মমতার প্রতি আস্থার বার্তাও
সুর না চড়িয়েই তৃণমূলের সমালোচনায় মোর্চা নেতারা
ক দিকে, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর সমালোচনা। অন্য দিকে, ১৬ জুনের (যা ১৪ তারিখ হওয়ার কথা ছিল) বৈঠকের দিকে তাকিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি আস্থাজ্ঞাপন। পাহাড়ে সংগঠন বাড়ানোর জন্য তৃণমূলকে ‘স্বাগত’ও জানানো।
দলের নেতা বিশাল ছেত্রীর তৃণমূলে যোগ দেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সেই কার্শিয়াংয়ের পানিঘাটাতেই পাল্টা সভা করে এ ভাবে ‘নরমে-গরমে’ প্রতিক্রিয়া জানাল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। বজায় রাখল ভারসাম্যের রাজনীতি। সোমবার ওই একই জায়গায় উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের উপস্থিতে মোর্চা, জিএনএলএফ এবং গোর্খা লিগ থেকে ৯৭২ জন নেতা-কর্মী তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। অস্বস্তিতে পড়ে তার পাল্টা হিসেবে মঙ্গলবার পানিঘাটায় সভার ডাক দেয় মোর্চা।
সভায় মোর্চার প্রচার সচিব তথা কালিম্পংয়ের বিধায়ক হরকাবাহাদুর ছেত্রী বলেন, “পাহাড়ের সাত লক্ষ লোকের মধ্যে ২০০ জন তৃণমূলে গিয়েছে। তাতে মোর্চার কোনও ক্ষতি হবে না। আর যাঁরা তৃণমূলে গিয়েছেন, তাঁরা সুবিধাবাদী। প্রত্যেক দলে ছ’মাস করে থাকার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁদের। তৃণমূলেও ছ’মাসের বেশি তাঁরা থাকবেন কি না, সংশয় রয়েছে। তৃণমূল নেতৃত্ব যদি তাঁদের রাখতে পারেন ভাল।” পাশাপাশিই তাঁর মন্তব্য, “পাহাড়ে কংগ্রেস, সিপিএমের সংগঠন রয়েছে। তৃণমূলকেও আমরা স্বাগত জানাচ্ছি।”
পানিঘাটায় মোর্চার সভায় বক্তৃতা দিচ্ছেন বিধায়ক হরকাবাহাদুর ছেত্রী। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
কার্শিয়াংয়ের মোর্চা বিধায়ক রোহিত শর্মা বলেন, “জিটিএ নিয়ে পাহাড়ের মানুষ ক্ষুব্ধ। আগামী ১৬ জুন মুখ্যমন্ত্রী (মমতার দিল্লি সফরের জন্য বৃহস্পতিবারের নির্ধারিত বৈঠক পিছিয়েছে) আমাদের সময় দিয়েছেন। সে সময় সভা করে ঠিক করেননি উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর তাঁকে ভর্ৎসনা করা প্রয়োজন। তাঁকে মন্ত্রিত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়াও উচিত। আগের সব ভোটে পাহাড়ে যাঁদের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে, তাঁদের নিয়েই সংগঠন করতে চাইছেন গৌতম দেব।” এই প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে চাননি উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী। আগামী ১৬ জুন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের ব্যাপারে যে তাঁরা আশাবাদী, এ দিন অবশ্য তা-ও জানিয়েছেন হরকাবাহাদুর। তাঁর কথায়, “মুখ্যমন্ত্রী পাহাড়ের ভাল করতে চান। উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন কমিটির রিপোর্ট নিয়ে তাঁকে ভুল বোঝানো হয়েছে। ১৬ জুনের বৈঠকে আমরা সব কথা তাঁকে জানাব। মুখ্যমন্ত্রী আমাদের কথা মানতেও পারেন। ওই দিনের বৈঠকের উপরেই নির্ভর করছে আমরা পরবর্তী আন্দোলনে যাব কি না।” মোর্চা সূত্রের খবর, শ্যামল সেন কমিটির রিপোর্ট নিয়ে ঘরে-বাইরে অস্বস্তির মধ্যেই সোমবার তৃণমূল পাহাড়ে নিজেদের শক্তি বাড়িয়ে নেওয়ায় চাপ আরও বেড়েছে। এ দিন পাল্টা সভা করে মোর্চা নেতৃত্ব তাই কর্মী-সমর্থকদের মনোবল বাড়ানোর চেষ্টা করেছেন। আবার সরাসরি তৃণমূলের সঙ্গে বিরোধে গেলে আসন্ন বৈঠকে তার প্রভাব পড়তে পারে, এই আশঙ্কায় মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি আস্থাও প্রকাশ করতে হয়েছে মোর্চা নেতাদের। তবে, তৃণমূলের পাল্টা হিসেবে সভা করা হয়নি বলেও দাবি রোহিত শর্মার। তিনি বলেন, “বর্তমানের পরিস্থিতি জানাতে সভা করা হয়েছে।” গৌতমবাবুও বলেছেন, “পাহাড়ে কারও সঙ্গে আমাদের বিরোধ নেই। পাহাড়ের কিছু মানুষ তৃণমূলের প্রতি আগ্রহী হওয়ায় তাঁদের দলে নেওয়া হয়েছে। মোর্চার সঙ্গে আমাদের ভাল সম্পর্ক।”
এ দিনের সভায় মোর্চার প্রচার সচিব অভিযোগ করেন, মোর্চা বিধায়কদের ‘অন্ধকারে রেখে’ ওই রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। তিনি বলেন, “অন্তত ১৫০ মৌজা অন্তর্ভুক্ত হবে বলে আশা করেছিলাম। ১০০টি পেলেও ঠিক ছিল। কিন্তু ৫টি মৌজা মেনে নেওয়া যায়নি।” হরকাবাহাদুরের আরও প্রশ্ন, “রিপোর্ট জমা হওয়ার ২৪ ঘন্টার মধ্যে ৩৫৭ পাতার রিপোর্ট কী ভাবে পড়ে মুখ্যসচিব সমর ঘোষ সাংবাদিক বৈঠক করে সব জানিয়ে দিলেন?” এ দিনই মোর্চার বিভিন্ন শাখা সংগঠনের পক্ষে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন কমিটির রিপোর্টের বিরোধিতা করে মুখ্যমন্ত্রীকে ফ্যাক্স পাঠানো হয়। দার্জিলিংয়ের জেলাশাসককেও স্মারকলিপি দিয়ে ওই রিপোর্টের বিরোধিতার কথা জানান মোর্চা নেতৃত্ব।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.