সালিশি সভাকে কেন্দ্র করে কংগ্রেস ও সিপিএমের সংঘর্ষের জেরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে মালদহের চাঁচলের খরবা গ্রাম পঞ্চায়েতের কাশিমপুর-উমরপুর এলাকা। সোমবার রাতে ওই সংঘর্ষের ঘটনায় জখম হয়েছেন দু’পক্ষের মোট ১২ জন। সভা চলাকালীন সিপিএমের এক কর্মীকে ছুরি মারার অভিযোগ উঠেছে গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন কংগ্রেস সদস্যের বিরুদ্ধে। জখমদের মধ্যে ৩ জনকে চাঁচল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় অভিযুক্ত কংগ্রেসের এক বুথ সভাপতি-সহ ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কংগ্রেস ও সিপিএম পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এলাকা দখল করতে সালিশি সভার আড়ালে হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে দু’পক্ষই। দু’তরফেই পুলিশের কাছে হামলার অভিযোগ করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, ধৃতেরা হলেন মোজাম্মেল হক, আবদুল খালেক, আবদুল গনি ও সামাদ আলি। ধৃত সামাদ আলি ছাড়া প্রত্যেকেই সক্রিয় কংগ্রেস কর্মী। আবদুল গনি উমরপুর বুথ কমিটির সভাপতি। মালদহের পুলিশ সুপার জয়ন্ত পাল বলেছেন, “সালিসি সভাকে ঘিরে একটা গোলমাল হয়েছে। দু’পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা হয়েছে। ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।”
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাক্তন কংগ্রেস সদস্য জহুর আহমেদ এলাকায় নাকি প্রচার করেন যে সিপিএম কর্মী মহম্মদ মুশা তাকে খুন করতে চাইছেন। সে কথা তাকে মুজির শেখ বলেছেন বলেও তিনি প্রচার করেন বলে অভিযোগ। তাকে জড়িয়ে মিথ্যা রটনা হচ্ছে বলে মুজির শেখ গ্রাম্য বিচার কমিটির কাছে বিচার চান। তাতেই ওই রাতে সালিশি সভা বসে। সেখানেই কংগ্রেস কর্মী জহুর আহমেদ সিপিএম কর্মী রুহুল আমিনকে ছুরি মারেন বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
কংগ্রেসের অভিযোগ, উমরপুর নতুন বুথ হয়েছে। লোকসভা নির্বাচনে সিপিএম ওই বুথে ৩টি ভোট বেশি পেয়েছিল। তারপর থেকেই এলাকা দখলে রাখতে নানা ভাবে তারা সন্ত্রাস চালাচ্ছে। প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য জহুর আহমেদ ওই বুথের ব্লক প্রতিনিধি। তাঁর নেতৃত্বেই কংগ্রেস ওখানে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। তাই সালিশি সভার নাম করে ডেকে জহুর-সহ কয়েকজনকে সিপিএম কর্মীরা প্রাণে মারতে চেয়েছিলেন। কংগ্রেস নেতা তথা খরবা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মহবুবুল হক বলেন, “এলাকা দখলে রাখতে সালিশি সভার আড়ালে পরিকল্পিত ভাবে সিপিএম কর্মীরা হামলা চালিয়েছে। জহুর ও তার সঙ্গীদের মারাই ওদের উদ্দেশ্য ছিল। কোনও ক্রমে তাঁরা প্রাণে বেঁচেছেন। এখন মিথ্যা মামলা সাজানো হচ্ছে।” সিপিএমের চাঁচল লোকাল কমিটির সম্পাদক অমল দাসের পাল্টা অভিযোগ, “এলাকায় কংগ্রেস মাটি হারাচ্ছে। তাই সন্ত্রাস করে এলাকা দখলে রাখতে চাইছে। হামলার পরিকল্পনা করেই ওরা সালিশি সভায় গিয়েছিল। এখন মিথ্যা অভিযোগ করছে।” |