মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রক্তের সংকট দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন যেখানে হাসপাতালে বিভিন্ন গ্রুপের ৭০-৭৫ ইউনিট রক্তের প্রয়োজন সেখানে মঙ্গলবার ব্লাড ব্যাঙ্কে মাত্র ১১ ইউনিট এবি পজিটিভ ও এ পজিটিভ রক্ত ছিল। রক্তের এই সংকটের জেরে থ্যালাসেমিয়া রোগীদের অস্ত্রোপচার বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এক ইউনিট রক্তের জন্য রোগীদের পরিবারের লোকেদের হন্যে হয়ে ঘুরতে হচ্ছে। খুঁজতে হচ্ছে ডোনার। যারা ডোনার জোগাড় করতে পারছেন না তাদের বাড়তি টাকা দিয়ে বাইরে থেকে ডোনার জোগাড় করতে হচ্ছে। সমস্যার কথা স্বীকার করে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক স্বপন কুমার ঝরিয়াত বলেন, “যথেষ্ট পরিমাণ রক্তদান শিবির না হওয়ায় রক্তের সংকট দেখা দিয়েছে। আশা করছি, গরম কমার পরে রক্তদান শিবির শুরু হলেই সমস্যা মিটবে। যেখানে ৮০ ইউনিট রক্ত পাওয়ার কথা সেখানে ২০ ইউনিট রক্ত পাচ্ছি। রক্তের সংকট মেটানোর জন্য জেলার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলিকে এগিয়ে আসার অনুরোধ করা হয়েছে।” এদিকে মালদহ মেডিকেল কলেজে রক্তের সংকটের জন্য রাজ্য সরকারকে দায়ী করেছেন মালদহ ডিস্ট্রিক্ট ভলান্টারি ব্লাড ডোনারস ফোরামের সম্পাদক সৌমিত্র দত্ত। তিনি বলেন, “প্রতি বছর রক্তের সংকট মেটাতে সরকার বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলিকে ডেকে সচেতনা বাড়ানোর জন্য নানা পরিকল্পনা হাতে নেয়। এ বছর রাজ্য সরকারের এমন কোনও পরিকল্পনা নেই বলে জানতে পেরেছি। মেডিক্যাল কলেজে রক্তের সঙ্কটের জন্য জেলার ৩০০ থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত রোগীরা সঙ্কটে পড়েছে। এদিন দুপুরে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে গিয়ে দেখা গেল রক্তের জন্য রোগীর আত্মীয়রা ভিড় জমিয়েছেন। পরিশ্চন্দ্রপুরর শীতলপুর গ্রামের মোস্তাক আলম বলেন, “দাদা সুলতান আলি ৭ দিন ধরে মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি। রক্তের প্রয়োজন। ৮ তারিখ থেকে ও পজেটিভ রক্তের জন্য ব্লাড ব্যঙ্কে ঘুরছি। রক্ত পাচ্ছি না।” গাজলের বাঁশবাড়ির রবীন্দ্র মন্ডল বলেন, “ভাইপো রমণীকে সাপে কেটেছে। রক্তের দরকার। ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্ত নেই। বাইরে থেকে ডোনার এনে রক্ত জোগাড় করেছি।” |