গঙ্গাপাড়ের পরে এ বার কেষ্টপুর খাল। ওই খালের দু’পাড়ে সৌন্দর্যায়নের পাশাপাশি হবে হকারদের ‘পুনর্বাসন’-এর ব্যবস্থাও। বৃহস্পতিবার সল্টলেকে এই পরিকল্পনার কথা জানান রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
কেষ্টপুর খালের দু’পাড়ে নোংরা সাফ করে সেখানে সিঙ্গাপুরের ধাঁচে সৌন্দর্যায়নের কাজ হবে। তৈরি হবে সবুজের মধ্যে হাঁটাচলার জায়গা। ব্যবস্থা হবে খালে নৌকাবিহারের মতো নানা বিনোদনেরও। হকারদের পুনর্বাসনের জন্য রাজ্য সরকারের উদ্যোগেই সেখানে তৈরি হবে বেশ কিছু দোকান এবং খাবারের স্টল। এই তথ্য জানিয়ে পুরমন্ত্রী এ দিন বলেন, “এটি পুনর্বাসন প্রকল্পের একটি পর্যায়ের কাজ।” নগরোন্নয়ন দফতর সূত্রে খবর, প্রাথমিক ভাবে উল্টোডাঙা স্টেশন থেকে ভিআইপি রোড পর্যন্ত কেষ্টপুর খালের উত্তর ও দক্ষিণ পাড়ে পাঁচশো মিটার জুড়ে কাজ শুরু হবে। ওই অংশে প্রকল্প সফল হলে তা দমদম পর্যন্ত সম্প্রসারিত হতে পারে।
কিন্তু কোন অঞ্চলের এবং কত জন হকার সেখানে ঠাঁই পাবেন, তা নিয়ে এখনও আলোচনা হয়নি বলে জানান পুরমন্ত্রী। তবে তিনি বলেন, “আপাতত বিধাননগর ও আশপাশের হকারদের কথাই ভাবা হচ্ছে। কারণ, কলকাতা বা আরও দূরের হকারেরা এখানে আসতে আগ্রহী হবেন না।” প্রকল্পটি যৌথ উদ্যোগে গড়ে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী। |
কেষ্টপুর খাল এখন যে অবস্থায়। — ফাইল চিত্র |
এর আগেও কেষ্টপুর খালপাড়ে সৌন্দর্যায়ন হবে বলে প্রশাসনিক প্রতিশ্রুতির কথা শোনা গিয়েছিল। কিন্তু তা কার্যকর হয়নি। প্রশাসন সূত্রে খবর, সুষ্ঠু পরিকল্পনার অনুপস্থিতি কিংবা অর্থাভাবে সৌন্দর্যায়নের কাজ হয়নি। রাজারহাটে পানীয় জল সরবরাহের জন্য কেষ্টপুর খাল দিয়ে গঙ্গার জল নিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু হয়। খাল সংস্কার করে সেখানে পরীক্ষামূলক ভাবে লঞ্চ চালানোর চেষ্টাও হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত লঞ্চ চলেনি। তার পর থেকে ওই খালের অবস্থা ফের খারাপ হতে শুরু করে। ফের ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়ে খালের জল। দুই পাড়ে জমতে থাকে জঞ্জালের স্তূপ। বিমানবন্দর থেকে কলকাতায় ঢোকার মুখে ওই নোংরা খালের স্থায়ী সংস্কার হলে, তা এই শহরের পক্ষেও স্বস্তিদায়ক হবে।
এ দিকে, প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের ‘আপত্তি’তে আটকে থাকা গঙ্গাপাড়ের সৌন্দর্যায়নের কাজের জট খুলতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ কে অ্যান্টনি। বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার পরে এ কথা জানান কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। তিনি জানান, বাজেকদমতলা থেকে প্রিন্সেপ ঘাট এবং মিলেনিয়াম পার্ক থেকে বাজেকদমতলা পর্যন্ত এলাকায় গঙ্গার ধারে ‘ডেস্ক স্ল্যাব’ করার জন্য প্রথমে অনুমোদন দেয়নি প্রতিরক্ষা দফতর। তাতে সৌন্দর্যায়নের কাজ আটকে যায়। তবে এ দিন প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে সদর্থক কতাবার্তা হয়েছে। সদ্য সমাপ্ত সৌন্দর্যায়ন প্রকল্পের কিছু ছবি দেখে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী খুশি হয়েছেন বলে জানান মেয়র। |