গান, গল্প, কবিতা কিংবা উপন্যাস। বাংলা সাহিত্যের প্রতিটি ক্ষেত্রে জীবন্ত হয়ে রয়েছে ‘লুকোচুরি’ শব্দটি। কিন্তু চর্চার অভাবে হারিয়ে যেতে বসেছে আমাদের ছেলেবেলার ‘লুকোচুরি’ নামক খেলাটি। খড়ের পালুই, ঝোঁপ-জঙ্গল, পোড়ো বাড়ির মতো জায়গায় নিজেকে লুকিয়ে ফেলে চলত খেলা। আর আড়াল থেকে কচিকাঁচাদের গলায় শোনা যেত ‘কুক-কুউক-কুকই’ বা ‘ধাপ্পা’-র মতো কয়েকটি বিশেষ শব্দ। আর আজ ওই খেলার পাশাপাশি হারিয়ে যেতে বসেছে ওই বিশেষ শব্দগুলোও। |
১০-১৫ জন ছেলেমেয়ে একত্রে অথবা পৃথক ভাবে ‘লুকোচুরি’ খেলা চলে। খেলার জন্য প্রয়োজন নিজেকে লুকোনোর উপযুক্ত জায়গা। প্রথমে একজনের মোড় নির্ধারণ করা হয়। কেউ বা ‘উবু-দশ-কুড়ি’ কেউ বা নীচের এই ছড়া কেটেও মোড় নির্ধারণ করে—
‘ওই দেখ দোতলা বাড়ি, কাক বসেছে সারি সারি
ওগো মামা পায়ে পড়ি, বৌ এনে দাও তাড়াতাড়ি
বৌ কেন কালো, নাক কেটে ফেল
নাকে নাই রক্ত, শিবানীর ভক্ত’
নিয়ম হল, মোড়ধারী এক জায়গায় দাঁড়িয়ে এক থেকে একশো পর্যন্ত গণনা করবে। আর ওই সময়ের মধ্যে বাকি খেলোয়াড়দের খড়ের গাদা, ঝোঁপ-জঙ্গল বা পোড়ো বাড়ির আড়ালে আলাদা আলাদা ভাবে নিজেকে লুকিয়ে ফেলতে হবে। এরপর লুকনো জায়গা থেকে খেলোয়াড়রা ‘কুক’ কিংবা ‘কুকই’ বলে চিৎকার করে উঠবে। ওই চিৎকার শোনার পর খেলোয়াড়দের খুঁজে বের করার পালা মোড়ধারীর। সবার আগে যাকে মোড়ধারী খুঁজে পাবে তার নাম-সহ ‘আইস-বাইশ’ বলে চিৎকার করে উঠবে। এরপর একে একে অন্যদের খুঁজে বের করতে হবে মোড়ধারীকে। সবাইকে খুঁজে বের করতে পারলেই মোড় ঘোচে মোড়ধারীর। তখন ‘আইস-বাইশ’ চিহ্নিত খেলোয়াড়কে মোড় খাটতে হয়।
কিন্তু প্রথমজনের পর অন্যদের খোঁজার সময় যদি কোনও খেলোয়াড় মোড়ধারীর নজর এড়িয়ে তার পিঠে চাপড় মেরে ‘ধাপ্পা’ বলে চিৎকার উঠতে পারে, তাহলে আর মোড় ঘোচে না মোড়ধারীর। সেক্ষেত্রে প্রথম খুঁজে পাওয়া খেলোয়াড়ও খেলায় সামিল হওয়ার সুযোগ পায়। ফের একই প্রক্রিয়ায় মোড় খাটতে হয় মোড়ধারীকে।
ময়ূরেশ্বরের কুলিয়াড়া গ্রামের আইসিডিএস কর্মী অঞ্জলি দাস, সিউড়ির পুরন্দরপুরের সজল প্রামাণিকরা জানান, ছোটবেলায় প্রচুর ‘লুকোচুরি’ খেলা খেলেছেন। এখন গান-গল্প-কবিতা পড়তে পড়তে তাঁদের মনে পড়ে যায় সেই স্মৃতি। তাঁদের কথায়, “এখনও মাঝে-মাঝেই অস্ফুটে ‘কুক’ কিংবা ‘ধাপ্পা’ বলে চিৎকারও করে উঠি। কিন্তু বর্তমান প্রজন্মের মুখে ওই শব্দগুলি আর শুনতে পাই নি। খেলাটাই হারিয়ে গেল।”
|
পুরুলিয়ার কাশীপুরের পাড়াশোল নিউ তরুণ সঙ্ঘের উদ্যোগে আয়োজিত একদিনের নৈশ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হল কাশীপুর নিউ অগ্রগামী ক্লাব। রানার্স হয়েছে ওই ব্লকেরই কালাঝোর ক্রিকেট ক্লাব। ফাইনালে নিউ অগ্রগামী নির্দিষ্ট ছয় ওভারে প্রথমে ব্যাট করে ৪ উইকেটে ৭৪ রান তোলে। জবাবে ব্যাট করতে নেমে কালাঝোর ৫.২ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে ৪৩ রান করে। ম্যন অব দ্য ম্যচ হন অগ্রগামীর হিমন কর। তিনি ১২ বলে ৩৭ রান করেন। গত ৯ জুন অনুষ্ঠিত এই খেলায় মোট ৩২টি দল যোগ দিয়েছিল বলে উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন। |