স্টিফেন অ্যান্ডারসেন। ইউরো শুরু হওয়ার আগে এই নামটা নিয়ে সম্ভবত একবারও ভাবেননি ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। নিজের শটের সামনে বিশ্বের তাবড়-তাবড় গোলকিপারদের ‘দুর্দশা’ দেখতে যিনি অভ্যস্ত, তিনি কেন-ই বা মাথা ঘামাবেন দ্বিতীয় সারির এক গোলকিপারকে নিয়ে? টিমের এক নম্বর কিপার টমাস সোরেনসেন ফিট থাকলে ডেনমার্ক কোচ মর্তেন ওলসেন তাঁকে ডাকতেন কি না সন্দেহ!
কিন্তু ‘সি আর সেভেন’-কেও ভাবতে হচ্ছে। আর তাঁকে ভাবাচ্ছে রবেনদের বিরুদ্ধে বারের নীচে অ্যান্ডারসেনের দুর্ধর্ষ পারফরম্যান্স। এ বার ইউরোয় নিজের জাত চেনানোর শেষ সুযোগ রোনাল্ডোর সামনে। হারলে পর্তুগালের পক্ষে আর ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন। রোনাল্ডোর সতীর্থ নানি তো খোলাখুলি সতর্কতা জারি করে রাখছেন অ্যান্ডারসেন নিয়ে। বলে রাখছেন, “গোল করেই শুধু ম্যাচ জেতা যায়। আর ডেনমার্ক গোল বাঁচানোয় ভালই রপ্ত।”
বিশেষজ্ঞদের মত হচ্ছে, রবেন-ফান পার্সিদের বিরুদ্ধে ড্যানিশ ডিনামাইটদের এক গোলে জয়ের পিছনে যদি পঞ্চাশ ভাগ কৃতিত্ব থাকে ফরোয়ার্ড লাইনের, তা হলে বাকি পঞ্চাশ শতাংশ কৃতিত্ব দিতে হবে ডেনমার্ক কিপার অ্যান্ডারসেনকে। একবার রবেনের একটা শটেই যা মৃদু কম্পন ধরা পড়েছে ডেনমার্ক কিপারের মধ্যে। বাকি সময়ে তিনি দুর্ভেদ্যই ছিলেন। অ্যান্ডারসেনের নিজের বক্তব্য, “কোনও সন্দেহ নেই এই ম্যাচটা আমার কেরিয়ারই পাল্টে দিয়েছে। ওদের পার্সি ছিল, রবেন ছিল, হান্টেলার ছিল। সব সামলে ম্যাচ জেতাটা যথেষ্ট কৃতিত্বের।” |
ব্রাজিলের বিরুদ্ধে ইউরোর প্রস্তুতি ম্যাচে খেলতে গিয়ে চোট পান ডেনমার্কের এক নম্বর কিপার সোরেনসেন। কোচ ওলসেনের সুপারিশে তখন টিমে অর্ন্তভুক্তি হয় অ্যান্ডারসেনের। ক্লাব ফুটবলে যিনি আঁভিয়ার প্লেয়ার। এবং মনে করা হচ্ছে, পতুর্গালের সামনে আসল বাধা তিনিই হতে পারেন। নানি আবার বলেছেন, “ওরা আগের ম্যাচে দেখিয়েছে কতটা বিপজ্জনক হতে পারে।” শেষ বার দু’দেশের সাক্ষাৎ ইউরো ২০১২-র যোগ্যতাঅর্জনকারী রাউন্ডে। যেখানে ডেনমার্ক জিতেছিল ২-১। যার জন্য প্লে অফে যেতে হয়েছিল রোনাল্ডোদের। সে বার ইনজুরি টাইমে তিরিশ মিটরা দূর থেকে ফ্রিকিকে গোল করে পর্তুগালের মুখরক্ষা করেছিলেন রোনাল্ডো। সে দিন গোলে থাকা সোরেনসেনর জায়গায় থাকতে চান না অ্যান্ডারসেন। যিনি নিজেই বলছেন, “ওটা রোনাল্ডোর পা থেকে একটা স্পেশ্যাল কিক বেরিয়েছিল। শেষ মুহূর্তে বলটা সোয়ার্ভ করে নীচু হয়ে যায়। ও রকম শট না এলেই ভাল হয়। আরও ভাল হয়, বক্সের বাইরে ওরা ফ্রি কিক না পেলে। ওই ধরণের শটের সামনে প্রস্তুতি নেওয়া খুব কঠিন।”
অ্যান্ডারসেনই যতটুকু যা ভয় পাচ্ছেন ‘সি আর সেভেন’কে। বাকিদের সেটুকুও হেলদোল নেই। বরং ডেনমার্ক ডিফেন্ডার সাইমন কেয়ারের মতো কেউ কেউ বলে রাখছেন, “রোনাল্ডোর ব্যক্তিগত স্কিল দারুণ মেনে নিচ্ছি। কিন্তু অতীতে আমরা দেখিয়েছি ওকে আটকে দেওয়া সম্ভব। এ বারও আমরা পর্তুগালকে হারাতেই পারি।”
যা দাঁড়াচ্ছে, বুধবার একঝাঁক ‘ডিনামাইট’-এর ঝাঁঝ না সামলাতে পারলে এ বারের ইউরো থেকে ছুটি হয়ে যাবে রোনাল্ডো অ্যান্ড কোংয়ের। |