আগে জানায়নি রেল সিগন্যালের কাজে ট্রেন
থমকে, দহনে নাভিশ্বাস
বিজ্ঞাপন বা ঘোষণা, কোনও ভাবেই দেরির কথা জানানো হয়নি। অথচ চার দিন ধরে হাওড়া থেকে ছাড়া মুম্বইগামী সব ট্রেন মাঝপথে দীর্ঘ সময় দেরি করছে। কোথাও কোথাও ঠায় দাঁড়িয়ে থাকছে দীর্ঘ ক্ষণ। দুঃসহ দহনে যাত্রীদের প্রাণ ওষ্ঠাগত।
এই অঘোষিত দেরির কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, নাগপুরে নতুন সিগন্যাল ব্যবস্থার কাজ চলছে। কিন্তু যাত্রীরা সেটা জানতে পারছেন মাঝপথে ট্রেন আটকে যাওয়ার পরে। রেল আগেভাগে এই তথ্য না-জানানোয় পথের মাঝখানে চূড়ান্ত দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে মুম্বইগামী ট্রেনের যাত্রীদের। এই ভোগান্তির জন্য রেলের বিভিন্ন জোনের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবের দিকেই আঙুল তুলছেন রেলকর্তাদের একাংশ।
মাঝপথে আটকে যাওয়ায় গত চার দিন ধরে যে-সব ট্রেন দেরি করে চলেছে, তার মধ্যে রয়েছে শালিমার এলটিটি এক্সপ্রেস, হাওড়া-মুম্বই মেল (ভায়া নাগপুর), জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেস, হাওড়া-আমদাবাদ এক্সপ্রেস এবং আজাদ হিন্দ এক্সপ্রেস। যাত্রীদের অভিযোগ, কলকাতা থেকে ছাড়ার সময় কিন্তু মাঝপথে ট্রেন আটকে দেওয়া বা দেরি হওয়ার কথা জানানো হয়নি। ফলে প্রচণ্ড গরমে মাঝপথে আটকে গিয়ে নাকাল হতে হয়েছে যাত্রীদের। এমনকী বুধবার সকালে হাওড়া থেকে পুণে দুরন্ত এক্সপ্রেস যে দু’ঘণ্টারও বেশি দেরিতে ছাড়বে, জানানো হয়নি তা-ও।
সফরের মাঝখানে ট্রেন থামিয়ে দেওয়ার কারণ হিসেবে রেল সূত্রে বলা হচ্ছে, নাগপুরে সিগন্যালের কাজের জন্য ৯ জুন থেকে ১৩ জুন মাঝরাত পর্যন্ত ‘ব্লক’ নেওয়া হয়েছিল। তাতেই ওই বিপত্তি। রেলের পরিভাষায় ‘ব্লক’ নেওয়ার অর্থ, সিগন্যাল ব্যবস্থা, লাইন সারানো বা ওভারহেড তার মেরামতির জন্য ট্রেন সাময়িক ভাবে আটকে রাখা।
মেরামতি বা আনুষঙ্গিক কাজ চলতেই পারে। কিন্তু রেল আগে থেকে যাত্রীদের সেটা জানায়নি কেন?
এই ব্যাপারে রেলের কোনও কর্তাই কোনও মন্তব্য করতে চাননি। নাগপুরে দু’টি ‘রেল জোন’ রয়েছে। মধ্য রেল এবং দক্ষিণ-মধ্য রেল। কিন্তু কলকাতা থেকে
মুম্বইমুখী ট্রেনগুলি নিয়ন্ত্রণ করে দক্ষিণ-পূর্ব রেল। রেলকর্তাদের একাংশের মতে, বিভিন্ন রেল জোনের কর্তাদের মধ্যে সমন্বয় না-থাকাতেই এই সমস্যা দেখা দিয়েছে। অথচ রেলের নিয়মে বলা রয়েছে, ট্রেনের সময়সূচি পরিবর্তন করা হলে বা পথে ট্রেনের দেরির সম্ভাবনা থাকলে বিজ্ঞাপন দিয়ে যাত্রীদের তা জানিয়ে দিতে হবে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে রেল তা করেনি কেন, তা বোঝা যাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন ওই কর্তারা। রেল বোর্ডের এগ্জিকিউটিভ ডিরেক্টর (তথ্য) চন্দ্রলেখা মুখোপাধ্যায় বলেন, “কেন এমনটা হল, সেই বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হবে।”
দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সৌমিত্র মজুমদার বলেছেন, “হাওড়া থেকে কোনও ট্রেনই দেরি করে ছাড়েনি। আর ওই কাজটিও (নাগপুরে সিগন্যাল মেরামতি) আমাদের জোনে হচ্ছে না।” কিন্তু ট্রেনের দেরি বা মাঝপথে আটকে থাকার ব্যাপারে বিজ্ঞাপন দেওয়া হল না কেন, সেই ব্যাপারে তিনি কোনও মন্তব্য করেননি। রেল সূত্রের খবর, আসন সংরক্ষণের পরিস্থিতি জানার জন্য নির্দিষ্ট নম্বর (১৩৯)-এ ফোন করলে অবশ্য মাঝপথে ট্রেনের দাঁড়িয়ে থাকার কথা বা দেরি হওয়ার কথা জানানো হচ্ছিল। যাত্রীদের বক্তব্য, রেল-কর্তৃপক্ষ কোনও নতুন প্রকল্পের ‘ইট গাঁথা’র অনুষ্ঠানেও কোটি টাকা দিয়ে বিজ্ঞাপন দেন। কিন্তু যাত্রীদের সুবিধার্থে তাঁরা দেরির কথা জানানোর পরিষেবাটুকুও দিতে পারছেন না!


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.