প্রার্থী অজিত ভুঁইয়া প্রদত্ত ভোটের ৫৪.৭৬ শতাংশ পেয়ে ২৪ হাজার ৯২৭ ভোটের ব্যবধানে নিকটতম সিপিএম প্রার্থীকে হারিয়েছিলেন। এ বার তাঁর স্ত্রী মমতা ভুঁইয়া ঘাসফুল-প্রতীকে প্রার্থী। তবে, গত বছর ভোট পড়েছিল ৮২.২ শতাংশ (২৪২২৫২ জন মোট ভোটারের মধ্যে ১৯৯১৩৫ জনের ভোট পড়ে)। এ বার ভোট পড়েছে আগের চেয়ে কম, ৭৪ শতাংশ ( মোট ভোটার এ বার ২৪৭৫৭৭)। তাই, দলের জেলা-সভাপতি বললেও তৃণমূলের অনেকে মনে করছেন, মমতাদেবী জিতলেও ব্যবধান কমবে। প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোটের শতাংশ-হার নিয়েই তাঁদের বেশি চিন্তা। আগের বারে প্রাপ্ত ৫৪.৭৬ শতাংশ থেকে ভোট অনেকটা কমে গেলে সামনের বছরের পঞ্চায়েত ভোটে জেলায় ‘সবেধন নীলমণি’ দাসপুর-২ পঞ্চায়েত সমিতি হাতে রাখা কঠিন হয়ে যাবে বলে মনে করছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতারা। |
|
ফলপ্রকাশের অপেক্ষায় দাসপুর। |
জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী হয়েও অবশ্য তৃণমূল-শিবিরে ভোট-পরবর্তী পর্যালোচনায় কিছু অস্বস্তির প্রসঙ্গও আসছে। এ বার জোট-শরিক কংগ্রেসকে যৌথ প্রচারে ডাকাই হয়নি। সে নিয়ে গোঁসা ছিল কংগ্রেস-সমর্থকদের। সেই গোঁসার খানিকটা যদি ভোট হয়ে বিজেপি প্রার্থীর ঝুলিতে গিয়ে থাকে, তা হলে সমস্যা হতে পারে বলে মানছেন কেউ কেউ। তার উপর নিজেদের দলের কোন্দল শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত চলেছে। ফলে, অন্তর্ঘাতের আশঙ্কাও পুরোপুরি ওড়াতে পারছেন না তৃণমূলেরই একাংশ। দাসপুরের প্রবাসী অলঙ্কার-শিল্পীরা উপ-নির্বাচনের জন্য আর ছুটি নিয়ে ভোট দিতে আসেননি। গত বছর ওই অলঙ্কার-শিল্পীদের সিংহভাগ ভোটই তাঁদের প্রার্থীর ঝুলিতে গিয়েছিল বলে দাবি তৃণমূল নেতাদের। এ বার সে ভোট না পড়ার কারণেও কিছুটা দুশ্চিন্তা রয়েছে প্রধান শাসকদলের শিবিরে।
অন্য দিকে, জেলা সিপিএম-নেতৃত্ব ফল নিয়ে প্রকাশ্যে কোনও পূর্বাভাস দিতে না-চাইলেও একান্তে দলের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের অনেকেই দাবি করছেন, তাঁরাও ‘আশাবাদী’। ঘাটাল মহকুমায় দলের অন্যতম নেতা অশোক সাঁতরার তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য, “গত বছর বিধানসভা ভোটের ফলাফল ঘোষণার পর তৃণমূলের অত্যাচারে আমাদের দলের কর্মী-সমর্থকেরা দীর্ঘ দিন কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচিই নিতে পারেননি। অনেক দলীয় অফিসও বন্ধ হয়েছিল। এ বারের ভোটে কর্মীরা ফের প্রচারে বেরিয়েছেন। বাড়ি-বাড়ি প্রচারেও সাড়া পেয়েছি। তৃণমূলের দিক থেকে পরের পর বাধা সামলে আমরা সব বুথেই এজেন্টও দিয়েছিলাম। দেখাই যাক না, আর তো কয়েক ঘণ্টার মাত্র ব্যাপার।” |
|
|
|
|
|