নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
ধস পড়ে ফের বিপর্যস্ত হয়ে পড়ল সিকিম। দুর্ভোগে পড়লেন দেশি বিদেশি বহু পর্যটক। মঙ্গলবার সকালে পূর্ব সিকিমের জহরলাল নেহেরু মার্গের নয় মাইল এলাকায় ওই ধস নামে। গ্যাংটক থেকে এলাকাটির দূরত্ব প্রায় ১৫ কিলোমিটার। ওই রাস্তা দিয়েই ছাঙ্গু লেক এবং নাথুলা যেতে হয়। সকালে ধসের আগে ছাঙ্গুতে চলে যায় পর্যটক বোঝাই প্রায় ৩০০ গাড়ি। ফেরার পথে আটকে পড়েন প্রায় ১৫০০ পর্যটক। পাশাপাশি, দিনভর কোনও গাড়ি ছাঙ্গু বা নাথুলাতে যেতে পারেনি। রাত ৯টা’র পরে রাস্তা খোলা হলে গাড়িগুলি গ্যাংটকে পৌঁছায়। পূর্ব সিকিমের জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, “ঘটনার পরেই প্রশাসন, পূর্ত দফতর এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মীরা কাজ শুরু করেছেন। রাতভর বৃষ্টির জেরে ঘটনাটি ঘটেছে। রাস্তা স্বাভাবিক করতেও তাই কিছুটা সময় লেগেছে।” আগামী ৪৮ ঘন্টা সিকিমে ভারী বৃষ্টিপাত হবে বলে কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের তরফে জানানো হয়েছে। দফতরের সিকিমের আধিকারিক গোপীনাথ রাহা বলেন, “সিকিমে বৃষ্টি চলছে। আগামী দুই দিনই জোর বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই বৃষ্টির জেরেই ধস নামছে। অতীতেও এমনটা হয়েছে।” সম্প্রতি জহরলাল নেহেরু মার্গের ২৭ মাইল এলাকায় ভয়াবহ ধস নামে। দিনভর কাজের পরেও ওই রাস্তা খুলতে পারেনি। প্রশাসন। রাতে কয়েক হাজার পর্যটককে উদ্ধার করে লাগোয়া সেনা ছাউনিতে আশ্রয় দেওয়া হয়। ওই দিনই শিলিগুড়ি থেকে সিকিমগামী ৩১-এ জাতীয় সড়কের মাঝিটারে ধস নেমে গভীর রাত অবধি রাস্তা বন্ধ হয়ে থাকে। এ ছাড়া পূর্ব এবং উত্তর সিকিমের বিভিন্ন প্রান্তে ধস নামার ঘটনা ঘটেছে। লাচেন এবং লাচুং-এর রাস্তাও বন্ধ হয়েছিল। ধসে রাস্তা মাটি ধসে পড়ে যায় লোহার বেলি ব্রিজও। সিকিম প্রশাসনের কয়েকজন আধিকারিক জানান, গত বছর ভূমিকম্পের জেরে পাহাড়ের বিভিন্ন অংশে ছোটবড় ফাটল দেখা দিয়েছে। এতে বৃষ্টির জল ঢুকেই মাটি কাদা বার হয়ে আসায় চলতি মরশুমে ধস নামছে বলে অনুমান। ট্রাভেল এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব সিকিমের সভাপতি লুকেন্দ্র রসইলি বলেন, “রাস্তাটি দিনভর বন্ধ ছিল। রাতে রাস্তাটি যান চলাচলের উপযুক্ত হয়েছে।” এ দিন ৯ মাইলের যে এলাকায় ধস নেমেছে সেখানে পাহাড়ের ঝোরার জল রাস্তার উপর দিয়ে যাওয়ার নালা রয়েছে। রাতভরের টানা বৃষ্টিতে ওই এলাকাটি বসে যায়। তার পরে পাহাড় থেকে মাটি, ছোটপাথর, কাদা নেমে এসে রাস্তাটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এর আগে রাস্তাটি ঠিক থাকার সময় প্রায় ৩০০ গাড়ি পর্যটক ছাঙ্গু এবং নাথুলার দিকে চলে যায়। পরে ধস নামায় অন্য পর্যটকেরা আর যেতে পারেনি। ইস্টার্ন হিমালয়ান ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সম্রাট সান্যাল বলেন, “রাস্তা বন্ধ থাকায় বহু পর্যটক ছাঙ্গু যেতে পারেননি। গ্যাংটকে কেন্দ্র করেই তাঁরা দিনভর ঘুরেছেন।” |