কল্যাণী পুরসভায় দলীয় পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনল তৃণমূলের ১০ জন কাউন্সিলর। ফলে নদিয়ার ওই পুর বোর্ডে ক্ষমতার সমীকরণ বদলে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
সোমবার ওই পুরসভার উপপ্রধান সুশীল তালুকদার-সহ দলের ১০ জন কাউন্সিলর পুরপ্রধান প্রদীপকুমার শূরের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনে স্থানীয় মহকুমাশাসককে চিঠি দিয়েছিলেন। দল বিরোধী ওই কাজের জন্য মঙ্গলবারই ‘বিদ্রোহী’ কাউন্সিরদের অন্যতম সুব্রত চক্রবর্তীকে দল থেকে বহিষ্কারের কথা ঘোষণা করেন কল্যাণীর তৃণমূল বিধায়ক রমেন্দ্রনাথ বিশ্বাস। তিনি জানান, ‘দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের’ জন্যই এই ‘শাস্তি’। কিন্তু শুধু তাঁর উপরেই ‘কোপ’ পড়ল কেন? রমেনবাবু বলেন, “অন্য কাউন্সিলররা তাঁদের অবস্থান থেকে না সরলে তাঁদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” কল্যাণী পুরবোর্ড তৃণমূলের দখলে। ২০ ওয়ার্ডের ওই পুরসভায় ১৪টি আসনে জয়ী হয়ে বোর্ড দখল করেছিল তৃণমূল। বাকি ৬টি আসনের ৫টি বামফ্রন্টের এবং একটি আসনে জয়ী হয়েছিল কংগ্রেস। তবে সুশীলবাবু বলেন, “সুব্রতবাবুকে বহিষ্কার মেনে নেওয়া যায় না। আমরা ওঁর পাশে আছি।” পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে তাঁর অভিযোগ, “আমাদের কথাই শোনেন না প্রধান। নিজের ইচ্ছেমতো কাজ করেন। উন্নয়ন হচ্ছে না। বার বার দলীয় নেতৃত্বকে এ ব্যাপারে জানানো হলেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি দল। আমরা এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছি। আমরা আমাদের অবস্থান থেকে নড়ছি না।”
সুশীলবাবু জানান, অনাস্থার সিদ্ধান্তে দল থেকে বহিষ্কার করা হলেও অন্য কোনও দলে যোগ দেবেন না তাঁরা। সুশীলবাবু বলেন, “দল থেকে বহিষ্কার করা হলে আলাদা মঞ্চ গঠন করে উন্নয়নের কাজ করব।” একই কথা বললেন সুব্রতবাবুও। তিনি বলেন, “সিপিএমকে হারিয়ে বোর্ড গঠন করেছি। কিন্তু প্রধান সিপিএমের কথামতোই পুরসভা পরিচালনা করছেন। আমি এর প্রতিবাদ করেছি। এখন থেকে আমি সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করব।” আরও এক তৃণমূল কাউন্সিলর কাজরী ভাঁদর চক্রবর্তী বলেন, “আমাদের সঙ্গে সব সময় খারাপ ব্যবহার করেন প্রধান। অনাস্থার সিদ্ধান্ত থেকে সরছি না।”
যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে পুরপ্রধান বলেন, “প্রতি মাসে বোর্ড মিটিং ডেকে সকলের সঙ্গে কথা বলে কাজ করেছি। এলাকার উন্নয়নও তো হয়েছে। এর পরে যা বলার দল বলবে।” কল্যাণী শহর কংগ্রেসের সভাপতি ও কাউন্সিলর সোমনাথ বেহারা বলেন, “ওঁরা যা শুরু করেছেন তাতে বামবিরোধীদের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। শহরের উন্নয়ন থমকে গিয়েছে।” মহকুমাশাসক শৈবাল চক্রবর্তী বলেন, “অনাস্থার চিঠি পেয়েছি। ১০ জন তৃণমূল কাউন্সিলর পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছেন।” |