ভোট নামচা
দুই এজেন্টের গল্প
গত বারে তিনিই ছিলেন প্রার্থী। এ বার নির্বাচনী এজেন্ট। সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য প্রতীপ মুখোপাধ্যায় দলের প্রার্থী নীলাঞ্জন দাশগুপ্তের নির্বাচনী এজেন্ট হয়ে সকাল থেকে বুথে বুথে ঘুরলেন। কর্মীদের সজাগ থাকার পরামর্শ দিলেন। আর চেনামুখের ভোটারদের দেখে হাসি ছড়ালেন। গরম নিয়ে লিখে ফেললেন ছড়া-এসএমএস, ‘প্রতিবারেই হবে কেন গরম কালে ভোট/ তা ঠেকাতেই কি গড়তে হবে মানুষের জোট?’ ঘাম মুছতে মুছতে পাঠিয়ে দিলেন পরিচিতজনদের। অন্য দিকে, তৃণমূল প্রার্থী মিনতি মিশ্রের নির্বাচনী এজেন্ট ছিলেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি ব্রজবাসী বিশ্বাস। মিনতিদেবীর স্বামী প্রয়াত বিধায়ক কাশীনাথ মিশ্র আগে যখন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতেন, তখনও বেশির ভাগ সময় ব্রজবাবু একই ভূমিকায় থাকতেন। এ বার অবশ্য তাঁর দায়িত্ব কিছুটা বেড়ে গিয়েছিল। তাঁর কথায়, “কাশীবাবু অভিজ্ঞ মানুষ ছিলেন। কোনও সমস্যা হলে দু’জনে মিলে সিদ্ধান্ত নিতাম। কিন্তু কাশীবাবু এখন নেই। বৌদি রাজনৈতিক ভাবে অনভিজ্ঞ। তাই আমার দায়িত্ব বেড়ে গিয়েছে।”

ভরসা তোয়ালে
একে অকাল নির্বাচন। তার উপর ভরা গ্রীষ্ম। দরদরে ঘামে কাহিল ভোটার থেকে ভোট কর্মীরা। স্বস্থিতে ছিলেন না প্রার্থীরাও। সিপিএম প্রার্থী নীলাঞ্জন দাশগুপ্ত সকাল থেকে কর্মীদের নিয়ে বুথে বুথে ঘুরছিলেন। তাঁর মাথায় টুপি। তবে দলের কর্মীরা কাঁধে নিয়েছিলেন তোয়ালে। নীলাঞ্জনবাবুর সঙ্গী দলের জেলা কমিটির সদস্য সুবিকাশ চৌধুরী বলেন, “এই গরমে ভরসা তো তোয়ালেই। মাথা ঢাকা যায়, আবার ঘামও মোছা যায়।” এর পরেই তাঁর সংযোজন, “তবে শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা, জনতাই বামফ্রন্টের ভরসা।”

উপবাস ভেঙে ভোট
বুথমুখো না হয়ে এ বার নির্বাচনের সকালে অনেক মহিলা ছিলেন মন্দিরমুখী। মঙ্গলচণ্ডীর পুজো সেরে বাড়ি ফিরে উপবাস ভেঙে তারপর তাঁরা ভোট দিতে যান। অন্য বার সকাল সকাল ভোট পর্ব সেরে তাঁরা বাড়ির হেঁসেলে ঢুকতেন। এ বার উল্টো। বাঁকুড়া শহর থেকে গ্রামাঞ্চলে একই ছবি দেখা গিয়েছে। কয়েকজন মহিলা বলেছেন, “আগে মঙ্গলচণ্ডীর পুজো। তারপরে ভোট!”

মুখোমুখি
একজন মন্দিরে প্রার্থনা জানাতে যাচ্ছিলেন। অন্যজন রাস্তা পার হচ্ছিলেন। দু’জনেরই ছিল পরীক্ষা। ওঁরা ভোট প্রার্থী। মঙ্গলবার সকালে নতুনগঞ্জের জিনাসিনি মন্দিরে যাচ্ছিলেন তৃণমূল প্রার্থী মিনতি মিশ্র। রাস্তায় তাঁর সঙ্গে দেখা সিপিএম প্রার্থী নীলাঞ্জন দাশগুপ্তের। নীলাঞ্জনবাবু মোটরবাইক থামিয়ে এগিয়ে গেলেন। বললেন, “কাকিমা ভাল আছেন?” হাসিমুখে মিনতিদেবী, “ভাল আছি। তুমি ভাল তো?”

চাই ওআরএস
সকাল থেকে বুথে বুথে তিনি ভোটকর্মীদের ওআরএস বিলি করছিলেন। বিকেল পাঁচটায় জেলা গ্রন্থাগারের বুথ থেকে বের হতেই সেই মহুয়া চট্টোপাধ্যায়কে ঘিরে ধরেন পরিচিত জনেরা। বলেন, “সকাল থেকে অনেককেই ওআরএস খাওয়াচ্ছ। এই গরমে ভোট দিয়ে আমরাও কাহিল। আমাদেরও ওআরএস দাও।” মহুয়াদেবীর জবাব, “ভোটও শেষ। ওআরএস শেষ। তোমরা বরং বাড়ি গিয়ে নুন-চিনির জল গুলে খাও।”

আঙুলে প্রথম কালি
বনদফতরের অফিসের বুথ থেকে বেরিয়ে রানিগঞ্জ মোড়ের প্রিয়া সেন আঙুলের লাগানো কালি ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখছিলেন। প্রচণ্ড গরমেও মধ্যেও তাঁর চোখে-মুখে লেগেছিল প্রথবার ভোট দেওয়ার উচ্ছ্বাস। বললেন, “অকাল ভোট তো কী? প্রথমবার ভোট দিলাম। মনে হচ্ছে এ বার সত্যিকারের বড় হয়ে গেলাম!”

কুলপিতে মন নেই
ভরদুপুরে জেলা গ্রন্থাগারের বাইরে গাছের ছায়ায় কুলপি মালাই নিয়ে খদ্দেরের অপেক্ষায় ছিলেন আশিস রজক। বেজার মুখে বলেন, “এই গরমে ভেবেছিলাম কুলপির ভাল বিক্রি হবে। কিন্তু এ বার তো ভোট দিতেই কম লোক এল। কুলপি বিক্রিও জমল না।”
তথ্য: রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.