|
|
|
|
বিমানেই ‘ধর্না’ |
সয়াবিন ভেবে চিকেন গিলে অগ্নিশর্মা শাকাহারী |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
তিনি আদ্যন্ত শাকাহারী। ৫৭ বছর বয়স পর্যন্ত কোনও আমিষ খাদ্য মুখে তোলেননি শ্রীকৃষ্ণ গোস্বামী। রাতের বিমানে রুটির সঙ্গে একটু ‘তরকারি’-ও মুখে তুলেছিলেন। সেটা চিবিয়ে খানিকটা গিলে ফেলার পরেই কুঁচকে গেল ভুরু। এ স্বাদ যে তাঁর পুরোপুরি অচেনা। ভাল ভাবে নজর করে দেখলেন, তরকারি ভেবে যা মুখে তুলেছেন, তা আদতে মুরগির মাংস! সংশ্লিষ্ট বিমান সংস্থার বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকি দিয়েছেন তিনি।
কলকাতায় বাড়ি। ব্যবসা করেন। বুধবার রাতে জেট সংস্থার বিমানে দিল্লি থেকে শ্রীকৃষ্ণবাবু আসছিলেন কলকাতায়। ব্লাডসুগারের রোগী। রাতের ইনসুলিন নিয়েই নিরামিষ খাবার চান বিমানসেবিকাদের কাছে। খাবার দিতেই প্যাকেট খুলে খেতে শুরু করে দেন তিনি। খাওয়ার আগে ভাল করে দেখলেন না, প্যাকেটে কী আছে? শ্রীকৃষ্ণবাবু বললেন, “দেখে মনে হয়েছিল, সয়াবিনের তরকারি। রুটি দিয়ে সেটার একটা টুকরো তুলে মুখে দিয়ে খাওয়ার পরেই বুঝতে পারি, এ স্বাদ তো চেনা নয়!”
অথচ তিনি তো নিরামিষ খাবারই চেয়েছিলেন। হইচই শুরু হয়ে যায়। ছুটে আসেন বিমানসেবিকারা। প্যাকেটের উপরে ‘নন-ভেজ’ লেখা ছিল। শ্রীকৃষ্ণবাবুর অভিযোগ, বিমানসেবিকারা এসে তাঁকে প্রথমে বোঝানোর চেষ্টা করেন, ওটা সয়াবিনেরই তরকারি। সয়াবিনকে তাঁরা নাকি ‘নন-ভেজ’ বলেই গণ্য করেন! নিরামিষ খাবার চাওয়া সত্ত্বেও ‘নন-ভেজ’ দেওয়া হবে কেন? সেটাই তো প্রথম ভুল। তার পরে দেখা যাচ্ছে, সয়াবিন নয়, তাঁকে দেওয়া হয়েছে মুরগির মাংস। কেন? আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন শ্রীকৃষ্ণবাবু। ক্ষমা চেয়ে নিয়ে বিমানসেবিকারা অন্য খাবার দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তা নিতে অস্বীকার করেন ওই যাত্রী। তাঁর কথায়, “শৌচাগারে গিয়ে দু’বার বমি করেছি। বলেছি, লিখিত ভাবে ক্ষমা চাইতে হবে।”
বিমানের লোকজন সেই দাবি মানেননি। প্রতিবাদে কলকাতায় অন্য যাত্রীরা নেমে যাওয়ার পরেও মিনিট পনেরো বিমানের মেঝেতে বসে থাকেন শ্রীকৃষ্ণবাবু। কথা বলেন পাইলটের সঙ্গেও। কিন্তু পাইলটও জানিয়ে দেন, এই কারণে লিখিত ভাবে ক্ষমা চাওয়া যাবে না। ওই যাত্রী সেখান থেকেই ফোনে যোগাযোগ করেন তাঁর আইনজীবীর সঙ্গে। সেই আইনজীবীর অনুরোধেই শ্রীকৃষ্ণবাবু নেমে আসেন বিমান থেকে।
রাতে বিমানবন্দরেই লিখিত ভাবে অভিযোগ জানাতে চেয়েছিলেন ওই বিমানযাত্রী। তাঁর অভিযোগ, ‘সিনিয়র’ কাউকে না-পেয়ে তিনি বাড়ি চলে যান। বৃহস্পতিবার কলকাতায় জেটের অফিসে গিয়ে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন। ই-মেল করে সেই অভিযোগের প্রতিলিপি পাঠিয়েছেন মুম্বইয়েও। মামলা করারও হুমকি দিয়েছেন। জেটের তরফে দাবি করা হয়েছে, খাবারের প্যাকেট খুললেও তা মুখে দেননি শ্রীকৃষ্ণবাবু। তা সত্ত্বেও তাঁর কাছে বারবার ক্ষমা চাওয়া হয়েছে। |
|
|
|
|
|